নিরামিষ খিচুড়ি! A popular vegan delicacy especially for the rainy season!

in Incredible India15 days ago

1000062447.jpg

দক্ষিণ এশিয়ায় বিশেষত প্রচলিত একটি খাবার তালিকায় অনেক খাবারের মধ্যে অনন্য এই "খিচুড়ি!"
দেখুন নাম এক তবে তৈরির পদ্ধতি বিভিন্ন, এটি যেমন একদিকে আমিষ ভাবে তৈরি করা যায়, অপরদিকে সম্পূর্ণ নিরামিষ ভাবেও তৈরি সম্ভব।

সাধারণত, নিরামিষ ভাবে তৈরি করা খিচুড়ি একদিকে হজমে অধিক সহায়ক, এবং স্বাস্থ্যকর খাবারে গণ্য করা হয়।

যেহেতু খুব সামান্য তেল, মশলার প্রয়োজন এটি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, সেজন্যই অনেক সময় অসুস্থ হলে চিকিৎসক খিচুড়ি খাবার কথা বলে থাকেন।

এটি সহজপাচ্য তাই সে দিক থেকে সদ্য ভাত খেতে শেখা শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই খাবারটি গ্রহণ করতে সক্ষম।

তবে, অনেক প্রকারের ডাল, আমিষ বস্তু এবং মশলার উপস্থিতি খাদ্যটিকে স্বাদের ক্ষেত্রে অন্য মাত্রা এনে দিলেও এটির গায়ে থাকা স্বাস্থ্যকর তকমাটি সেক্ষেত্রে উধাও হয়ে যায়।

আমি বিশেষত শীতকালে বিভিন্ন সবজি সহযোগে খিচুড়ি তৈরি করে থাকি, তবে আজকে আপনাদের মাঝে খুব সাধারণ ভাবে তৈরি অথচ সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি ভাগ করে নেবো।
আচ্ছা, আমার ঘরে ছিল কেবলমাত্র আলু, আর ওল!

সেই দিয়েই কিভাবে তৈরি করেছি খিচুড়ি চলুন দেখা যাক! এবারেও ঘরে থাকা একটি বাটি ছিল আমার পরিমাণ নির্ধারণের সামগ্রী।

1000062342.jpg
👇

  • Gobindobhog rice:-A rice which is mostly grown in West Bengal, a small grain in size with a buttery flavour.

  • Yam:-Property that helps to fight against cancer

1000062340.jpg

My measurement bowl
উপাদান
পরিমাণ
১. মুগডাল(yellow lentils)1 small bowl
২.গোবিন্দভোগ চাল(Gobindobhog rice)1small bowl
৩. আলু(potato)1 medium (diced).
৪.ওল(Yam)250g(diced).
৫.কাঁচা লঙ্কা(Green chilies)2-3(slited)

1000062344.jpg

Five spices
মশলা
পরিমাণ
১.এলাচ(green cardamom)2 (whole)
২.লবঙ্গ(clove)3-4(whole)
৩.দারচিনি(cinnamon)1inch(broken)
৪. তেজপাতা(bay leaves)2-3 (depends on size)
৫.গোটা শুকনো লঙ্কা(dry red chilies)2 (broken)
৬.পাঁচফোড়ন(five spices)1tsp
৭.আদা বাটা/গুঁড়ো(ginger paste or powder)1/2tsp
৮.সর্ষের তেল(mustard oil)1tbsp
৯.ঘী(clarified butter)1tbsp.
১০. নুন (salt)as per taste
১১. হলুদ(turmeric powder)1tsp
১২. চিনি (sugar)1-1/2tsp.

তৈরির করার পদ্ধতি ভাগ করে নেবার আগে দুটি বিষয় উল্লেখ করতে চাইবো!👇

1000062449.jpg

প্রথমতঃ:- আপনারা আপনাদের পছন্দের যেকোনো সবজি এটিতে ব্যাবহার করতে পারেন, আমার ঘরে যা ছিল তাই দিয়েই আমি তৈরি করেছিলাম।

1000062446.jpg

দ্বিতীয়:- এইভাবে তৈরি খিচুড়ি ঈশ্বর কে নিবেদনের জন্য তৈরি করা হয়, বিভিন্ন বাড়িতে, মন্দিরে, কাজেই যদি নিজেরা খাবেন বলে তৈরি করেন, তাহলে আপনারা আপনাদের মত করে উপকরণে ফের বদল করতে পারেন, তবে যদি ভোগের জন্য তৈরির কথা ভেবে থাকেন, তাহলে সাবধানে উপকরণ নির্ধারণ করবেন।

আর সময় অতিবাহিত না করে মুল পর্বে যাওয়া যাক।

তৈরির পদ্ধতি:-

1000062333.jpg

  • প্রথমেই, আমি ওল এবং আলু ভাপিয়ে নিয়েছিলাম, মনে ধরুন ৮০% সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম সামান্য নুন দিয়ে।

IMG_20250712_172137.jpg

  • এরপর কাঁচা মুগডাল খুব ভালকরে ধুয়ে নিয়েছিলাম, যতক্ষণ পরিষ্কার জল না বের হচ্ছে।

1000062338.jpg

  • গ্যাসে কিংবা আমার মত ইন্ডাকশন এ একটি কড়াই এবং সাথে ধুয়ে রাখা ডাল সহ তিন বাটি(যে বাটিতে চাল এবং ডাল মেপে নিয়েছিলাম) জল দিয়ে সঙ্গে আলু এবং ওল দিয়ে বসিয়ে দিয়েছিলাম।
    আমার আনা মুগডাল সেদ্ধ হতে খুব কম সময় লাগে, আপনাদের ক্ষেত্রে যদি ডালের মান ভালো না হয় তাহলে সবজি ছাড়া প্রেশার কুকারে আধা সেদ্ধ করে নিতে পারেন।
  • ডাল ফুটে উঠলে, আমি মেপে রাখা গোবিন্দ ভোগ চাল ভালোভাবে ধুয়ে কড়াইতে দিয়ে দিয়েছিলাম। সাথে কাঁচা লঙ্কা, নুন, হলুদ, আর চিনি দিয়ে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।

  • এইবার, ওই একই বাটির প্রায় আড়াই বাটি জল আমি কড়াইতে দিয়ে, সমস্ত সামগ্রী ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে, একবার নুন চিনির ভারসাম্য ঠিক আছে কিনা দেখে নিয়েছি।

  • এই খিচুড়ির বৈশিষ্ট, না এটি একেবারে ঝুড়ো হবে আর না একদম পাতলা, কাজেই জলের মাপ গুরুত্বপূর্ণ! এবার একেবারে নিম্ন আঁচে খিচুড়ি রান্না সম্পাদন করতে হবে ঢাকনা দিয়ে, যেহেতু পরিমিত জলে সমস্ত সেদ্ধ হবে।

  • মিনিট পাঁচেক বাদে ঢাকনা সরিয়ে একবার নাড়িয়ে নিতে হবে, এতে সামগ্রীর নিচের অংশ উপরে আর উপরের অংশ নিচে গিয়ে সমস্ত অংশ সমান ভাবে রান্না হবে।

1000062441.jpg
  • এরপর আরো পাঁচ মিনিট একই ভাবে রান্না করে, একটি পাত্রে সেদ্ধ করা চাল, ডাল সবজি সহযোগে নামিয়ে ঢাকা দিয়ে রেখে দিয়েছিলাম।
1000062440.jpg
1000062439.jpg
  • অন্যদিকে কড়াই ধুয়ে, পুনরায় সেটি আঁচে বসিয়ে, সর্ষের তেল দিয়ে ধোঁয়া ওঠা পর্যন্ত গরম হয়ে গেলে, আঁচ কমিয়ে ঘী এর অর্ধেক পরিমাণ তাতে দিয়ে দিয়েছিলাম, এরপর তেজ পাতা, শুকনো লঙ্কা, সামান্য ফাটিয়ে গোটা এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, পাঁচফোড়ন দিয়ে কয়েক সেকেন্ড নেড়েচেড়ে, আদার গুঁড়ো দিয়ে, তারমধ্যে পাত্রে রাখা সেদ্ধ করা চাল ডালের মিশ্রণ ঢেলে গিয়েছিলাম।

  • এবার আঁচ কমিয়ে সমস্ত উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে, আবারো একটি ঢাকনা দিয়ে কড়াই চাপা দিয়ে রেখেছিলাম, এতে মশলার গন্ধ খিচুড়ির মধ্যে ভালোভাব মিশে যায়।

1000062442.jpg
1000062444.jpg

1000062443.jpg

  • মিনিট তিন চার পরে, আঁচ বন্ধ করে ঢাকনা খুলে, বাকি ঘী ছড়িয়ে দিতে হবে, এবং পুনরায় ভালোভাবে সমস্ত মিশিয়ে আবার কড়াই বন্ধ আঁচে বসিয়ে রাখতে হবে মিনিট পাঁচেক।
1000062448.jpg
  • এরপর আর কিছু বাকি নেই, শুধু পরিবেশন ছাড়া, আমি যেমন সঙ্গে রেখেছিলাম, পটল ভাজা, কাকরোল ভাজা, আর পাপড় ভাজা, তেমনি আপনারা আপনাদের পছন্দের জিনিষ রাখতেই পারেন এই খিচুড়ির সাথে।

আমি যখনই এইভাবে খিচুড়ি তৈরি করেছি, মনে হয়েছে যেনো এর চাইতে উপাদেয় খাবার কিছু হতেই পারে না!
একবার আপানরাও তৈরি করে দেখতে পারেন, হয়তো দৈনন্দিন খাবার থেকে সামান্য হলেও অন্যরকম স্বাদ পেতে পারেন!

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
 15 days ago 

দিদি আপনি যে খিচুড়ি পাকিয়েছেন দেখে তো জিভে পানি চলে আসছে। আসলে খিচুড়ি আমি খুব একটা বেশি পছন্দ করি না, তবে খিচুড়ির উপরে থাকা পাপড়গুলো আমার বেশ পছন্দ 😄😄😄

Congratulations!! Your post has been upvoted through steemcurator09. We encourage you to publish creative and quality content

1000212743.jpg

Curated by: @ruthjoe

 15 days ago 

@ruthjoe appreciated your encouraging support 😊👍

Loading...
 15 days ago 

নিরামিষ খিচুড়ি বলা হয়েছে তো অল্প তেল অল্প মসলা দিয়ে তৈরি বলে এবং আপনি সুন্দর করে এই পদ্ধতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যেটা দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগছে এবং দেখে মনে হচ্ছে এটা খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে এক কথা বলতে গেলে জিভে জল চলে এসেছে অবশ্যই নিরামিষ খিচুড়ি খুব বেশি খাওয়া হয় না আমাদের তবে এটা দেখে তো এই পদ্ধতি অনুযায়ী একদিন তৈরি করার ইচ্ছা জেগেছে নিজের মনে।

খিচুড়ি প্রায় সবারই পছন্দের খাবার। খিচুড়ি একেকজন একেক রকম করে রান্না করেন।কেউ কেউ অতিরিক্ত মসলা দিয়ে রান্না করেন,যা হজমসহ পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আপনার রান্নার বর্ণনা পড়ে বুঝতে পারলাম আপনি খুব সাধারণভাবে খিচুড়ি রান্না করেছেন,যা সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মনে হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা।