"বর্তমান সময়ে বসে, বিশ্বকর্মা পূজোকে ঘিরে শৈশবের স্মৃতিচারণের অনুভূতি"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
এ কথা হয়তো আপনারা সকলেই জানেন, সারা বছর জুড়েই বাঙ্গালীদের কিছু না কিছু অনুষ্ঠান চলতেই থাকে। তবে আর কয়েকদিন বাদেই বাঙ্গালীদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব, যার জন্য দেশ-বিদেশ সর্বত্রই বাঙালি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে।
আগে মনে হতো বিদেশে বোধহয় বাঙালিরা তেমন ভাবে দুর্গাপুজোর আনন্দ উপভোগ করতে পারে না। তবে ইউটিউব এর দৌলতে এখন অনেক প্রবাসী বাঙালির ভিডিও দেখার সুযোগ হয়। সারা বছর তাদের জীবন-যাপন যেমন দেখা যায়, তেমনি দেখা যায় এই দুর্গা উৎসবে বিদেশে সকল বাঙালি একত্রিত হয়ে কিভাবে আনন্দ করেন।
বহুদিন আগে থেকেই শরতের আকাশ জানান দিয়েছে মা আসছেন। প্রকৃতিও সেজে উঠেছে নিজের মতো করে। হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে কাশ ফুলের দোলা, মায়ের আগমনী বার্তা পৌঁছে দিতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
![]()
|
---|
আর আজ বিশ্বকর্মা পুজো। সাধারণত এই দিন থেকেই সকলে আরও বেশি করে অনুভব করে পূজো আসতে আর বেশি দেরি নেই। দু-তিন দিন বাদেই মহালয়া, আর কোথাও যেন মহালয়ার দিন থেকেই পুজোর আমেজ শুরু হয়ে যায়।
আমাদের বাড়িতে তেমনভাবে বিশ্বকর্মা পুজো করা হয় না। তবে প্রতিবছর শুভ অফিসে যাওয়ার আগে সকালবেলায় ঘরের নিত্য পূজো শেষ করে, ওর বাইক ভালো করে মুছে, আমি নিজের মতো করে পুজে দিই। বিয়ের পর থেকে এটা আমার অভ্যাস। কোথাও একটা মানসিক শান্তি ও বলতে পারেন।
যেকোনো কলকারখানায় এই বিশ্বকর্মা পুজোটা অনেক বড় করে আয়োজন করা হয়। শুভদের অফিসেও এমনটা হয়, আমি গত পোস্টেই আপনাদেরকে জানিয়েছি, তিন দিন ধরে ওদের এই আনন্দ অনুষ্ঠান চলতে থাকে।
![]()
|
---|
![]()
|
---|
একদিকে আজ বিশ্বকর্মা পূজো, অন্যদিকে আজ আমার একাদশীর উপবাস। গতকাল বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছিলো। তবে আজ সকালে ঘুম ভাঙতেই বাইরের প্রকৃতি বেশ রৌদ্রজ্জ্বল দেখে ভেবেছিলাম হয়তো আজ অন্তত বৃষ্টি হবে না।
বিশ্বকর্মা পূজোর একটা বড় অঙ্গ হলো ঘুড়ি ওড়ানো। তবে আজকালকার যুগে বাচ্চাদের মধ্যে ঘুড়ি ওড়ানোর আগ্রহ খুবই কম লক্ষ্যিত হয়। অথচ আমরা আমাদের ছোটবেলায় এই বিশ্বকর্মা পূজোর কয়েকদিন আগে থেকেই, আকাশের দিকে তাকালেই অনেক ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখতে পেতাম। যা দেখে বুঝতে পারতাম সামনেই বিশ্বকর্মা পুজো আসতে চলেছে।
![]()
|
---|
আমি নিজে কখনো ঘুড়ি ওড়াতে পারতাম না ঠিকই, তবে যারা ঘুরে ওড়াতো তাদের সাথে লাটাই ধরে থাকতাম। তারও যেন একটা অন্যরকম মজা ছিলো। গতকাল রাতেও এই নিয়ে শুভর সাথে কথা হচ্ছিলো। ও নিজেও ওর অভিজ্ঞতা শেয়ার করলো।
ছোটো বেলায় ঘুড়ি কেনার জন্য অল্প কিছু টাকা বরাদ্দ ছিলো। তখন ইচ্ছা থাকলেও অনেক ঘুড়ি কেনার উপায় ছিলো না। অথচ আজ চাইলেই অনেক ঘুড়ি কিনতে পারে, কিন্তু ঘুড়ি ওড়ানোর সেই ইচ্ছাটা আজ আর নেই। এইখানেই হয়তো আমাদের ছোটোবেলার সাথে বর্তমান সময়ের পার্থক্য।
তবে যুগের পরিবর্তনে মানুষের আগ্রহও পরিবর্তন হয়েছে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। কারণ আজকাল বাচ্চাদের মধ্যে ঘুড়ি ওড়ানোর আগ্রহ চোখেই পড়ে না। তার থেকে অনেক বেশি আগ্রহী তারা মোবাইলে বা কম্পিউটারের গেম খেলাতে, বন্ধুদের সাথে ফোনে চ্যাট করতে, কিংবা এরকম কোনো বিশেষ দিনে কোনো ক্যাফে বা রেস্টুরেন্টে প্রিয় কোনো মানুষের সাথে সময় কাটাতে।
![]()
|
---|
যাইহোক আমি সকাল সকাল উঠে নিয়মমাফিক কাজগুলো সেরে, স্নান করে, শুভ বাইকটাও পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। আমার শাশুড়ি মায়ের একটা সেলাই মেশিন রয়েছে, সেটাকে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে নিলাম। প্রতিবছর এই দিনে সেখানেও সিঁদুর, চন্দন, ফুল দিয়ে ধূপ ধুনো দেখিয়ে পুজো দিয়ে থাকি।
|
---|
এ বছরে তারা অন্যথা হয়নি। পাশাপাশি শুভর বাইকেও পুজো দিয়ে নিয়েছিলাম। অন্যান্য বছর অফিসে গিয়ে যদি ওদের অফিসের পুজোর ওখানে ব্রাহ্মণ থাকেন, তাকে দিয়ে পূজা করিয়ে নেয়। তবে এবার অনেকটা দেরিতে গিয়েছে, জানিনা হয়তো অফিসে পৌঁছে দেখবে পুজে শেষ হয়ে গেছে।
তবে আমি আমার মতন করে পুজো দিয়ে নিয়েছি এটাই আমার জন্য মানসিক শান্তি। কারণ এই বাইকে করে প্রতিদিন ও অফিসে যাতায়াত করে, তাই ওর সুস্থতা ও সাবধানতার প্রার্থনা করলাম।
![]()
|
---|
আমার যেহেতু আজ একাদশী, তাই আমি পূজো শেষ করে, গীতা পাঠ করার পর ফল আর ড্রাইফ্রুটস খেয়েছিলাম। সকালের রুটি দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে শুভ অফিসে চলে গিয়েছিলো। দুপুরে রান্নার দায়িত্ব ছিল শাশুড়ি মায়ের। সকাল থেকে বেশ ভালো রোদ্দুর থাকলেও কিছুক্ষণ বাদে আকাশে কালো মেঘ করে এলো।
কিছু জামা কাপড় ছাদে মেলা ছিলো, যেগুলো গতকাল ধুয়েছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারণে শুকায়নি। আমি সেগুলো আবার তুলে রাখলাম। শুভ অফিসে বেড়ানোর মুহূর্তে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে শুরু করলেও, কিছুক্ষণ বাদে থেমে গিয়েছিলো।
![]()
|
---|
স্নান, পুজো সমস্তটাই হয়ে গিয়েছিলো, তাই ভাবলাম এই সময় আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য পোস্ট লেখা সেরে ফেলি। সেই কারণেই লিখতে বসলাম। আপনাদের প্রত্যেকের বিশ্বকর্মা পুজোর দিনটা কেমন কাটলো এবং ছেলেবেলাকার কোন কোন স্মৃতি এই দিন আপনাদেরকে নাড়া দেয়, তা অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।
সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, এই প্রার্থনা করে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ।
A beautiful white flower, made even more visible against the clear blue sky. I love the photo, it's so beautiful🥰🥰