**গল্পের বিষয়: "বন্ধুত্বের সেতু"** গল্পটি শুরু

বন্ধুত্বের সেতু
একটি ছোট্ট গ্রামে ছিল দুই বন্ধু, রাহুল এবং সোহান। তারা একসঙ্গে স্কুলে যেত, খেলা করত এবং একে অপরের সুখ-দুঃখে পাশে থাকত। তাদের বন্ধুত্বের গভীরতা ছিল এমন, যে গ্রামের সবাই তাদের বন্ধুত্বের উদাহরণ দিত।
একদিন, গ্রামের কাছে একটি বড় নদী বয়ে যাচ্ছিল। বর্ষাকালে নদীটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করত এবং তখন পারাপার করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ত। গ্রামের মানুষরা চিন্তিত ছিল, কারণ নদীর অপর পারে ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার, যেখানে তারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে যেত। কিন্তু বর্ষাকালে নদী পার হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ত।
রাহুল এবং সোহান ঠিক করল, তারা একটি সেতু তৈরি করবে যাতে গ্রামের মানুষ সহজে নদী পার হতে পারে। তারা তাদের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করল। প্রথমে তারা কিছু কাঠ সংগ্রহ করল এবং নদীর দুই পারে সেতুর জন্য একটি খসড়া তৈরি করল।
কিন্তু কাজ সহজ ছিল না। সেতু তৈরি করতে তাদের অনেক সময় এবং শ্রম দিতে হচ্ছিল। অনেক সময় তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল, কিন্তু একে অপরকে উৎসাহিত করে তারা কাজ চালিয়ে যেতে লাগল। রাহুল বলল, "সোহান, আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে আমরা সফল হবো।"
একদিন, যখন তারা সেতুর কাজ শেষের দিকে পৌঁছাল, তখন হঠাৎ করে একটি ঝড় বয়ে গেল। প্রবল বৃষ্টিতে নদীর জল বেড়ে গেল এবং সেতুর কাঠগুলো ভেসে যেতে লাগল। রাহুল এবং সোহান হতাশ হয়ে পড়ল। তারা ভাবল, "আমরা কি এত পরিশ্রম করে কিছুই করতে পারলাম না?"
কিন্তু তারা হাল ছাড়ল না। তারা আবার শুরু করল, এবার আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে। তারা গ্রামের লোকজনকে ডাকল, এবং সবাই মিলে কাজ করতে শুরু করল। একসঙ্গে তারা আবার সেতুর কাজ শুরু করল। অবশেষে, দীর্ঘ পরিশ্রমের পর তারা একটি শক্তিশালী সেতু তৈরি করতে সক্ষম হল।
সেতুটি তৈরি হওয়ার পর গ্রামের মানুষরা খুব খুশি হল। তারা সেতুর উপর দিয়ে নিরাপদে নদী পার হতে পারছিল। রাহুল এবং সোহান জানল, তাদের বন্ধুত্বের কারণে এই সেতু তৈরি হয়েছে। তারা বুঝতে পারল, বন্ধুত্ব শুধু দুজনের মধ্যে নয়, বরং একটি সমগ্র সমাজের মধ্যে সেতু তৈরি করতে পারে।
সুতরাং, রাহুল এবং সোহান তাদের বন্ধুত্বের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। তারা জানল, একসঙ্গে কাজ করার শক্তি এবং বন্ধুত্বের মূল্য কখনও কম নয়।
এভাবেই বন্ধুত্বের সেতু গ্রামের মানুষের জীবন বদলে দিল।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.