গণহারে সবাই অসুস্থ।
বেশ কিছুদিন থেকেই স্টিমিটের জন্য নিয়মিত পোস্ট লেখা হচ্ছে না। আসলে লেখার মতো অবস্থায়ই বলতে গেলে নাই। গত শনিবার রাতে ভাগ্নির বিয়ে খেয়ে ঠিকঠাক মতোই বাসায় পৌঁছেছিলাম। কিন্তু এর পরের দিন থেকেই শুরু হয় ঝামেলা।
পরের দিন সকালে আমার বেড়াল ছানাটাকে খাইয়ে দিয়ে দুপুরের রান্না করতে ঢুকেছি আর সেই সময় একটা অস্বাভাবিক শব্দ পেয়ে বের হয়ে দেখি সে বমি করতেছে সারা ঘরে ঘুরে ঘুরে। সেগুলো ক্লিন করে আবার রান্নাঘরে ঢুকেছি আর তখনই ফোনের রিংটোন শুনতে পেলাম।
কল রিসিভ করতে গিয়ে দেখি ছোট ছেলের কল। সাধারণ অবস্থায় ওর বাসার ভেতরে ওর কল দেয়ার কথা না। তাই ওর কল দেখে প্রথমেই মাথায় আসলো যে অস্বাভাবিক কিছু তো একটা ঘটেছে।
দ্রূত ওদের রুমে গিয়ে দেখি ছেলে বমি করে মেঝে ভাসিয়ে রেখেছে। ও তখন জানালো যে ওর সকাল থেকেই পেটে ব্যাথা ছিল এবং সাথে প্রচন্ড রকমের গলা ব্যাথা।এটা প্রথমেই কোরোনার কথা মাথায় আসলো। সাথে অবশ্য ফুড পয়জনিং এর চিন্তাটাও এসেছিলো।
কারণ কোরোনার লক্ষণগুলিও প্রায় এমনি।
আগে যখন ছেলেরা ছোট ছিল তখন আমি ওদের কোনো কিছু প্রয়োজন মনে করলে সেটা সাথে সাথে করতাম। কিন্তু এখন তারা বড়ো হয়ে যাওয়ার কারণে বেশিরভাগ সময়েই সম্ভব হয় না। তাই ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা সে উড়িয়ে দিলো এই বলে যে ,আমার কোরোনার ভ্যাকসিন নেয়া আছে দুটো। বিকেলে জানতে পারলাম দুই ভাইয়ের বাসায়ও মোটামটি সবাই অসুস্থ।
দুপুরের দিকে বড়ো ছেলে ক্লাস শেষ করে বাসায় ঢুকেই বলা শুরু করলো যে তারও মাথা , পেটে ব্যাথা ও বমি বমি লাগছে। রাতে তার বাবা এসেও একই ধরণের কথা বললো।
বাসায় শুধু আমিই সুস্থ ছিলাম সেদিন। আল্লাহকে বললাম যে ,এই মুহূর্তে আমার যেন কিছু না হয়। পরের দিন ছোট ছেলে ছাড়া বাকিরা মোটামোটি সুস্থ হলো ঠিকই কিন্তু নানা ধরণের উপসর্গ বিশেষ করে প্রচন্ড রকমের গলা ব্যাথা ও বমি বমি ভাব। ছোট ছেলের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে।
দুপুরের দিকে ছোট মামী গ্ৰুপে মেসেজ দিয়ে জানালো যে তাদের বাড়ির সবাই বিয়ে খেয়ে আসার পর থেকেই অসুস্থ। তাদের লক্ষণগুলিও একই। একে একে জানতে পারলাম ঐদিন যারা যারা ভাগ্নির বিয়েতে গিয়েছিলো তারা প্রায় সবাই একই সমস্যাতে ভুগতেছে। পরের দিন থেকে আমার একই সমস্যা দেখা দিলো। অবশ্য ওদের মতো প্রকটাকারে না। কিন্তু মেরে দিলো মাথাব্যাথায়। দেখলাম প্রেশার হাই হয়ে আছে।
এরই মাঝে গতকাল শুনতে পেলাম যে ,হসপিটালে থাকা কাজিনের পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে ফেলতে হবে হয়তো। শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেছে অসম্ভব রকমের। আজকে আবার ভাই কল দিয়ে জানালো যে , পুরো পা -ও কেটে ফেলতে হতে পারে বলে ডক্টর জানিয়েছেন ।
তাই সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজিনের রিলিজ নিয়ে অন্য হসপিটালে নিয়ে গেছে সেকেন্ড ওপিনিয়ন এর জন্য। যারা এই লেখা পড়বেন তাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো ,আপনারা আমার কাজিনের জন্য প্রাথনা করবেন যাতে তার পা কেটে না ফেলতে হয়।