A perfect combination of Mythology, Archaeology, and festival! (পৌরাণিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক এর মেলবন্ধন)

in Incredible India3 days ago (edited)

1000068054.jpg

বিগত লেখায় উল্লেখ করেছিলাম আপনাদের সাথে বাকি কিছু পুজো প্যান্ডেল সহ আলোকসজ্জা তুলে ধরবো!

তবে, যদি শুধু ছবি আর আলোকসজ্জা দিয়ে লেখা শুরু এবং শেষ করি তাহলে এই যে থিম বেছে নিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে সেটি অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে।

এবারের দুর্গা পুজো এবং কালী পুজোয় বেশ অনেক পুজো প্যান্ডেলের ক্ষেত্রেই শ্রী কৃষ্ণের বিভিন্ন দিক থিম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে!

তাই আজকের লেখায় আপনাদের সাথে ছবি ছাড়াও কিছু পৌরাণিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয় উল্লেখ করবো, যেগুলো সম্পর্কে অনেকেই হয়তো ওয়াকিবহল, তবে সকলেই নয়!

1000068016.jpg

1000068020.jpg1000068021.jpg

1000068017.jpg

কাজেই, তথ্য গুলো রইলো তাদের জন্য যারা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে আগ্রহী এবং ভারতের ঐতিহ্যের ইতিহাস সম্পর্কে কিয়দংশ তথ্য সংগ্রহ করতে চান!

লেখার শুরুতেই যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন সেটি দ্বারকা নগরী, যেটি শ্রী কৃষ্ণের রাজ্য ছিল, তার থিম কে কেন্দ্র করে নির্মিত।

1000068072.jpg

1000068073.jpg1000068074.jpg

1000068075.jpg

এই বিষয়ে বিশদ বিবরণ তুলে ধরবার পূর্বে জানিয়ে রাখি, মাঝে যে যে পুজো আমি দেখেছি, সেগুলো ছবি আর ভিডিও সহ আপনাদের মাঝে রইলো।

1000068076.jpg

এরমধ্যে একদিকে যেমন ছোটো, মাঝারি আকারের পুজো আছে, তেমনি একটি বড় আকর্ষণ এর পুজো প্যান্ডেল ও রয়েছে।

1000068023.jpg

1000068026.jpg1000068027.jpg
1000068029.jpg1000068030.jpg

1000068031.jpg

1000068025.jpg1000068032.jpg

1000068033.jpg

এখানে, মা কালীর পিছনে কালীয়া সর্পের মাথায় শ্রী কৃষ্ণের দন্ডায়মান মূর্তি অপরূপ লাগছিল।

অনেকেই হয়তো জানবেন শ্রী কৃষ্ণ এই কালীয়া নামক সর্পকে পরাজিত করেছিলেন, যে সর্প যমুনা নদীর জল বিষাক্ত এবং দূষিত করে সেই স্থানের মানুষদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

1000068034.jpg

এটি পৌরাণিক কাহিনীর পাশাপশি সাহস এবং ঐশ্বরিক শক্তির নিদর্শন এর পাশপাশি কোথাও গিয়ে আজকে যে ভাবে প্রাকৃতিক দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে তার সুপ্ত বার্তা বাহক!

অনেকেই জানেন, লক ডাউন সময় কালীন প্রকৃতি পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল, কারণ মানুষ তখন গৃহবন্দি ছিল।

আজকের এই আধুনিক সমাজে দাড়িয়ে একদিকে যেমন শ্যামা মায়ের উপস্থিতি নারী শক্তির প্রতীকী তেমনি কোথাও গিয়ে তার পিছনে শ্রী কৃষ্ণের যমুনা নদীর উপর কালীয়া সর্পের মাথায় দাড়িয়ে থাকা বর্তমান সমাজের পরিকাঠামো তুলে ধরেছে!

যেখানে, হয়তো পুনরায় নারী পুরুষের মেলবন্ধন এই কলুষিত প্রকৃতিকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম।
প্যান্ডেলের অভ্যন্তরীণ কারুকার্য ছিল চোখ ধাঁধানো!

1000068055.jpg

আপনাদের মাঝে ছবির পাশাপশি ভিডিও ভাগ করে নিচ্ছি, যেমনটি আগের লেখায় উল্লেখিত, ভিড়ে জেরবার হয়ে যথা সম্ভব প্রয়াস করেছি, ছবি এবং ভিডিও করবার।

কাজেই, ভুলত্রুটি মার্জনীয়! শ্রী কৃষ্ণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা আমার মত তুচ্ছ মানবের পক্ষে অসম্ভব!
তবে, আজও দেশ বিদেশের প্রত্নতত্ত্ববিদরা আরব সাগরের নিচে জলমগ্ন দ্বারকা নগরীর ভগ্নাবশেষ দেখতে হাজির হন;
শুধু একথা বললে ভুল হবে, তারা বিষয়টি নিয়ে একাধিক ডকুমেন্টরি ও তৈরি করেছেন!

IMG_20251024_152010.jpg

স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী স্কুবা ডাইভিং এর সহায়তায় জলমগ্ন দ্বারকা ভগ্নাবশেষ পরিদর্শন করে এসেছেন।
আপনারা হয়তো অনেকেই গুগল এর সহযোগিতায় বহু তথ্য এই দ্বারকা সম্পর্কে পেয়ে যাবেন।

1000068036.jpg

1000067995.jpg1000067996.jpg

1000068042.jpg

মূলত দ্বারকা নগরী ধ্বংসের দুটি কারণ রয়েছে, যার একটি জলবায়ুর আধারে প্রত্নতত্ত্ববিদ দ্বারা বর্ণিত, এবং কারণ হিসেবে সমুদ্রের জলস্ফীতি কে দায়ী করা হয়েছে!

আর যদি পৌরাণিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কারণ খুঁজতে জান, তাহলে সেখানে বর্ণিত আছে কৌরব মাতা গান্ধারী কর্তৃক শ্রী কৃষ্ণের অর্জিত অভিশাপ, যার কারণে যদু ভ্রাতৃ দের মধ্যে কলহ দেখা দেওয়ায় যদু বংশ কেবল নাশ হয়েছিল।

1000068040.jpg

1000068051.jpg1000068053.jpg

1000068054.jpg

1000068057.jpg1000068052.jpg

1000068055.jpg

1000068058.jpg1000068059.jpg

পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী শ্রী কৃষ্ণ মথুরা থেকে প্রত্যাবর্তনের পরে সমুদ্র থেকে বিশ্বকর্মার সহায়তায় আনুমানিক ৯৬ বর্গকিলোমিটার জমি পুনরুদ্ধার করে দ্বারকা নগরীর নির্মাণ করেছিলেন!

যার সৃষ্টি আছে, তার ধ্বংস অনিবার্য একথা স্বয়ং শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন, সাথে গীতায় উল্লেখিত যা কিছু এই ধরা থেকে নেওয়া এখানেই রয়ে যাবে, গতকাল যা অন্যের ছিল, আজ সেটা আরেকজনের আবার আগামীতে তা অন্যের হবে।
অর্থাৎ নিজের বলে আদপেই কিছু হয় না, আমরা যা কিছু নিজের বলে দাবি করি সবটাই মায়া!

1000068061.jpg

1000068065.jpg1000068066.jpg

1000068067.jpg

1000068062.jpg1000068063.jpg

1000068068.jpg

এই যে কথাগুলো উল্লেখ করলাম, তার কারণ হয়তো আপনারা ছবি এবং ভিডিও দেখলে অনুমান করতে পারবেন, কারণ শেষ যে প্যান্ডেল পরিদর্শন করে বাড়ির পথে যাত্রা করেছিলাম, সেই পুজোর থিম ছিল দ্বারকা নগরী।

আর এই প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে আমার সময় লেগেছিল এক ঘণ্টা নয় মিনিট, কাজেই অনুমান করতে পারছেন নিশ্চই, কতখানি জন জোয়ার ছিল ওইদিন।

এর সাথে আরেকটি কারণ ছিল, প্যান্ডেলের প্রবেশ পথ পর্যন্ত পৌঁছনোর রাস্তা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছিল, কিছু অপ্রীতিকর কারণে জন্য।

এর ফলে রাস্তার দূরত্ব অনেকখানি বেড়ে গিয়েছিল।
তবে, একবার প্যান্ডেলে প্রবেশের পর মনে হয়েছিল সত্যি পরিশ্রম স্বার্থক!

চমৎকার ভাবে তৈরি প্যান্ডেল সহ ভিতরের কারুকাজ এক লহমায় ইহজগত থেকে অতীতের সেই ২০০০ খ্রিস্টপূর্বের সময় নিয়ে গিয়েছিল!

1000068069.jpg

1000068070.jpg1000068071.jpg

প্যান্ডেল পরিদর্শন করে দেখলাম, তার বাইরে হরেক রকমের পিঠা গরম গরম তৈরি করে বিক্রি হচ্ছে, ছবি তোলার পাশাপশি একটি পিঠে খেলাম, আর একটা জলের বোতল সহ একটি ময়ূর পেখম কিনে বাড়ির পথে এগোতে গিয়ে নজরে পড়ল রাধা কৃষ্ণের মন্দিরে প্রসাদ বিতরণ হচ্ছে, সেখানেও লাইন!

কি আর করা! ঠাকুরের প্রসাদ পাওয়া কপাল এর ব্যাপার তাই, প্রসাদ পেয়ে মন্দিরে অবস্থিত কলের জলে হাত ধুয়ে, প্রশান্ত মনে বাড়িতে পৌঁছলাম। যখন ঘড়ির কাঁটা বলছিল ভারতীয় সময় রাত দশটা বাজতে আর মাত্র দশ মিনিট বাকি!

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
Loading...