প্রথমবার মাঠা খাওয়া অনুভূতি (The feeling of eating mata for the first time)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
খাদ্য রসিক বাঙালিরা সব সময়ই নতুন নতুন খাদ্যের সন্ধান পেলেই ছুটে চলে খাদ্যের স্বাদ নিতে। শুধু যে ছুটে চলে এমনটা নয়, নিজেরাই বাসায় বানিয়ে ফেলে নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার৷ কত সব বাহারি খাবার, তাদের আবার কতশত বাহারি নাম। প্রতিটা খাবারের স্বাদ আবার আলাদা আলাদা৷ এরকমই একটা খাবারের পোষ্ট নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে। নিজের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যার কারণে পোষ্ট করা হয়ে ওঠে না। চেষ্টটা করে মাঝে মাঝে কয়েকটা পোষ্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করি। আশা করি নিয়মিত পোষ্ট করতে পারব। আজকে ফোনের গ্যালারি ঘুরতে ঘুরতে চোখে পরল কয়েকটা ছবি। যেটা কিনা গত ঈদে তোলা। মানে ঈদুল ফিতরের পরে তোলা ঘুরতে গিয়ে। আমাদের বাড়ীর পাশেই গড়াই নদীর উপর নির্মিত ব্রীজে বাড়ী থাকলে নিয়মিতই ঘুরতে যাওয়া হয়। ঈদ বা কোনো অনুষ্ঠান হলে তো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার এক মাত্র জায়গা হলো সেই ব্রীজ।
ঈদুল ফিতরের পরে একদিন আমার বন্ধু ইমন সন্ধার পর কল দিয়ে বললো ব্রীজে যেতে একটু সময় কাটায় দুইজন। আমি মাগরিবের পর রেডি হয়ে চলে গেলাম ব্রীজে। এরপর বন্ধু ইমনও চলে আসল। তারপর দুইজন মিলে ব্রীজের উপর দিয়ে হাটা শুরু করলাম। নিজেদের মধ্যে নানা ধরনের কথোপকথন চলতেছিল। মূলত আমার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা নিয়েই কথা হচ্ছিল। আমি নিজেকে কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেছি না, হতাশায় ভুগতেছি,,এই সব থেকে বের হওয়ার বিষয়েই কথা হচ্ছিল। সামনে হাঁটতেই একটা গাড়ী চোখে পড়ল। যেটা দেখতে অনেকটা ভ্যান গাড়ীর মতো, তিনটা চাকা আছে, এবং উপরে একটা গোল আকৃতির ড্রামের মতো। যেটার উপর লেখা অনেক কিছু৷ পরে লেখাগুলো পরে জানতে পারলাম এখানে মাঠা বিক্রয় করা হচ্ছে। এর আগে কখনও আমি মাঠা খায় নাই। ঢাকাতে অনেক জায়গায় বিক্রয় করতে দেখলেও খাওয়ার তেমন কোন ইচ্ছা জাগে নাই৷ এজন্য কখনও খাওয়া হয়ে ওঠে নাই৷
আমি চলে গেলাম গাড়ীর সামনে।আমার বন্ধু বললো চলো মাঠা খায়, আমি বললাম ঠিক আছে খাওয়া যাক, কোন দিন খায় নাই আজকে এর স্বাদ কেমন দেখা যাক। আমার বন্ধু এর আগেও কয়েকবার এগুলো খেয়েছে। এটা নাকি খেতে অনেকটা দই এর মতো। দেখতেও অনেকটা দই বা ঘোল এর মতো। আমরা আমাদের দুইজনের জন্য দুই কাপ অডার দিলাম। লোকটা ব্রীজের মাঝ খানে দাড়িয়ো মাঠা বিক্রয় করতেছিলেন। নদীর সুন্দর পরিবেশে প্রকৃতির ঠান্ডা বাতাসের মাঝে ব্রীজে দাড়িয়ে থকার মজাটায় আলাদা। আমাদের এর খেয়াল করে দেখি গাড়ীর উপর প্রতি গ্লাস মাঠার দাম লেখা ২০ টাকা ( ১.২ স্টিম প্রায়). অল্প কিছু সময় পর আমাদের সামনে চলে আসল সেই কাঙ্ক্ষিত মাঠা৷ যা কিনা আমি প্রথমবার খেতে চলেছি। আশা করি স্বাদটা ভালোই লাগবে।
প্রথম চুমুক দিতেই বেশ ভালো স্বাদ অনুভব হলো। ধীরে ধীরে চুমুকে চুমুকে মাঠা খাওয়া শেষ করলাম। প্রথমবার হিসেবে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছিল। অনেক ঘোল বা দই এর স্বাদের মতো লাগল৷ খাওয়া শেষে আমার বন্ধু আমার কাছে জিগাস করলো খেতে কেমন? উত্তরে জানালাম বেশ ভালো খারাপ না। এরপর একটু হেসে নিলাম। তারপর বিলটা পরিশোধ করে আমরা আমাদের আগের মতো কথা বলতে বলতে হাঁটা শুরু করলাম। তবে আমি শুনেছি মাঠারও নাকি ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ হয়। ঢাকার ভিতরে বিক্রয় করার মাঠার স্বাদগুলো এখনও নেওয়া হয় নাই। আশা করি সামনে কোন দিন চোখে পরলে খেয়ে দেখা যাবে কেমন স্বাদ। ব্রীজের প্রায় শেষ মাথায় আসার পর আবার আমরা দুইজন লেবুর শরবত খাওয়ার জন্য একটা দোকানে চলে গেলাম।
গরমের সময় শরীরকে ঠান্ডা রাখতে লেবুর শরবতের তুলনা হয় না। আমাদের ব্রীজে নানা জায়গায় লোকজন এভাবে লেবুর শরবত তৈরি করে বিক্রয় করে থাকেন। প্রতি গ্লাস শরবত মাত্র ১০ টাকা ( ০.৮ স্টিম প্রায়) করে বিক্রয় করে থাকেন। আমরা আমাদের জন্য দুইটা শরবত তৈরি করতে বললাম। কিছু সময়ের মধ্যে ঠান্ডা শরবত আমাদের মাঝে হাজির হয়ে গেল। আমরা দুজনেই শরবতটা খেয়ে আবার কথা বলতে বলতে হাঠা শুরু করলাম। সেদিনের সন্ধার পরের সময়টা এভাবেই ব্রীজে মাঠা আর শরবত খাওয়া মাধ্যমে সুন্দর ভাবে কাটিয়েছিলাম। দেরিতে হলেও আপনাদের সাথে বিষয়টা শেয়ার করতে পেরে বেশ ভালো লাগল। আশা করি আপনারা সবাই এই দুই ধরনের শরবতই খেয়ে থাকবেন। খেয়ে থাকলে আপনাদের কাছে কেমন লাগে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.