**গল্পের বিষয়: "বন্ধুত্বের সেতু"** গল্পের ক

বন্ধুত্বের সেতু
গ্রামের নাম ছিল শান্তিপুর। সেখানে ছিল এক ছোট্ট নদী, যার পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিল দুটি গাছ। একটি গাছ ছিল বিশাল ও পুরনো, অন্যটি ছিল নতুন ও ছোট। পুরনো গাছটির নাম ছিল বট, আর নতুন গাছটির নাম ছিল তুলি।
বট গাছটি ছিল গ্রামের সবার প্রিয়। গ্রামের শিশুরা সেখানে খেলতে আসত, বৃদ্ধরা সেখানে বসে গল্প করতেন। কিন্তু তুলি গাছটি ছিল একা। কেউ তার দিকে চোখ তুলে দেখত না। তুলি একদিন ভাবল, "কেন আমি একা? আমি কি এতটাই ছোট যে কেউ আমাকে দেখতে চায় না?"
একদিন, নদীর পাড়ে বসে ছিল বট গাছ। সে তুলি গাছের দিক থেকে একটি মৃদু বাতাসে বলল, "তুমি কেন এত দুঃখী? তোমার তো অনেক সম্ভাবনা আছে।"
তুলি বলল, "কিন্তু আমি ছোট, কেউ আমাকে দেখতে পায় না।"
বট গাছটি হাসতে হাসতে বলল, "সাইজের ওপর বন্ধুত্ব নির্ভর করে না। বন্ধুত্বের জন্য হৃদয়ের বড়ত্ব প্রয়োজন।"
তুলি তখন ভাবল, "কীভাবে আমি বন্ধুত্ব গড়ে তুলব?" সে সিদ্ধান্ত নিল, সে বট গাছের কাছে যাবে এবং বন্ধুত্বের হাত বাড়াবে।
তুলি বলল, "বট দাদা, আমি আপনার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই।"
বট গাছটি আনন্দিত হয়ে বলল, "অবশ্যই! বন্ধুত্বের জন্য আমি সবসময় প্রস্তুত।"
এভাবে, দুই গাছের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। তারা একে অপরকে সমর্থন করতে লাগল। বট গাছটি তুলিকে শক্তি দিল, আর তুলি বট গাছকে নতুন পাতা ও ফুলের সৌন্দর্য উপহার দিল।
গ্রামের মানুষজন অবাক হয়ে দেখল, কিভাবে দুটি ভিন্ন গাছ একসাথে বেড়ে উঠছে। তারা বুঝতে পারল, বন্ধুত্বের সেতু তৈরি হলে, তা যে কোন বাধাকে অতিক্রম করতে পারে।
একদিন, গ্রামের একটি বড় ঝড় এল। বট গাছটি শক্তিশালী হলেও ঝড়ের তীব্রতায় সে কিছুটা কাত হয়ে গেল। কিন্তু তুলি তখন তার পাশে দাঁড়িয়ে বলল, "দাদা, আমি তোমার পাশে আছি। আমরা একসাথে এই ঝড় কাটিয়ে উঠব।"
তুলির সাহসে বট গাছটি আবার শক্তি পেল। তারা একসাথে ঝড়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াল এবং শেষ পর্যন্ত তারা সফল হল।
ঝড় শেষে, গ্রামের মানুষজন এসে দেখল, বট ও তুলি গাছটি একসাথে দাঁড়িয়ে আছে। তারা বুঝতে পারল, বন্ধুত্বের শক্তি কত বড়।
সেই থেকে, শান্তিপুর গ্রামে বন্ধুত্বের সেতু গড়ে উঠল। মানুষজনও শিখল, বন্ধুত্বের জন্য বয়স বা আকারের কোন বাধা নেই।
এইভাবে, বট ও তুলি গাছের বন্ধুত্ব চিরকাল স্থায়ী হয়ে রইল, এবং তাদের গল্প ছড়িয়ে পড়ল সারা গ্রামে।
শেষ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.