জলকণা! -Water droplets!

জলের ফোঁটায় আচ্ছন্ন আমার শহর;
ঝাপসা কাচের অভ্যন্তরে, তখন দ্বিপ্রহর!
জলের ঝাপটা, সশব্দে দিচ্ছিল হাতছানি;
ইশারায় জানান দেওয়া বিস্মৃত শৈশব খানি!
ইচ্ছে করে ভিজে জলে, সেই তোর স্কুলে যাওয়া;
মনে মনে সুপ্ত ইচ্ছে, আগাম ছুটি পাওয়া!

![]() | ![]() |
---|

পুজোর লেখায় উল্লেখ করছিলাম কিছু পুজো প্যান্ডেল দর্শনের পরে, মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল।
আর, ঠিক সেই কারণে বেশ অনেক সময় গাড়ি বন্দী অবস্থায় ছিলাম!
ঠিক সেই সময় নিজের শহরকে ভিজতে দেখে, গাড়ির কাঁচে জলকণা এক্ মুহূর্তে নিয়ে গিয়েছিল সেই স্কুলের দিনে, যখন ইচ্ছে করে বৃষ্টিতে কম বেশি হয়তো সকলেই ভিজে হয়, স্কুলে পৌঁছেছে যাতে স্কুলে রেনি ডে উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা করে দেয়!
নয়তো বাড়ি ফিরবার পথে ইচ্ছেকৃত ভিজতে ভিজতে বাড়ি ফিরেছে!
অন্য কারোর কথা জানা নেই, তবে আমি তো বহুবার এই কাণ্ড ঘটিয়েছি!
এখন, নিয়ম অনুযায়ী ঋতুর হাত ধরে বৃষ্টি প্রতি বছর আসে না, সঙ্গে আগের মতো স্কুলে পড়া ছাত্র ছাত্রীরা বৃষ্টিতে ভেজার মজা সেইভাবে উপভোগ করে বলেও আমার মনে হয় না!
এখন হাতে গ্যাজেট, কাজেই জল এড়িয়ে চলতে তারা হয়তো অভ্যস্থ!
লেখাটা লিখতে গিয়ে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো, সেইদিন ও একইরকম অবস্থা হয়েছিল!
কিছু হারিয়ে ফেলা মুখ ভেসে উঠেছিল পিছন ফিরে তাকিয়ে!
বৃষ্টিও হয়তো বুঝতে পারে এখন সে মূল্য হারিয়েছে! তাই আগের মত মরশুমের হাত ধরে আসে না।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |

খানিক আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিলাম গাড়িতে বসে, যেনো এক নিমেষেই অতীতের অনেকগুলো পাতা একসাথে পড়ে ফেলেছিলাম!

![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |

শহরের পুরোনো ইমারতগুলো যেনো সেই অতীতের সাক্ষী হয়ে আজও একইভাবে দাড়িয়ে আছে! সময়ের সাথে ম্লান হয়ে যাওয়া দেওয়ালের রঙ না জানি কত উত্থান পতনের গল্প নিজেদের মধ্যে আজও অব্যাহত রেখেছে!
লেখার মাঝে মাঝে আপনাদের সাথে একশ বছর পুরোনো পুজোর উল্লেখ আবার আশি বছর আগেকার পুজো ভাগ করে নিয়েছি, ভেবে দেখুন সেই সময় ও কিন্তু তিনটি দেশ একত্রিত ছিল!

![]() | ![]() |
---|

সময় স্বাধীনতার সাথে অবক্ষয় ও বয়ে এনেছে, এরকম সাত সতেরো ভাবনার মাঝে বৃষ্টির তীব্রতা খানিক কমে আসলে ছাতা নিয়ে আমার কাজিন ব্রাদার একটা ঠাকুর একলাই দেখে এসেছিল, যেহেতু ছাতা একটা ছিল, আর মানুষ তিনজন তাই, ওকে বলেছিলাম ছবি তুলে আনতে।
আজকের লেখায় বৃষ্টি ভেজা শহরের পাশাপশি সেই ছবিগুলো তুলে ধরছি আপনাদের মাঝে।
সচ্ছতার আড়ালে অনেক সময় ইতিহাস ঢাকা পড়ে যায়, কারণ ব্যস্ত শহরে সকলেই নিত্যদিন ছুটে চলেছেন রুজি রোজগারের তাগিদে!
যেই মুহুর্তে খানিক অবকাশ পাওয়া যায়, প্রকৃতি বুঝিয়ে দেয়, সময়ের হাত ধরে আমরা কতকিছু হারিয়ে ফেলেছি এমনকি এখনও ফেলছি।
এই শহরের সাথে আমার মত অনেকের অনেক কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে, আর লেখার মাঝেই, হংসরাজ নামের বাংলা ছায়াছবির একটি গানের অংশ তুলে ধরে আজকের মতো লেখায় ইতি টেনে বিদায় নিলাম!
শহরটার এই গোলক ধাঁধায় আঁধার হলো মন;
মন্দ ভালোর এই কি খেলা, ভোলা মন.. মন রে,
মন্দ ভালোর এই কি খেলা চলছে হেথা সর্বক্ষণ আঁধার হলো মন!
কেউ বিনা দোষে চোর হয়ে যায়, কেউ সাধু সেজে পরাণ বাঁচায়!
দশমীতে মায়ের বিদায় বেলায়, হয়তো এই কথা ভেবেই, মায়ের চোখের জল বৃষ্টির ধারা রূপে ধরণীতে বইছিল, কে বলতে পারে!


Congratulations @sduttaskitchen, your post was upvoted by @supportive.
Thank you for this encouraging support