**গল্পের বিষয়: "বন্ধুত্বের সেতু"** গল্পের কেন্দ্র

বন্ধুত্বের সেতু
প্রলম্বিত প্রাক্কথা
একটি ছোট্ট গ্রামে দুই বন্ধু ছিল—রাহুল এবং সোহেল। তারা একসাথে বড় হয়েছে, একসাথে খেলাধুলা করেছে, এবং একসাথে স্বপ্ন দেখেছে। কিন্তু তাদের মধ্যে একটি বড় সমস্যা ছিল, যা তাদের বন্ধুত্বকে পরীক্ষার মুখোমুখি করেছিল। রাহুল ছিল একেবারে শহরের ছেলে, আর সোহেল গ্রামের। তাদের মধ্যে যোগাযোগের সেতু ছিল কেবল একটি নদী।
নদীর বাধা
নদীটি ছিল গভীর এবং প্রবাহিত। বর্ষাকালে তা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠত। রাহুলের বাবা-মা সোহেলের পরিবারকে খুব একটা পছন্দ করতেন না, কারণ তারা মনে করতেন গ্রামের জীবনযাত্রা শহরের তুলনায় নিম্নমানের। কিন্তু রাহুলের মনে ছিল সোহেলের জন্য একটি বিশেষ স্থান। সে জানত, সোহেল তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
বন্ধুত্বের সংকট
একদিন, রাহুলের বাবা-মা একটি শহরে বড় স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য রাহুলকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। রাহুল খুব দুঃখিত হলো, কারণ সে জানত এর মানে হলো সোহেলের সাথে তার দেখা হবে না। সোহেলও হতাশ হয়ে পড়ল। তারা দুজনেই ভাবতে লাগল, কীভাবে তারা তাদের বন্ধুত্বকে রক্ষা করবে।
সেতুর নির্মাণ
একদিন রাহুল একটি পরিকল্পনা করল। সে সিদ্ধান্ত নিল, সে নদীর উপর একটি সেতু তৈরি করবে। সে জানত, এটি সহজ হবে না, কিন্তু বন্ধুত্বের জন্য সে সব কিছু করতে প্রস্তুত ছিল। সোহেলও তার সাথে যোগ দিল। তারা একসাথে কাঠ সংগ্রহ করল, এবং শুরু করল সেতুর নির্মাণ।
কঠোর পরিশ্রম
দিনের পর দিন তারা কাজ করতে লাগল। কখনো বৃষ্টি, কখনো রোদ—কিন্তু তাদের মনোবল ভাঙল না। গ্রামের লোকেরা তাদের দেখে অবাক হয়ে গেল, কিন্তু তারা তাদের কাজে সাহায্য করতে আগ্রহী হল না। রাহুল ও সোহেল জানত, তাদের বন্ধুত্বের সেতু তাদের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।
সফলতা
অবশেষে, দীর্ঘ মাসের পর তাদের সেতু সম্পূর্ণ হলো। এটি ছিল একটি শক্তিশালী কাঠের সেতু, যা নদীর দুই তীরে তাদের বন্ধুত্বকে সংযুক্ত করেছিল। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরল এবং হাসতে হাসতে সেতুর উপর দিয়ে হাঁটতে শুরু করল।
নতুন সূচনা
রাহুল শহরে চলে গেল, কিন্তু তাদের বন্ধুত্বের সেতু সব বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হলো। তারা নিয়মিত যোগাযোগ করত, ভিডিও কল করত, এবং একে অপরের খবর নিত। সেতুটি শুধু একটি শারীরিক সেতু ছিল না, বরং তাদের হৃদয়ের মধ্যে একটি অটুট বন্ধনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
উপসংহার
বন্ধুত্ব কখনো দূরত্বের বাধা মানে না। সত্যিকারের বন্ধুত্ব সব কিছু অতিক্রম করতে পারে। রাহুল এবং সোহেল প্রমাণ করে দিল যে, বন্ধুত্বের সেতু নির্মাণ করা সম্ভব, যদি দুই পক্ষের মধ্যে ভালোবাসা ও সহযোগিতা থাকে।
এভাবেই বন্ধুত্বের সেতু তাদের জীবনকে পরিবর্তন করে দিল, এবং তারা জানল, বন্ধুত্বের মূল্য কখনো কমে যায় না।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.