পূজা পরিক্রমা - অন্তিম পর্ব!

এর আগে তিনটি পর্বে আমি চেষ্টা করেছি কলকাতার বেশ কিছু পূজো আপনাদের মাঝে তুলে ধরবার।
এখনও যদিও অনেক গুলি জায়গা বাকি, তবে আর অধিক দীর্ঘায়িত না করে পুজো পরিক্রমায় আজ ইতি টানবো, আর চেষ্টা করবো শব্দ সংখ্যার চাইতে ছবিতে পুজো প্যান্ডেল গুলো উপস্থাপন করতে।
এতে করে কিছু ছবির পাশাপশি ভিডিও গুলো আপনারা হয়তো দেখতে ইচ্ছুক হবেন, লেখা বিশেষ কেউ যে পড়ে না, বিষয়টি বহুবার উল্লেখিত।

![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
![]() | ![]() |
যেমনটি গতকাল শেষ পর্য্যায়ে লিখেছিলাম, আজকে শুরু করবো বোস পুকুরের পুজো দিয়ে যেটি কলকাতার কসবা অঞ্চলে অবস্থিত।
এই পুজো উদ্বোধনে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী আসেন, পাশাপশি এদের পুজো বেশ নামকরা।
লেখার শুরুতে প্যান্ডেল এর ছবি দিয়েছি, আর এখানে রইলো বাকি ছবিগুলি।
ভিডিও যদি দেখেন, তাহলে বুঝবেন ভিতরের সবটা ক্লাব কর্তৃপক্ষ সাজিয়েছিল বিভিন্ন বীজ জার বন্দী করে!


![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
![]() | ![]() |

এই পুজো দেখে বেরিয়ে আমার সোজা চলে গিয়েছিলাম বাইপাস ধাবায়! সেখানে দুপুরের খাওয়া দাওয়া সম্পন্ন করে হেঁটে এগিয়ে গিয়ে পেয়েছিলাম মেট্রোপলিটন দুর্গাবাড়ির পুজো।
আমিষ খাবার খেয়েছিলাম, সাথে পায়ে ছিল স্পোর্টস শু, যেটি খুলে মণ্ডপে প্রবেশ সঠিক হবে না, তাই বাইরের দৃশ্য ভিডিওতে আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি।


![]() | ![]() |
---|

![]() | ![]() |
---|


এখানে রাস্তার দু'ধারে বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া ইত্যাদি জায়গার তৈরি হাতের কাজের জিনিষ রাস্তার দুপাশে আকর্ষণের বাড়তি কেন্দ্রবিন্দু ছিল।

গোটা রাস্তায় রঙ্গোলি এবং কেরালার বিখ্যাত কথাকলি নৃত্য শৈলীর আকারে তৈরি মূর্তি অভূতপূর্ব লেগেছে।
যে মুহূর্তে আমার এগিয়ে যাচ্ছিলাম মন্দিরের দিকে, সন্ধ্যার আকাশ ছিল নীলাভ, সাথে পুজোর আলো প্রজ্জ্বলিত হতে শুরু করেছিল, সব মিলিয়ে একটা রোমাঞ্চকর মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরে মনটা ভীষণ ভালো হয়ে গিয়েছিল।
আচ্ছা, এখনের আরো একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়, সেটা হলো একটি বছর সাতেক বয়সের ছেলের ঢাক বাজাবার দক্ষতা!
এক্ কথায় অসাধারণ! আপনারা যদি ভিডিও দেখেন খানিক আন্দাজ করতে পারবেন।

এই পুজোর আনন্দ উপভোগ করে, চলে গিয়েছিলাম বেলিয়াঘাটা ৩৩ নম্বর পল্লীবাসী বৃন্দের পুজোর সাক্ষী হতে।

এদের পুজোটা আমি খবরের চ্যানেলে আগেই দেখেছিলাম, এদের এবারের পুজোর থিম ছিল, অন্ন, বস্ত্র এবং বাসস্থান!
মানব জীবনের তিনটি মূল্যবান প্রয়োজনীয় বস্তু!
সেইমত প্যান্ডেল সজ্জা এবং ভিতরের লেখায় ছিল,
মা দুর্গা হলেন জগৎ জননী, কাজেই আমার সকলেই তার সন্তান, তাই একজন মায়ের কামনা এখানে লেখনীতে তুলে ধরবার সাথে, বিষয়গুলোকে বাস্তবায়িত করবার প্রয়াস প্রশংসনীয়!
এবারের পুজো সম্পর্কে কিছুটা লিখতেই হচ্ছে, কারণ গোটা কলকাতার অধিকাংশ আগ্রহ তথা ভিড় ছিল এই পুজোকে কেন্দ্র করে।

যারা কলকাতাবাসী তারা কারণটা জানেন, তবে যারা জানেন না, তাদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি, এই পুজোর থিম ছিল অপারেশন সিঁদুর!
অনেকেই হয়তো বিষয়টি খবরে দেখেছেন, আবার খানিক আমি টেলিভিশন থেকে ভিডিও করে লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, কিভাবে নিরীহ মানুষকে ধর্ম জিজ্ঞাসা করে পাহেলগাম এ হত্যা করা হয়েছিল!
এই পুজোয়, তাই এ বছরের থিম ছিল, সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
কাজেই, দশমী হলে কি হবে? জন জোয়ার ছিল দেখার মত!
ততক্ষণে আলোর রোশনাই সর্বত্র বিরাজমান ছিল, আর বিষয়টিকে প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল, ভিড়ের মাঝে ভিডিও করবার প্রয়াস করেছি, জানিনা কতখানি আপনারা বুঝতে সক্ষম হবেন!
তবে, বিষয়টি দেখতে দেখতে শরীরের অভ্যন্তরে থাকা রক্ত ফুটছিল, ঘটনাটির কথা ভেবে! মানুষরূপী অমানুষদের কথা চিন্তা করে!
আরো একবার ভারতীর হিসেবে গর্বিত হবার সুযোগ পেয়েছিলাম, যখন অপারেশন সিঁদুর তুলে ধরা হচ্ছিল, এই ঘটনার যোগ্য জবাব দিতে।
বাইরে অপারেশন সিঁদুর এর পুরো বিষয়টি দেখানো হয়েছে আর পুজো মণ্ডপ ছিল এর পাশ দিয়ে গিয়ে ভিতরে।
নারী শক্তির অভূতপূর্ব নিদর্শন ছিল, এ বছর এই পুজোতে।

এই পুজো দেখে বেরিয়ে শেষ যে পুজো মণ্ডপ তথা পুজো দেখেছি;
সেটা চালতা বাগানের ৮৩ বছরের ঐতিহ্যবাহী পুজো।
খুব স্বাভাবিক পুরোনো ক্যালকাটা থেকে কলকাতা হয়ে ওঠার কাহিনী ছিল এই পুজোর আকর্ষণ।

যেখানে একদিকে মোহন বাগান, অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল!
বেশ নস্টালজিক অনুভূতি নিয়ে বাড়ি পথে যাত্রা শুরু করলাম, আর মনে মনে মা কে বললাম আগামী বছর পুনরায় আসতে, সকলকে সুস্থ্য এবং ভালো রাখতে।


এই পোস্টটি ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য বহু প্রতিক্ষিত একটি পোস্ট। কারণ যেদিন থেকে আপনি আপনার কলকাতায় পুজো প্যান্ডেল পরিক্রমার পোস্ট করা শুরু করেছিলেন, সেদিন থেকে এই পোস্টটি করার অপেক্ষা করেছি। কারণ এখানে আমার সবথেকে পছন্দের প্যান্ডেলের রিভিউ আপনি শেয়ার করেছেন।
অপারেশন সিঁদুর প্রতিটি বাঙালির কাছে একটি স্মরণীয় ঘটনা, কারণটা অবশ্য প্রত্যেকের কাছে জানা এবং এমন একটা বিষয়কে প্যান্ডেলের মাধ্যমে জনসাধারণের সামনে উপস্থাপন করার প্রয়াস অবশ্যই প্রশংসনীয়।
যতজন এই প্যান্ডেলটির সামনে থেকে চাক্ষুষ করেছেন, সবাই এটির প্রশংসা করেছেন। কারণ একদিকে প্যান্ডেলের লাইটিং এবং অন্যদিকে পেহেলগামের ঘটনাটার সম্পূর্ণ অডিও ভিজুয়ালের মাধ্যমে উপস্থাপন করে প্রতিটি বাঙালির মনে এক অনন্য অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে।
আপনিও এই প্যান্ডেলটি সামনে থেকে দর্শন করেছিলেন। তাই সামনে থেকে এই ঘটনা গুলোকে উপলব্ধি করেছিলেন। একদিকে যেমন পেহেলেগামের ঘটনার সময় মনে তীব্র ঘৃণা মনে জাগিয়েছিলো, ঠিক তেমনি অপারেশন সিঁদুর এর চিত্রগুলো একইভাবে মনে গর্বের অনুভূতিও জাগিয়েছিল।
চালতা বাগানের পুজোর থিম এর বিষয়টি জেনেও সত্যিই ভালো লাগলো। পুরনো ক্যালকাটা থেকে কলকাতা হয়ে ওঠার গল্প ছিল এই পুজোর থিম, যেটা চাক্ষুষ করে আশা করি আপনারও ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালো লেগেছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার পূজা পরিক্রমা শেষ পর্বে, আরো কিছু বিখ্যাত পুজো দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন
Congratulations!! Your post has been upvoted through steemcurator07. We encourage you to publish creative and quality content.
Thank you dear @mvchacin for this support 💓