বাসায় আবারও নতুন অতিথি আনার সিদ্ধান্ত ।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া স্ক্রিনশট (ওকেই আনতে চাচ্ছি) |
---|
কয়েকদিন আগে আমার বেশ কাছের একজন মানুষ এর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া একটা পোস্ট চোখে পরলো ।তাকে ছোটখাটো একজন ফেসবুক সেলেব্রিটিও চলে । তার পোস্টে দেখলাম তিনি বিড়াল -কুকুর যারা পোষেন তাদেরকে কটাক্ষ করেছেম।তার পোস্টের নিচে দেখলাম অসংখ্য মানুষ এসে তার সাথে সুর মিলিয়ে কমেন্ট করে যাচ্ছেন।একজন দেখলাম ঢং বলে অভিহিত করেছেন যারা পালেন তাদের উদ্দেশ্যে ।
এটা দেখে মহা বিরক্ত হলেও কোন মতামতই প্রকাশ করি নাই।কারণ আমার কাছে মনে হয় কিছু মানুষের কথায় চুপ থাকাটাই ভালো ।কারণ যত কিছুই বলা হোক না কেন , এরা নিজেরা যা বিশ্বাস করে সেটা থেকে তাদের টলানো সম্ভব না ।তাই তাদের সাথে কথা বলে লাভ নেই বরং মাঝখান থেকে সম্পর্ক নষ্ট ।
অথচ এদের উল্টো চিন্তার মানুষও অসংখ্য চোখে পরেছে ।একজনকে জানি যিনি ভাঙ্গা টিনের ঘরে বাস করেন ৭০টার ওপরে কুকুর বিড়াল ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ।
এসব পশুর বেশিরভাগই রাস্তা থেকে উদ্ধার করে আনা পা ভাঙ্গা ,প্যারালাইজড কিংবা অন্ধ ।যাদের তিনি চিকিৎসা করে এডপশনে দিয়ে থাকেন ।কিন্তু মানুষ সুস্থ পশুগুলোকে নেয় আর অসুস্থগুলো তার কাছেই থেকে যায় ।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া স্ক্রিনশট |
---|
বৃষ্টি নামলে ঘরে পানি পরে ভেসে যায় কিন্তু বাড়ি ডেভলপারের হাতে দেন নাই কারন তখন বিল্ডিংয়ের মালিকানা অনেক এর কাছে চলে যাবে এবং তারা এত বিরাল কুকুর পছন্দ না-ও করতে পারে।
তিনি যে শুধু নিজের বাড়িতেই এসব পশুদের রাখেন এমন না ।প্রতিদিন তিনি রাস্তার কুকুর বিড়ালদেরকেও খাবার দেন ।
আবার কিছুদিন আগে কোন এক টিভি নিউজে দেখেছিলাম নিঃসন্তান এক দম্পতি ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ফেলেছেন ।এজন্য তারা তাদের জায়গা-জমিও বিক্রি করে দিয়েছেন ।আত্মীয় -স্বজনরা পাগল বলে তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন ।
এটা করার আরো একটা কারন বোধহয় তাদের এই সম্পত্তির মালিকানার এসব আত্মীয়রাও হতেন ।
আমার মেসেন্জার থেকে নেয়া স্ক্রিনশট |
---|
এমন আরও অনেককেই চিনি।আজকেও এমন একজন এর সাথে কথা হলো । যিনি একজন ছাত্রী । রাস্তার অসহায় বিড়ালদের উদ্ধার করে চিকিৎসা করে এডপশনে দিয়ে থাকেন ।তার হাসবেন্ড তাকে যে তাকে যে হাতখরচ দেয় সেটা দিয়ে মাসের শুরুতেই তিনি তার পোষ্যদের জন্য খাবার কিনে ফেলেন।
এরপর কিভাবে চলবেন সেটা জানেন না।মানুষের কাছে অনেক সময়ে সাহায্যও চান বাচচাগুলোর চিকিৎসার জন্য ।
আমার ক্যারামেলও এমনি এক বিড়াল ছিলো যাকে খোড়া ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় আমাদের বাড়ির কেয়ারটেকার রাস্তা থেকে তুলে একে আমাকে দিয়েছিলো।সিম্বাকেও উদ্ধার করে এনেছিলাম রাতের বেলা।
ক্যারামেলকে বাসায় আনার কিছুদিন পরের ছবি |
---|
আমার ক্যারামেল মারা যাওয়ার পরে আর কোন পোষ্য আনবো না এটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।বাসার সবাইও আমাকে অনেকটা কড়াভাবেই বলে দিয়েছিলো আমি যেন আর কোন বিড়ালকে বাসায় না আনি ।আমিও ওদের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছিলাম ।
কারণ আমিও আর কষ্ট পেতে চাচ্ছিলাম না। ক্যারামেলের জন্য রাখা মাছগুলো নিচের বিড়ালদেরকেই খাওয়াচ্ছিলাম।
কিন্তু এই বৃষ্টির মাঝে এত অসহায় কুকুর বিড়ালদের চিত্র চোখে পেতেছিল যে নিজেকে কন্ট্রোল করাটা কঠিন হয়ে পরতেছিলো।
এই অবস্থায় কদিন থেকেই আবারও বিড়াল আনার কথা চিন্তা করতেছিলাম ।জানি ওদেরকে বাসায় আনলে অনেক কিছু ছাড় দিতে হয় এবং টেনশন বেড়ে যায় অনেক বেশি ।কিন্তু তারপরও যখন ভাবি যে আমার সামান্য সাহায্য ওদের জীবনকে পাল্টে পারে।
মনের এই অবস্থায় আজকে একটা পোস্ট চোখে পরলো এবং সেই পোস্ট এর বিড়ালটা দেখতে ক্যারামেল এর মতোই । ওই মূহুর্তে কোন কিছু না ভেবেই সিদ্ধান্ত নিলাম ওকে আনবো ।সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল ওকে দিয়ে যাবে ।