"ইকোপার্ক ভ্রমণের প্রথম পর্ব"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আমরা জীবনে যখন বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাই, তখন বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। বিভিন্ন জনের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়। আর স্মৃতির পাতায় জমা হয় অসংখ্য ছবি। এমন অনেকেই আছে যাদের সাথে আর হয়তো জীবনে কখনো দেখা হবে না। আবার এমন অনেকেই আছে যাদের সাথে বহুদিন বাদে দেখা হয়। আবার কিছু বন্ধু আমাদের জীবনে এমন থাকে, যারা আমাদের ভালো-মন্দ সবকিছু সাথে অনেকটা গভীরভাবে জড়িয়ে থাকে।
![]() |
---|
খুব সত্যি কথা বলতে আমার জীবনে এইরকম একটাই বান্ধবী, তার নাম রাখি। আমার বহু পোস্টে আমি ওর কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আর ইদানিং আমাদের একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে যেখানে রাখির বান্ধবীদের সাথে আমারও বেশ ভালো বন্ডিং তৈরি হয়েছে। পিয়ালী আমাদের গ্রামেরই মেয়ে, আমার থেকে বয়সে বেশ কিছুটা ছোটো হলেও, রাখি এবং আমার সাথে মিশতে মিশতে এখন সে আমাদের বন্ধু হয়ে উঠেছে।
![]() |
---|
রাখির সাথে আমার একেবারে ছোটবেলা থেকে বন্ধুত্ব। পড়াশোনা আমরা বিভিন্ন জায়গাতে করেছি, তবে বন্ধুত্বে কখনো ঘাটতে পারেনি। পড়াশোনার সূত্রে বহু বান্ধবীদের সাথে মিশেছি, কিন্তু সবার গল্প যার সাথে শেয়ার করতাম সে কিন্তু রাখি। যাইহোক আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি বান্ধবীদের সাথে ইকো পার্কে ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্তের গল্প।
![]() |
---|
বেশ কয়েক মাস আগেই আমরা ইকো পার্কে গিয়েছিলাম। আজ ফোনের গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে সেই ছবিগুলো খুঁজে পেলাম। আসলে দার্জিলিংয়ে গিয়ে এতো ছবি তুলেছি যে, পুরনো ছবিগুলো বহু নিচে চলে গেছে। হঠাৎ করে এই ছবিগুলো চোখে পড়লো, তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে সেই দিনের আনন্দের মুহূর্ত গুলো শেয়ার করি। এরপরেও আমরা একবার ওয়াটার পার্কে গিয়েছিলাম, সে গল্প না হয় অন্য কোনো পোস্টে হবে।
![]() |
---|
ইকোপার্ক আমাদের কলকাতার এক বিশেষ দর্শনীয় স্থান। নিউটাউনে বিশাল এলাকা জুড়ে তৈরি হওয়া এই পার্কটই ছোট বড় সকলের বেশ পছন্দের একটি জায়গা। এই সকল জায়গায় যদিও শীতকালে ঘুরতে বেশি ভালো লাগে, রং বেরঙের বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের দেখা পাওয়া যায়। তবে সারাবছর এখানে পর্যটকদের ভির থাকে। আমাদের বান্ধবীদেরও তেমনভাবে হঠাৎ করে প্ল্যান হয়ে যাওয়ায়, একদিন চলে গিয়েছিলাম।
![]() |
---|
বিশাল এলাকা জুড়ে তৈরি হওয়া ইকো পার্কে যে আমি এইবার প্রথম গিয়েছে এরকমটা নয়। এর আগেও বহুবার আমরা আলাদা আলাদা গিয়েছি ইকোপার্কে। তবে বান্ধবীরা এক সাথে যে কোনো জায়গাতে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা। প্রথমে ট্রেন, তারপর বাসে করে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম ইকো পার্কের ৪ নম্বর গেটে। সেখানে নামার পর টিকিট কেটে বেশ খানিকটা হেঁটে আমরা পার্কে প্রবেশ করি।
![]() |
---|
প্রচন্ড রোদ্দুর ছিল সেদিন। আমরা প্ল্যান করেছিলাম আগের দেখা জিনিস গুলো দেখবো না। নতুন জিনিস গুলোকে ঘুরে ঘুরে দেখবো। সেভেন ওয়ান্ডার আমরা এর আগে দেখেছি, তবুও যাওয়ার সময় দূর থেকে তার একটা ছবি তুললাম। তারপর আরো একটু এগিয়ে গেলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর সকলে মিলে একটা জায়গাতে বসলাম। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে, জল খেয়ে, কিছু ফুলের ছবি তুলে আবার হাঁটতে শুরু করলাম।
![]() |
---|
এখানে গেলে হাঁটার অভ্যাস থাকতেই হবে। তাহলে ঘুরে ঘুরে সমস্ত কিছু দেখা সম্ভব। কারণ অনেকটা জায়গা জুড়ে অবস্থিত হওয়ায় প্রত্যেকটা জিনিস বেশ কিছুটা দূরে দূরে রয়েছে। যে জায়গা গুলো হেঁটে হেঁটে ঘুরে দেখতে হবে। আমার অবশ্য সব থেকে ওখানকার ঝিলটা পছন্দ। বিকালের দিকে তো ঝিলের পাড়ে বসে থাকতে খুবই ভালো লাগে।
![]() |
---|
যাইহোক এরপরে আমরা সামনের দিকে এগোতে থাকলাম। তখনই অনেক বাচ্চার ভিড় চোখে পড়লো। বুঝতে পারলাম বাচ্চাগুলোকে স্কুল থেকে ওদের টিচাররা ইকোপার্ক ভ্রমণ করানোর জন্য নিয়ে এসেছেন। এটা একটা ভালো ব্যবস্থা। আমাদের সময় যদিও বা এমন ব্যবস্থা ছিল না। বাস থেকে নামার পর গেট দিয়ে সকলেই লাইন দিয়ে ঢুকছিলো। তারপর টিচারের নির্দেশ অনুযায়ী সকলে ঘুরে দেখছিল।
![]() |
---|
![]() |
---|
আরও একটু এগিয়ে যাওয়ার পর আমরা এমন একটা জায়গায় প্রবেশ করলাম যেটা গোলকধাঁদের মতন ছিলো, অর্থাৎ আপনি যদি ভিতরে প্রবেশ করার পর এদিক ওদিক ঘোরেন তাহলে রাস্তা হারাবেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যদিও বেরোনোর রাস্তাটা একই। তাই এদিক-ওদিক ঘুরে আপনাকে সেই একই রাস্তা দিয়ে বের হতে হবে। সেখানে আমরা বেশ কিছুটা সময় কাটাই। কিছু ছবি তুলি।
![]() |
---|
এরপর আমাদের একটু খিদে পায়। তাই ছায়া দেখে এমন একটা জায়গাতে বসি যাতে সেখানে বসে আমরা খাওয়াটা কমপ্লিট করতে পারি। পিয়ালী বাড়ি ঘুগনি ও লুচি নিয়ে এসেছিলো, আমিও আলুর তরকারি এবং লুচি করে নিয়ে গিয়েছিলাম। প্লেট, চামচ, খবরের কাগজ আনার দায়িত্ব ছিল রাখির উপরে। সমস্ত কিছু ব্যাগ থেকে বের করে খবরের কাগজ বিছিয়ে, আমরা চারজন বসে টিফিন করে নিলাম এবং তারপর আমরা কোথায় কোথায় ঘুরবো সেই বিষয়েও প্লানিং করে নিয়েছিলাম।
![]() |
---|
আমরা ঝিলের পাশে বসেই খাওয়া দাওয়া করছিলাম। সেখান থেকে দূরে ওয়াক্স মিউজিয়াম দেখা যাচ্ছিলো। নিউটাউনের এটাও একটা বিখ্যাত জায়গা। এটি একেবারেই ইকোপার্কের পাশে অবস্থিত। ব্যক্তিগতভাবে আমার এটা দেখার খুব শখ, তবে এখনও পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি। আশাকরছি ভবিষ্যতে অবশ্যই দেখতে পাবো।
![]() |
---|
উপরের ছবিতে আপনারা যেটা দেখতে পাচ্ছেন, এটা সোলোর ডোম মিউজিয়াম। যেটা সম্পর্কে আপনারা ইউটিউবে জানতে পারবেন। এখানে প্রবেশ মূল্য বেশি ছিলো, আর আমাদের খুব একটা ইচ্ছাও করেনি, তাই আর কেউ ভিতরে যাইনি।
![]() |
---|
![]() |
---|
তবে ভিতরে প্রবেশ না করলেও, ডোমের সামনে পর্যন্ত গিয়েছিলাম। বিশাল আকার ডোমটি সোলার সিস্টেম দিয়ে তৈরি, তাই সামনে থেকে দেখতে কিন্তু অসম্ভব সুন্দর।
যাইহোক পরবর্তী পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আরো কিছু মুহূর্ত এবং ছবি শেয়ার করবো। আপাতত আজকে পোস্ট এখানেই শেষ করছি। ইতিমধ্যে পোস্টটি অনেক বড় হয়ে গেছে, তবে যারা আমার পোস্টটি ধৈর্য্য ধরে পড়েছেন, তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। সকলে ভালো থাকবেন। আপনাদের আজকের দিনটা ভালো কাটুক।
ক্রপ করে ব্যবহার করার কারণে ছবিগুলোর তারিখ পরিবর্তিত দেখাচ্ছে।
Congratulations!! Your post has been upvoted through steemcurator04. We encourage you to publish creative and high-quality content, giving you a chance to receive valuable upvotes.
Thank you for your support @abdul-rakib🙏.