শুভ জন্মদিন " বিদ্রোহী কবি "।।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
১৮৯৯ সালের ২৪ শে মে অর্থাৎ আজকের এই দিনে ভারতের পশ্চিম বর্ধমান জেলায় উনি জন্মগ্রহণ করেন। উনার ডাক নাম ছিল দুখু মিয়া। ছোটবেলায় এমন নামের জন্যই হয়তো পুরোটা জীবন কষ্ট করে গিয়েছেন এই মহান ব্যক্তি। মাএ ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারালে পরিবারের অভাব অনটনের জন্য শিক্ষাজীবনের ইতি টানতে হয় নামতে হয় কর্মজীবনে। এ সময় নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। তবে এই পেশার সাথে উনি খুব বেশি দিন জড়িত ছিলেন না। বাংলা লোক'সাহিত্যের প্রতি আকর্ষণ থাকায় সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। তারপর একের পর রচনা করে গিয়েছে বিখ্যাত সব কবিতা, গান, উপন্যাস গল্প। এতোক্ষণে বুঝে গিয়েছেন আমি বলছি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথা। আজকে এই মহান মানুষের জন্মদিন।
কাজী নজরুল ইসলাম যেমন ছিলেন বিদ্রোহী কবি তেমনই ছিলেন প্রেমের কবি। উনার অসংখ্য রচনার মধ্যে সেসব ফুটে উঠেছে। কাজী নজরুল ইসলামের রচনা বিদ্রোহী কবিতা এখনও বাঙালি যুবকের রক্ত গরম করে দেয়। ব্রিটিশদের শাসনের সময় তাদের অত্যাচারের প্রতিবাদ হিসেবে রচনা করেন উনার সেই বিখ্যাত গান কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট। শুধু তাই না। উপমহাদেশে তখন হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা চরমে। মানুষ তখন তাদের নিজেদের মানুষ পরিচয় ভুলে গিয়ে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গায় লিপ্ত। ঐসময় কাজী নজরুল ইসলাম লিখলেন তার কান্ডারি হুশিয়ার কবিতা। যেখানে একটা লাইন
হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার
শুধু বিদ্রোহ না কবির জীবনে প্রেম এসেছে একাধিকবার। সেই অনূভুতি থেকেই করে গিয়েছেন অসাধারণ কিছু গানের রচনা। যেগুলো এখনও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এবং সবচাইতে মজার একটা ঘটনা আমাদের মুসলমানদের ঈদের যে গানটা আমরা এখন শুনি। ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ " এটা কিন্তু কাজী নজরুল ইসলামের লেখা। এই গানটা ছাড়া আমাদের ঈদ যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায় । ইসলামী সংগীতের জগতে কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন নক্ষত্র। অসংখ্য ইসলামী সংগীতের লেখক উনি। পাশাপাশি লিখেছেন অসংখ্য শ্যামা সংগীত। আবার উনার মানুষ কবিতার মধ্যে দিয়ে উনি যেন মানবতার কথা বলে গিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তা যেন সাহিত্যের সকল অঙ্গনের জ্ঞান দিয়ে উনাকে সৃষ্টি করেছিলেন।
তবে তার জীবন কেটেছে অনেক দুঃখ কষ্টে। এতো বড় লেখক হলেও নিজের সারাটা জীবন কাটিয়েছেন অভাব অনটনের মধ্যে। নিজের ছেলে শিশু বুলবুল যখন মারা গেল উনার ঘরে ঐ ছেলেকে দাফন করার টাকাও ছিল না। শেষমেশ এক প্রকাশক শর্ত দিল ঐ মূহূর্তে কবিতা লিখে দিলে উনি টাকার ব্যবস্থা করে দিবেন। কাজী নজরুল ইসলাম নিজের হৃদয়ের সব ব্যাথা কলমের মাধ্যমে লিখে দিলেন
ঘুমিয়ে গেছে শ্রান্ত হ’য়ে আমার গানের বুলবুলি —
করুণ চোখে চেয়ে আছে সাঁঝের ঝরা ফুলগুলি।।
সারাটা জীবন কষ্ট করে গেলেও উনি রয়েছে গিয়েছে কোটি বাঙালির হৃদয়ে। উনার অসাধারণ সব রচনা বাঙালি সাহিত্য কে নিয়ে গিয়েছে অন্য উচ্চতায়। মৃত্যুর পরে উনার ইচ্ছা অনুযায়ী উনাকে কবিতা দেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে। আজ এই মহান মানুষের জন্মদিন। এইজন্যই তার স্মরণে এই অতি সামান্য লেখা। এমন একজন মহান মানুষ কে নিয়ে বলে শেষ করা যাবে না। শুভ জন্মদিন হে জনমদুঃখী কবি।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
https://x.com/Emon423/status/1926207221077032999?t=eG4BKc3L2ICHR7Gzk5cHuA&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.