**গল্পের বিষয়: "বন্ধুত্বের সেতু"** গল্পের শুরু

বন্ধুত্বের সেতু
একদা একটি ছোট্ট গ্রামে বাস করত দুই বন্ধু, রনি ও সোহান। তারা ছিল বয়সে সমবয়সী এবং একসাথে স্কুলে পড়ত। রনি ছিল খুবই চঞ্চল ও হাসিখুশি, আর সোহান ছিল একটু গম্ভীর ও চিন্তাশীল। তাদের বন্ধুত্ব ছিল অটুট, কিন্তু তাদের মধ্যে এক বড় পার্থক্য ছিল—রনি ছিল ধনী পরিবারের সন্তান, আর সোহান ছিল গরীব পরিবারের ছেলে।
গ্রামের মাঝখানে একটি পুরনো সেতু ছিল, যা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার একমাত্র পথ। সেতুটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রায়ই বৃষ্টির সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকত। গ্রামের লোকজন প্রায়ই বলত, "যদি এই সেতু ভেঙে যায়, তবে আমাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।"
একদিন, রনি ও সোহান সিদ্ধান্ত নিল তারা সেতুটির সংস্কার করবে। সোহান বলল, "আমরা যদি সবাই মিলে কাজ করি, তবে আমরা এই সেতু ঠিক করতে পারব।" রনির মনে হলো, "কিন্তু আমাদের তো প্রচুর টাকা দরকার।"
সোহান বলল, "টাকা থাকলেই সব কিছু হয় না। আমাদের শ্রম এবং বন্ধুত্বের শক্তি দিয়ে আমরা এটি করতে পারব।" রনি এই কথায় প্রভাবিত হলো এবং তারা কাজ শুরু করল।
গ্রামের অন্যান্য শিশুরা তাদের সঙ্গে যোগ দিল। তারা একসঙ্গে কাজ করতে লাগল, সেতুটির চারপাশ পরিষ্কার করতে এবং নতুন কাঠ সংগ্রহ করতে। রনি তার পরিবারের কিছু টাকা সাহায্য হিসেবে দিল, আর সোহান তার মায়ের কাছ থেকে কিছু পুরনো কাঠ নিয়ে এল।
দিনের পর দিন তারা কাজ করতে থাকল। মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে ছোটখাটো ঝগড়া হতো, কিন্তু তারা জানত যে তাদের লক্ষ্য একটাই—সেতুটি নির্মাণ করা।
অবশেষে, কয়েক সপ্তাহের পর সেতুটি নতুন করে নির্মিত হলো। গ্রামের লোকজন এসে দেখল এবং খুশিতে উল্লাস করতে লাগল। তারা রনি ও সোহানের বন্ধুত্বের প্রশংসা করল এবং তাদেরকে ধন্যবাদ জানাল।
সেতুটি শুধুমাত্র একটি নির্মাণ নয়, বরং এটি রনি এবং সোহানের বন্ধুত্বের একটি প্রতীক হয়ে উঠল। তারা বুঝতে পারল যে, সত্যিকার বন্ধুত্ব শক্তি, সহযোগিতা এবং একে অপরের প্রতি বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে থাকে।
এখন সেতুটি গ্রামের সকলের জন্য একটি নিরাপদ পথ হয়ে উঠেছে, এবং রনি ও সোহানের বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়েছে। তারা জানত, এই বন্ধুত্বের সেতু তাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।
এভাবেই, বন্ধুত্বের সেতু তাদের জীবনে নতুন আলো নিয়ে এল।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.