Better Life with Steem|| The Diary Game||1 August 2025|
কয়েকদিন আগে থেকেই প্ল্যান ছিল আজকে আমি আমার শশুরবাড়ি নারায়ণগঞ্জে যাবো। বেশ অনেক দিন নারায়ণগঞ্জ যাওয়া হয় না। কিন্তু গত রাতে হঠাৎ করেই মেসেঞ্জার গ্ৰুপে আমার ছোট একটা মেসেজ চোখে পরে। সেখানে লেখা ছিল ,বাবুর বৌয়ের ৬ মাসের বাচ্চা পেটেই মারা গিয়েছে। ওরা এটা আগে কেউই বুঝতে পারে নাই। এখন তাকে আইসিইউ তে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এই বাবু সম্পর্কে আমার ভাগ্নে হয়।
এই মেসেজ দেখে আমি অনেকটা আকাশ থেকে পরি। শুধু আমি না হয়তো এই গ্ৰুপে আগে থেকে যাঁরা না জানতো তাদের সবার অবস্থাই অনেকটা আমারই মতো হবার কথা । সবচেয়ে অবিশাস্য লেগেছে এটা ভেবে যে একটা বাচ্চা পেটের মাঝে মারা গেছে অথচ তার মা বুঝতেই পারে নাই।
আজকে আমাদের সকাল ১০ টার দিকেই নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার কথা। কিন্তু ভাগ্নে বৌয়ের এই অবস্থার কথা জানতে পেরে সকাল বেলা আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে কথা বলে ঠিক করি যে ,সকাল বেলাতে নারায়ণগঞ্জ না গিয়ে আগে সাভারে যাবো ভাগ্নে বৌকে দেখতে ,এরপর সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জ যাবো।
এরই মাঝে বড়ো ভাবি কল দিয়ে জানায় যে সেও সাভারে যাবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে এক সাথেই বের হবো বাসা থেকে। আমরা ঢাকাতে চলে এসব আর ভাই -ভাবি ধামরাই চলে যাবে। কারণ গতকাল ভাবীর এক কাজিন মারা গিয়েছে।
ছুটির দিন হবার কারণে রাস্তা মোটামোটি ফাঁকাই ছিল। আমরা সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গিয়ে পৌঁছাই প্রায় ১ ১ টার কাছাকাছি সময়ে। সেখানে গিয়ে যে দৃশ্য দেখি তাতে আমরা আমাদের নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার প্ল্যান ক্যানসেল করে দেই। আসলে দূর থেকে শুনলে একরকম আর সামনাসামনি দেখলে অন্যরকম। ওদের ৪ বছরের ছেলে আছে। ওকে দেখে এতো কষ্ট লাগতেছিলো যে সেটা বলার মতো না।
আমরা গিয়ে যখন পৌঁছেছি তখন ওর মাত্র ৩০% আছে। ওকে আইসিইউ থেকে সিসিইউ তে শিফট করা হয়েছে। শিফট করার সময় একবার হার্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। তখন সিপিআর ও ইলেকট্রিক শক দেয়ার পরে হার্টবিট আবার চালু হয়েছে ঠিকই কিন্তু সেটা আদৌ চলছে কিনা সেটা নিয়ে ওদের পরিবারের অনেকেই দেখলাম কিছুটা সন্দিহান। ওকে ঢাকাতে নেয়ার মতো অবস্থাও নেই যে নিয়ে যাবে।
এই জিনিসটা আমি আমার নিজের মায়ের ক্ষেত্রেও ফেস করেছি। মায়ের শেষ দিনগুলোতে ২৪ ঘন্টাই অক্সিজেন দিতে হতো। মা যখন মারা গিয়েছে তখন আমরা বুঝতে পারতেছিলাম কিন্তু অক্সিমিটারে মায়ের স্যাচুরেশন ও হার্টবিট শো করতেছিলো। মা যেহেতু বাসাতেই ছিল তাই আমাদের বুঝতে সমস্যা হচ্ছিলো। পরে অবশ্য ডাক্তার বলেছিলেন যে , যেহেতু মৃত্যুর পরেও টার শরীরে অক্সিজেন চলতেছিল তাই এমন দেখাচ্ছিল।
আমরা থাকাকালীন সময়য়েই ডক্টর জানান যে ,এই রকম রোগী সাধারণত ফেরত আসে না তবে ওর যেহেতু বয়স অনেক কম আর সেই সাথে কোনো ধরনের বড়ো কোন সমস্যা নেই তাই তারা এখনো আশা রাখতেছেন যে ফেরত আসলে আসতেও পারে। তাই উনারা আরো একটু দেখতে চান।
আমরা হাসপাতাল থেকে বের হই প্রায় ৩ টার দিকে। আগেই সাভারে থাকা আমার ছোট মামী আমাদেরকে র বাসায় যেতে বারবার বলেছিলো তাই তার বাসায় যাই আমরা। সাথে আমার বড়ো ভাই ও ভাবিও ছিল। সেখান থেকে দুপুরের খাবার খাওয়া শেষ করে তারা চলে যায় ধামরাইতে।
আমরা অবশ্য আরো কিছুটা সময় লেট করে বের হই। এর পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হই অসম্ভব একমন খারাপ ও সৃষ্টিকর্তার কাছে জুঁইয়ের জন্য প্রার্থনা করতে করতে।
@fantvwiki ,
Thank you so much for your encouraging support, sir .