বাংলাদেশের প্রাণ হচ্ছে এর কৃষক ও কৃষি। আমাদের সংস্কৃতি, অর্থনীতি, ও খাদ্যনির্ভরতা—সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কৃষি উৎপাদন। সেই কৃষি ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হলো আমন ধান রোপণ। প্রতি বছর বর্ষাকালে, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে, দেশের প্রতিটি কৃষিপ্রধান অঞ্চলে দেখা যায় এক অনন্য চিত্র—ঘামে ভেজা কৃষকের হাত, কাদামাটিতে হাঁটু পর্যন্ত ডুবে থাকা শরীর, আর ভবিষ্যতের স্বপ্নে ভরা চোখ।

আমন ধান বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ধান প্রজাতি। এটি সাধারণত বর্ষার পানিতে বেড়ে ওঠে এবং শীতের আগমনে কাটা হয়। বোরো ও আউশের পর, আমন ধান দেশের মোট চাল উৎপাদনের প্রায় ৩৮%-৪০% সরবরাহ করে।এই ধান মূলত বৃষ্টির পানিতে নির্ভরশীল।আমন ধানের ফলন নির্ভর করে সঠিক সময়ে রোপণ, সার ব্যবস্থাপনা এবং প্রাকৃতিক পরিস্থিতির ওপর।

উন্নত জাতের বীজ বাছাই করে বিশেষ জায়গায় বীজতলা তৈরি করা হয়। এখানে চারা গজায়।বৃষ্টির সময় যখন মাঠে পানি জমে, তখন বীজতলার চারাগুলো তুলে আনা হয়।হালচাষ, মই দেয়া, পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়।নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা রোপণ করা হয়। সাধারণত দুই থেকে তিনজন মিলে এ কাজ করেন—একজন চারা দেন, একজন রোপণ করেন, আর কেউ কেউ পানি সরিয়ে দেন বা জমির সমতা বজায় রাখেন।আমন রোপণের সময় গ্রামে যেন একটা উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়।

ভোর থেকে শুরু হয় কাজ, চলে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত। অনেক জায়গায় দেখা যায়।নারীরা মাথায় করে চারা এনে দিচ্ছেন।কিশোর-যুবকরা দল বেঁধে রোপণ করছেন।শিশুরা পাশে খেলছে কাদা-মাটিতে।মাঝেমধ্যে গরুর গাড়ি বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চারা আনা-নেওয়া চলছে।ঘামে ভেজা কৃষকেরা, মাটি ও প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেও হাসিমুখে কাজ করে যান, কারণ তারা জানেন—এই ধানই একদিন হবে পরিবারের আহার।

আমন রোপণের কাজেও নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামের নারীরা চারা তোলা, রোপণ, পানি সরবরাহ, এমনকি জমির তদারকি পর্যন্ত নানা কাজে যুক্ত থাকেন। তাদের শ্রম কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই অনুচ্চারিত থেকে যায়।সরকার প্রতিবছর বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে।উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ,কৃষি উপকরণে ভর্তুকি,কৃষিঋণ ও প্রশিক্ষণ,কৃষি অফিসারদের পরামর্শমূলক কার্যক্রম।তবে এই সহায়তা সঠিকভাবে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানো, সময়মতো প্রাপ্তি নিশ্চিত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

ঘামে ভেজা হাতে কৃষকেরা—মাঠে চলছে আমন ধান রোপণ” এই চিত্র শুধু একটি মৌসুমি কর্মকাণ্ড নয়, এটি হলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডের প্রতিচ্ছবি। এ দেশের প্রতিটি চালের দানায় মিশে আছে একজন কৃষকের ঘাম, শ্রম আর ভালোবাসা। তাই কৃষকদের প্রতি আমাদের সম্মান, সহানুভূতি এবং কার্যকর সহায়তা একান্ত প্রয়োজন।আমাদের উচিত, শুধু মৌসুমে নয়, সারা বছরজুড়েই কৃষকের পাশে থাকা—তবেই গড়ে উঠবে সত্যিকারের খাদ্যনির্ভর, কৃষিনির্ভর এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

আমার আজকের ব্লগটি আমি এখানেই শেষ করলাম।আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে আমার আজকের ব্লগটি । ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক,কমেন্ট করে আমাকে উৎসাহিত করবেন।আজ এই পর্যন্তই।আশা করছি যে আপনারা আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমেই আমার এই লেখাটি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবেন এবং আপনাদের মতামত ব্যক্ত করবেন। আমি যদি কোনো কিছু ভুল বলে থাকি। তাহলে অবশ্যই আমাকে শুধরে দিতে ভুলবেন না।

আমার বাংলা ব্লগের ভাইয়া ও আপুদের সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন ব্লগে।

আল্লাহ্ হাফেজ

ক্যামেরা পরিচিতি

Device	Motorola g34 5g
Camera	52 MP
County	Bangladesh
Location	Rangpur, Bangladesh

আমার নাম মোঃ আবু বকর (সিদ্দিক) ।আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক।আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা।আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর কারমাইকেল কলেজ এর(IHC)ডিপার্টমেন্ট থেকে অনার্স করতেছি।আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। সবথেকে বড় পরিচয় আমি "আমার বাংলা ব্লগ"কমিউনিটির একজন সদস্য।আমি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি।বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে আমার।পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। আমার সব থেকে বড় ইচ্ছা আমি একজন উদ্যোক্তা হব।আমি মনে করি ধৈর্য,পরিশ্রম, বিশ্বস্ততা এগুলো সফল হতে সম্মুখ ভূমিকা পালন করে। ধন্যবাদ।

Vote@bangla.witness as witness

Or

Set@rme as your proxy

আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য সবাইকে অসংখ্য "ধন্যবাদ।