চিঠি!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। না কোন সাধারণ বা হঠাৎ বৃষ্টি না। এই বৃষ্টি বর্ষাকালের বৃষ্টি । গতকাল রাত থেকে অনবরত হয়ে যাচ্ছে। থামার কোন নাম নেই। এ যেন সৃষ্টিকর্তার কোন অন্যরকম এক খেয়াল। আজ ঘুম থেকেও বেশ দেরি করে উঠেছি। কারণ আজকে অফিস নেই। বৃষ্টির কারণে সূর্য উঠেনি। সকাল মনে হলেও ঘড়িতে সময় তখন এগারো টা এর বেশি। হঠাৎ মনে পড়লো গতকাল অফিস থেকে ফেরার সময় রাস্তায় পড়ে পাওয়া ব্যাগটার কথা। গতকাল অফিস থেকে ফিরছি। বাস থেকে নেমে ফুটপাত দিয়ে হাঁটছি হঠাৎ একটা কিছু পায়ে আটকে গেল। নিচে তাকিয়ে দেখি একটা ব্যাগ। হ্যা ঐটা মেয়েদের ব্যাগ। কোন ছেলে ঐ ব্যাগ ব্যবহার করবে না কখনোই। প্রথম ভেবেছিলাম ব্যাগটা নিবো না। ঐভাবেই থাক। পরে কী মনে হলো ব্যাগটা নিয়ে এলাম সাথে করে। তবে রাতে আর খোলা হয়নি। এখন খোলা যাক।
ফ্রেশ হয়ে ব্যাগটা খুলে ফেললাম। ব্যাগের ছোট পকেটে আরেকটা ছোট ব্যাগ। ঐটা খুলে দেখি তার মধ্যে কিছু নেই। ব্যাগের বড় চেইন টা খুললাম। ভেতরে বেশ কিছু কাগজপত্র। তবে সেগুলো বেশ ভিজে গিয়েছে। কাগজপত্র ছাড়া ব্যাগে সেরকম উল্লেখযোগ্য কিছু পেলাম না। তবে কাগজগুলো কিসের তখন আর খুলে দেখা হয়নি। সেরকম অবস্থাও ছিল না। বেশ কয়েকটা ফ্যানের বাতাসে ছড়িয়ে রাখার পরে কাগজগুলো কিছুট শুকিয়ে গিয়েছে দেখলাম। কৌতূহল নিয়ে কাগজগুলো ছাড়িয়ে দেখতে শুরু করলাম। বিশেষ কিছু নেই। মোটামুটি বেশ কিছু চিঠি। প্রথমে দেখে বেশ অবাক হয়েছিলাম এই যুগে আবার চিঠি কে লেখে। এখন তো স্যোসাল মিডিয়া ইমেইল এর যুগ। না সেগুলো ডাক যোগাযোগে আসা কোন চিঠি না। সেগুলো হাত চিঠি। শুধুমাত্র প্রাপকের উদ্দেশ্যে লেখা কিছু কথা।
বাইরে টা ততক্ষণে বেশ অন্ধকার হয়ে গিয়েছে।অদ্ভূত এক আঁধার এসে ঘিরে ধরেছে পৃথিবী কে। বৃষ্টির তীব্রতা হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে। কৌতূহল নিয়ে একটা চিঠি খুললাম। যদিও অন্যের চিঠি পড়া ঠিক না। কিন্তু কোনভাবেই নিজেকে সেটা থেকে বিরত রাখতে পারলাম না। চিঠি টা মেয়ের লেখা। সম্ভবত যে মেয়ের ব্যাগ তারই লেখা-
প্রিয় নীল,
তুমি কেমন আছ জানতে চেয়ে সময় নষ্ট করলাম না। জানি ভালোই আছ। এখন তোমার ভালো থাকারই কথা। তোমার সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম। আমার সবগুলো নাম্বার তুমি তোমার ফোনে কালো তালিকাভুক্ত করেছ। স্যোসাল মিডিয়া থেকে তো আগেই সরিয়ে দিয়েছ। তোমার হঠাৎ পরিবর্তন আমার যোগাযোগ কমিয়ে দেওয়ার সময়ই আমার বোঝা উচিত ছিল তোমার জীবনে নতুন কেউ এসেছে। শুনলাম তোমার বিয়ের কথা চলছে। না আমি সবকিছু ভেঙে দিতে চাইনা। সেই অভিপ্রায় আমার নেই। তবে আমি তোমার সাথে শেষ একবার দেখা করতে চাই যোগাযোগ করতে চাই। এইজন্যই এই চিঠি লেখা। এছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই। চিঠি টা আমি তোমার কাছে একজনের হাত দিয়ে পাঠাচ্ছি। আশাকরি তুমি চিঠি না পড়বে। শেষ একবার আমার সাথে দেখা করবে। দেখা করার জায়গা এবং সময় টা চিঠির মধ্যে লিখে দিলাম।
ইতি
অরুপা
চিঠি টা পড়ে সবকিছু বুঝতে পারলাম না। কিন্তু কাহিনী টা আমার কাছে পরিষ্কার। সেই ভালোবাসা সেই বিচ্ছেদ সেই সব কাহিনী। প্রকতপক্ষে ভালোবাসার মানুষ পাওয়া খুবই ভাগ্যের ব্যাপার। যেটা সবার কপালে জোটে না। ভালোবাসা ব্যাপার যদি একপাক্ষিক হয় এবং অন্য পক্ষ থেকে যদি কোন সাড়া না থাকে তাহলে বিষয়টা দাঁড়ায় শূণ্যের সাথে গুণ করার মতো। অর্থাৎ যত বড় সংখ্যাই গুণ করেন না কেন ফলাফল সেই শূণ্য। বাকি চিঠিগুলো পড়ার প্রতি বেশ আগ্রহ তৈরি হলো আমার। তবে এখন না। ঐগুলো বিকেলের জন্য রেখে দিলাম।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার পোস্ট পড়ে আমার কাছে ও অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া পরিস্থিতি মানুষকে অনেক কিছু শুখিয়ে দেয়। আর বর্তমান বেশির ভাগ ভালোবাসা এমনি হয়। বেশ ভালো লাগলো চিঠি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
চিঠির মাধ্যমে অরুপার আবেগ এবং নীলের প্রতি তার আকুলতা খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। চিঠির ভাষা প্রাঞ্জল ও হৃদয়গ্রাহী, যা পাঠককে গল্পের মধ্যে টেনে নেয়।আপনি চিঠির লেখকের মনস্তত্ত্বকে খুব সূক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা পাঠককে তার যন্ত্রণা ও আকাঙ্ক্ষা অনুভব করতে সাহায্য করে।