Better Life With Steem || The Diary game || 25/06/2025
আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই ভাল আছেন। গত দুইদিন আমার জীবনে ছিল এক কঠিন পরীক্ষা। মানসিক এবং শারীরিক দুদিক থেকেই প্রচন্ড চাপে ছিলাম। সময়ের বরই অভাব ছিল। একদিকে পরীক্ষার প্রস্তুতি অন্যদিকে সংসারের কাজ আবার বাচ্চার ঝামেলা সবকিছু সামলাতে গিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় পাইনি। কিন্তু আজকের দিনটা যেন সমস্ত ক্লান্তির প্রতিদান দিয়ে গেল। সকালের আলোতেই মনটা ভালো লাগা শুরু করলো।
২ টা পরীক্ষায় একসাথে শেষ করে যখন বাসায় ফিরলাম তখন মনে হচ্ছিল যেন এক বিশাল বোঝা কাধ থেকে নেমে গেছে।মাথাটা হালকা লাগছিল আর মনটা শান্ত। পরীক্ষা নিয়ে যে টেনশন ছিল সেটা আজকের সাথে শেষ। বিকেলের দিকে বাড়ির আঙ্গিনায় হঠাৎ করেই ছোটখাট একটা উৎসবে পরিবেশ তৈরি হলো। আমার শ্বশুর গাছ থেকে পাকা আম পারলেন। সেই গন্ধটা সেই টাটকা মিষ্টি আমের ঘেরান আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল বহু বছর আগে শৈশবে। আমি তখন গ্রামের মেয়ে বড়দের সাথে আম কুড়াতে যেতাম। কখনো গাছে চড়ে পাড়ার ছেলেদের সাথে প্রতিযোগিতাও করেছি। আমার মেয়ে সেসব দিনগুলো যেন আজ চোখের সামনে ফিরিয়ে দিল।
শুধু পাকা আম না অনেকগুলো কাঁচা আমও পারা হলো। সেগুলো আমরা ঝাল লবণ মেখে খেতে বসে গেলাম।এমন একসাথে খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আমার মেয়েটা এবং ননদের মেয়ে পাকা আম হাতে নিয়ে খুশিতে মেতে উঠছিল। ওদের দেখে আমার নিজের ছোটবেলার কথা ভীষণ মনে পড়ছিল। আমি আর আমার ছোটবেলার বান্ধবীরা মিলে একসাথে আম কুড়াতাম। বেশি সেটা নিয়েও রীতিমতো ঝগড়া হতো। গাছে চড়া সাহস যাদের বেশি ছিল তারা নিজেকে অনেক বড় বীর মনে করত। একবার তো আমি গাছে উঠতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম সেই স্মৃতি আজও হাসায় আমাকে।
শুধু বান্ধবীদের সাথেই গাছে চড়তাম না আমার একটা চাচাতো ভাই ছিল সে মারা গেছে তার সাথেও অনেকবার গাছে উঠেছি এবং গাছেই আমরা আম খাওয়া শুরু করে দিয়েছি। সেই স্মৃতিগুলো আজ ভীষণ করে মনে পড়ছিল। এই ভাই আর আমাদের মাঝে নেই। আমার ভাইটার কথা মনে পড়তেই চোখে পানি চলে আসলো।ননদের মেয়ে আর আমার মেয়ে দুজনেই মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিল খেলনা নিয়ে টানাটানি করছিল। মাঝে মাঝে ঝগড়া করছিল আবার পরক্ষণে একসাথে খেলছিল। এ দৃশ্য যেন হুবহু আমার আর আমার কাজিনদের শৈশবের মত। এই মুহূর্তগুলো সত্যিই অমূল্য। জীবনের ব্যস্ততা দায়িত্ব পরীক্ষার চাপের মাঝেও এমন কিছু দিন থাকে যা সবকিছু ক্লান্তি দূর করে দেয়।
আজকের দিনটা যেন তেমনই একটা স্বর্ণালী দিন। মনে হচ্ছিল জীবনটা কতটা সুন্দর যদি আমরা ছোট ছোট খুশি গুলো ধরে রাখতে পারি। আসলে আমপারা খেলা ঝগড়া করা সবই খুব সাধারণ ঘটনা। কিন্তু এই সাধারণ জিনিস গুলোর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে আমাদের জীবনের বিশেষ মুহূর্তগুলো। প্রতিদিন এমন হয় না কিন্তু মাঝে মাঝে এমন এক একটা দিন আসে যা আমাদের হৃদয় জুড়ে স্মৃতির দেয়ালে আঁকা হয়ে যায় চিরদিনের মত। আজকের দিনটা আমি ভুলবো না এটা শুধু একটা চাপমুক্ত দিন না এটা ছিল আমার শৈশবকে ফিরে পাওয়া।
মেয়েকে নিজের মত করে বেড়ে উঠতে দেখা, এবং পরিবারের সাথে ভাগ করে নেওয়া একটা সুন্দর আনন্দময় বিকাল।আমি জানি জীবন সবসময় এতটা সহজ হবে না কিন্তু এমন মুহূর্তগুলো আমাদের শক্তি যোগায় হাসি এনে দেয় এবং আমাদের ভেতরটা উজ্জ্বল করে তোলে। শেষে শুধু এটুকুই বলতে চাই জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও এমন কিছু মুহূর্ত আমাদের দরকার যা আমাদের মানুষের মতো বাঁচতে শেখায়, স্মৃতির ঝুলিতে নতুন কিছু যোগ করে। এমন দিনগুলো যেন আরো ফিরে ফিরে আসে এই কামনাই করি।
সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যে মেয়েদের পড়াশুনা করা অবস্থায় বিয়ে হয়ে যায় ,আমি মনে করি তারা হলো কঠিন যোদ্ধা ।কারণ সংসারের প্রতিটি লোককে সামলিয়ে, সন্তান সামলিয়ে তারপরে নিজের জন্য সময় বের করে পড়াশোনা করা সত্যি অনেক কঠিন। কারণ এই কঠিন দিনগুলো আমাকেও পার করতে হয়েছিল ।আশা করি আপনার প্রতিটি পরীক্ষা ভালো হবে।
আপনি যেহেতু মনোবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আপনার কাছ থেকে ছোট একটি পরামর্শ চাই।
"খুব কাছের একজন মানুষ, সে এমনিতে অনেক ভালো, তার ব্যবহার ভালো ,কিন্তু হঠাৎ তিনি এমনি এমনি অনেক রেগে যায় ,তার রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কি করা যায় ?""
যদি সময় থাকে তাহলে সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন ।