Incredible India monthly contest of May #1| How do we control the loneliness of our parents?
প্রিয় স্টিমিয়ান্স, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। এই তীব্র গরমে, তপ্ত রোদে যতটুকু ভালো থাকা যায় আর কি! Incredible India কমিউনিটিতে চমৎকার একটি বিষয়ের উপর আয়োজিত কনটেস্ট পিতা মাতার একাকীকত্ব বিষয়ে আমি কিছু লেখার চেষ্টা করেছি। সেগুলোই আপনাদের সামনে পরিবেশন করছি।

Do you hold the view that, over time, parents develop a longing for the presence of their children? Please elaborate. |
---|
হ্যাঁ, আমি এই বিষয়টা বিশ্বাস করে এবং মানি। আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং বাল্যকাল কেটেছে গ্রামে। এখনো গ্রামের সাথে আমার অন্যরকম একটি সম্পর্ক রয়েছে। যদিও দীর্ঘ সময় ধরে আমি শহরে থাকি তবুও সব সময় আমার গ্রাম আমাকে টানে। প্রসঙ্গে ফিরে আসি, আমাদের গ্রামের বহু পুরুষ প্রবাসী। তাদের পিতা-মাতাদের দেখে দেখেই আমরা বড় হয়েছি। প্রবাসী সন্তানের জন্য তাদের আকুলতা সব সময় খুব কাছ থেকে দেখেছি। সাধারণত আমাদের দেশে মেয়েরা স্বামীর বাড়িতে থাকে। অনেক বাবা মায়ের এমন অবস্থা হয়েছে, মেয়ে তার স্বামীর বাড়ি, ছেলে থাকে বিদেশে। তাদের সন্তানদের জন্য অপেক্ষা, সন্তানদেরকে নিয়ে আকুলতা; এসব আসলে নিজের চোখে না দেখলে বুঝা দায়।
গ্রামের বয়স্কদের অবশ্য একটি সুবিধা রয়েছে। বেশিরভাগ বাবা-মাই তাদের সন্তানদের সাথে থাকে। সন্তানকে কাছে না পেলেও নাতি-নাতনিদের কাছে পায়। নিজের দীর্ঘজীবনের সঙ্গীরা তার আশেপাশেই থাকে। তাদের সাথে গল্প করে, একসাথে বসে বসে পান খায়, এটা সেটা নিয়ে আলাপ করে। এতে করে তাদের নিঃসঙ্গতা ঠিক সেভাবে টের পাওয়া যায় না। তবে সন্তানদের জন্য ব্যাকুলতা টের পাওয়া যায়।
শহরে অবশ্য পরিস্থিতি ভিন্ন। শহরে বেশিরভাগ বাবা-মাই নিজেদেরকে প্রচন্ড রকমের নিঃসঙ্গ অনুভব করে। আমি একটি ফার্মেসিতে কাজ করি। বয়স্ক মানুষের ওষুধে দেখলেই বুঝতে পারি যে তারা কতটা নিঃসঙ্গতায় ভোগে। বেশিরভাগ বয়স্কদের মেডিসিনের মধ্যে মানসিক রোগের ঔষধ খুবই কমন হয়ে গিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় তারা কতটা নিঃসঙ্গত অনুভব করে।

How do we control the loneliness of our parents? |
---|
একাকীত্ব দূর করতে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি। মূলত সন্তানরা চাইলেই তাদের একাকীকত্ব দূর করা যায়। সবকিছু তো আর বলা সম্ভব না। তবে কয়েকটি বিষয় আমি তুলে ধরছি।
সন্তান যদি পিতা-মাতার কাছ থেকে দূরে কোথাও থাকে বা আলাদা থাকে, সেই ক্ষেত্রে তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে। প্রতিদিন তারা কি করেছে, কি খেয়েছে, তাদের ঔষধ ঠিকমতো খেয়েছে কিনা, ঔষধ শেষ হয়ে গিয়েছে কিনা, এ সকল টুকটাক বিষয় সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে খোঁজ নিতে পারে।
বৃদ্ধ বয়সে সকলেই সঙ্গ খোঁজে। তাই তাদের বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে রাখা উচিত। যদি সম্ভব হয়, তাহলে তাদেরকে তাদের বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের কাছে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া এবং বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদেরকে বেড়াতে আসার ব্যবস্থা করা।
তাদের শখের গুরুত্ব দেওয়া। যেমনটা তারা আমাদের জন্য করতো আমাদের ছোটবেলায়। তাদের চাহিদা, তাদের আকাঙ্ক্ষা, তাদের শখ; এসব ছোট ছোট বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া এবং পূরণ করার বিষয় যত্নশীল হওয়া।
ছোট কিংবা বড়, যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মতামত গ্রহণ করা যেতে পারে। তাদের মতামতকে গুরুত্বারোপ করা যেতে পারে। যদি সম্ভব হয় তাদের মতামত গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে করে তারা নিজেদেরকে উপেক্ষিত মনে করবে না।
সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিয়মিত যাতায়াত করার সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে। সাধারণত, বয়স হয়ে গেলে মানুষ ধর্ম-কর্মে একটু বেশি ঝুঁকে। ধর্মীয় ইবাদাতখানা কিংবা উপাসনালয়ে গেলে তারা সমবয়সীদের সাথে মেশার সুযোগ পায়। এতে করে তাদের নিঃসঙ্গতা অনেক কমে যায়।

What are the main reasons behind the loneliness of parents? |
---|
পিতা-মাতারা নিজেদেরকে নিঃসঙ্গ মনে করার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। আমি অল্প কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি।
একাকীত্ব হচ্ছে নিজেদেরকে একা মনে করার সবচেয়ে বড় কারণ। বার্ধক্য চলে আসলে সাধারণত তারা একা হয়ে যায়। তারা যেহেতু বেশিক্ষণ বাহিরে থাকতে পারে না, আগের মত ঘোরাঘুরি করতে পারে না। এতদিন ধরে তারা যে ধরনের কাজ করতো, সেরকম কাজকর্ম থাকে না। যার কারণে নিজের সহকর্মী কিংবা প্রতিবেশীদের সাথে যোগাযোগ কমে যায়। তারা সারাক্ষণ নিজেদের ঘরের মধ্যেই থাকে বা থাকতে বাধ্য হয়। এজন্য তারা একাকী বোধ। এ কারণেই তারা মূলত নিঃসঙ্গতা অনুভব করে।
বাড়িতে কোন অনুষ্ঠান কিংবা কোন বড় বা ছোট সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে যখন তাদের মতামত নেওয়া না হয়, তখন তারা নিজেদেরকে উপেক্ষিত মনে করে। এতে করে তারা হীনমন্যতায় ভোগে এবং নিঃসঙ্গতায় ভোগে।
বয়স হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক সক্ষমতা কমে যায়। তারা স্বভাবতই অন্য কারো উপর নির্ভরশীল হয়। এসব কারণে তারা হীনমন্যতায় ভোগে।
শেষ বয়সে যদি তারা তাদের জীবনসঙ্গী, নিকট-আত্মীয় বা বন্ধুকে হারায় তাহলে শোকাহতর হয়ে যায়। বিয়োগের এই যন্ত্রনা তাদেরকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে কাবু করে ফেলে। তারা এক ধরনের মানসিক অস্থিরতায় ভোগে, নিজেকে নিয়ে ভয় হয়। যার কারণে তারা একাকী বোধ করে।
সন্তানরা বড় হয়ে গেলে যখন আলাদা আলাদা স্থানে চলে যায়, তখন তাদের দীর্ঘদিনের ভরপুর সংসার জীবনের অভ্যস্ততায় ভাটা পড়ে। এই হঠাৎ শূন্যতা তারা মেনে নিতে পারেনা। তখন তারা এক ধরনের মানসিক চাপে পড়ে যায়। এতে করে স্বভাবতই তারা নিজেদেরকে নিঃসঙ্গ এবং একা মনে করে।

উপসংহার
ব্যক্তিগত জীবনে আমি নিজেও আমার বাবা-মায়ের সাথে থাকে। যদিও আমার বাবা-মা এখনো পুরোপুরি বয়স্ক হয়নি। তারা তাদের মধ্য বয়স পার করছে। আমার বাবা এখনো পরিবারের হাল ধরে আছেন। আমরা এমন পরিবেশে বড় হয়েছি, বাবা মাকে ছাড়া নিজেদের আলাদা জীবন এটা কল্পনা করতেও কষ্ট হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, এই সুবিধাটুকু সকল বাবা-মা কিংবা সকল সন্তানরা পায়না। নিজেদের প্রয়োজনেই বহু সন্তান বাবা-মা থেকে আলাদা থাকতে হয়। যেমন আমার বাবা নিজেও দীর্ঘ তিন দশক প্রবাসী ছিলেন। আমাদের গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই প্রবাসী রয়েছে। আমার এমন পরিচিত মানুষ যেন আছে যাদের তিনটি ছেলে, তিনজনই প্রবাসী। উনাদের সন্তানদের জন্য ব্যাকুলতা আমি দেখে দেখেই বড় হয়েছি।

আমি কন্টেস্টে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাই @impersonal, @zulbahri এবং @afrinn-কে।
Twitter Promotion Link: https://x.com/akib_66/status/1921641339403252027?t=fDJTRQi_RmDYfGn2bz9dYA&s=19