Incredible India monthly contest of May #1| How do we control the loneliness of our parents?
এমন একটি চমৎকার বিষয়বস্তু নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য @sduttaskitchen ম্যামকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি আমাদের কমিউনিটির বাকি সদস্যরাও চমৎকার এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আমাদেরকে তাদের মতামতের সাথে পরিচিত করবেন।
প্রতিযোগীতার নিয়ম অনুযায়ী আমি আমার বন্ধু @baizid123 ,@jahidul21 ও @karobiamin71 কে এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
Do you hold the view that, over time, parents develop a longing for the presence of their children? Please elaborate. |
|---|
আমি নিজে একজন মা হিসেবে জানি যে আমার সন্তান কাছে থাকলে আমি কতটা খুশি হয়। আমার সবসময়ের চাওয়া থাকে আমার সন্তানেরা যেন আমার পাশে থেকে। ওরা সময়ের সাথে সাথে দূরে চলে যাবে এবং এটা খুবই স্বাভাবিক। এটা আমি খুব ভালো করেই জান। কিন্তু তারপরও এই কথা ভাৱলে একধরণের মারাত্মক খারাপ লাগা কাজ করে আমার মাঝে।।
সেই সাথে আমি নিজে একজন সন্তান হিসেবেও দেখেছি আমার বাবা-মা আমাকে দেখলে কতটা খুশি হয়। আমি কখনো ভুলতে পারবো না সেই দৃশ্য যখন আমার বাবা হসপিটালের HDUতে ছিল। সে এমনিতেই ডিমনেশিয়ার পেশেন্ট ছিল ,সবসময় আমাদেরকে চিনতেও পারতো না। হসপিটালে ICU ও HDU তে শেষ দিনগুলোতে কেটেছে তার।
শেষবার যখন আমি তার সাথে দেখা করতে গেলাম তখন আমার সাথে ওই হসপিটালের একজন ডাক্তার ছিলেন। আমি শেষবার তাকে বাবা বলে ডাকলাম তখন তার চোখের কোন দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো একফোঁটা। আমার পাশে দাঁড়ানো ডাক্তার জানালো যে বাবা বুঝতে পেরেছে আমি তাকে বাবা বলে ডেকেছি।
আমি অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকালাম কারণ বাবা একমাসের মাঝেও কারো ডাকে সারা দেন নাই। কিন্তু শেষবার সে আমার ডাকে অচেতনতার জগৎ থেকে শেষবারের মতো চেতনার জগতে ফেরত এসেছিলো কয়েক মুহূর্তের জন্য । এর একদিন পরে তিনি মারা যান।
সন্তানের জন্য এই ব্যাকুলতা আমার শাশুড়ি মা এবং আমার নিজের মায়ের মাঝেও দেখেছি। আর এই জিনিসটা বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরো বৃদ্ধি পেতেও দেখেছি। শুধু তাদের মাঝেই যে এই জিনিসটা দেখা যায় এমন না এটা প্রতিটা বাবা-মায়ের মাঝেই দেখা যায়।
কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের দৈহিক ও মানসিক শক্তি কমে যেতে থাকে। তারা কাজ থেকে অবসর নেন, এবং তাদের অনেক বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনকেও জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেন। যার কারণে এই সময়ে সন্তানদের সঙ্গ তাদের জন্য সবচাইতে বড়ো মানসিক শান্তির একটা জায়গা হয়ে দাঁড়ায়।
How do we control the loneliness of our parents? |
|---|
বাবা -মায়ের একাকিত্ব নিয়ন্ত্রণ করার সবচাইতে ভালো উপায় হলো আপনি তাকে যতটা সম্ভব সময় দিন। সত্যি বলতে এর চাহিতে ভালো কিছু আর নেই। আর যদি সেটা সম্ভব না হয় প্রতিদিন একবার হলেও কথা বলুন সেটা ফোনে, ভিডিও কলে ভয়েসে।
এছাড়া কাছাকাছি থাকলে সপ্তাহে অন্তত একদিন দেখা করতে চেষ্টা করুন। সেইসাথে মনোযোগ দিয়ে শুনুন তারা বলে কিংবা বলতে চায়। তারা যেভাবে আপনার ছোটবেলাতে আপনি না বললেও আপনার চিন্তাকে বুঝে ফেলতো ঠিক সেভাবে না হলেও তাদের ভাবনাগুলোকে বোঝার চেষ্টা করুন।
তাদের সাথে একসাথে বসে খাবার খান ,গল্প করুন ,তাদের ছোটবেলার কথা শুনুন। পুরোনো ছবি দেখুন একসাথে বসে ও স্মৃতিচারণ করুন। তাদেরকে যতটা সম্ভব মানসিক ভাবে সক্রিয় রাখুন। বই পড়া, পত্রিকা, কিংবা ধর্মীয় চর্চা ইত্যাদি এককথায় তারা যা পছন্দ করেন সেটাতেই উৎসাহ দিন।
তাদের ইউটিউব, অডিওবুক, বা সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার শেখান। তাদেরকে তাদের পরিচিত মানুষ ,আত্মীয় ও বন্ধু -বান্ধবদের কাছে বেড়াতে নিয়ে যান মাঝে মাঝে। তাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক সময় তারা অল্পতেই রেগে যান। এসময় ধৈর্য ধারণ করুন। সময়মতো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
পোষা প্রাণী পছন্দ করলে তাকে তার পছন্দমতো পোষা প্রাণী এনে দিন। তাদেরকে নিয়ে বাইরে বেড়াতে যান। সবশেষে আপনি যে তাকে ভালোবাসেন এটা প্রকাশ করুন। ভালোবাসি শব্দটা আমরা অনেকে মুখে বলতে অস্সস্তি বোধ করে থাকুন কিন্তু একবার হলেও এই শব্দটা তাকে বলুন।
What are the main reasons behind the loneliness of parents? |
|---|
বাবা-মায়ের একাকিত্বের কারণ এর পেছনে শুধু যে তার সন্তানই দায়ী এমন না। বরং এর পেছনে বহুবিধ কারণ রয়েছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা তাদের কর্মজীবন থেকে দূরে চলে যান এবং যার কারণে তাদের একাকিত্ব বাড়ে।
আবার বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের অনেক প্রিয়জন ,বন্ধুবান্ধবের মৃত্যু ঘটে এবং সঙ্গীর অভাবে তাদের অনেকেই ঘরবন্দি হয়ে সময় কাটান এতেও একাকিত্ব বাড়তে থাকে। এ সময় তাদের মনের মাঝে একধরণের মৃত্যু ভয় ও কাজ করে।আমার নিজের পরিবার ও কাছের অনেক পরিবারে দেখেছি অনেক সময় তাদের পার্টনারের মৃত্যুর পরে তারা ডিমনেশিয়ার মতো মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন এমনকি মর্ত্যুও ঘটে।
সেই সাথে সন্তানেরা পড়াশোনা, চাকরি বা ব্যক্তিগত জীবনের কারণে শহর বা দেশের বাইরে চলে যায় অনেকসময় ।এ'সময় শারীরিক দূরত্ব মানসিক দূরত্বে রূপ নেয়।আর এই সংযোগ কমে যাওয়ার কারণেও একাকিত্ব দেখা যায় তাদের মাঝে।
বৃদ্ধঅবস্থায় অনেকসময় তাদের সন্তানেরা ভালোবাসলেও ব্যাস্ততার কারণে সময় দিতে পারে না আবার অনেক সময় তাদের কাছ থেকে মারাত্মক অবহেলার শিকার হয়। এটাও তাদের মনের উপরে প্রভাব ফেলে থাকে।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষকে বিভিন্ন ধরণের রোগ এসে ঘিরে ধরে। শারীরিক যন্ত্রণার কারণেও মানুষ অবসাদে ভুগে। এসময় তারা তাদের চারপাশে ছেলেমেয়ে। নাতি নাতনি নিয়ে থাকতে চায়।তারা সবচাইতে একাকিত্বে ভুগে তখনই , যখন তারা অনুভব করেন যে তাদের আর কেউ প্রয়োজনীয় বলে মনে করছে না।
আমরা হয়তো সবসময় তাদের কাছে থাকতে পারবো না তারপরও চেষ্টা করলে তাদের একাকিত্ব অনেকটাই কাটাতে পারি যদি আমরা কিছুটা সচেতন হই।
