**গল্পের বিষয়: "বন্ধুত্বের বাঁধন"** গল্পের প

বন্ধুত্বের বাঁধন
একটি ছোট্ট গ্রামের নাম ছিল নীলগঞ্জ। এখানে সবাই একে অপরকে চিনত এবং একসঙ্গে মিলেমিশে থাকত। গ্রামের মধ্যে ছিল দুই বন্ধু, রাহুল ও সোহান। তারা ছিল একে অপরের পরিপূরক। রাহুল ছিল খুব চঞ্চল এবং হাস্যোজ্জ্বল, আর সোহান ছিল শান্ত ও চিন্তাশীল।
একদিন, গ্রামের পুকুরের কাছে তারা খেলছিল। হঠাৎ করে রাহুল পুকুরের দিকে দৌড়ে গেল এবং সোজা পানিতে পড়ে গেল। সোহান দ্রুত সেখানে পৌঁছে গেল এবং রাহুলকে সাহায্য করতে চেষ্টা করল। কিন্তু রাহুল পানিতে ভেসে যাচ্ছিল। সোহান চিন্তা করল, "আমি যদি এখন ভয় পাই, তবে রাহুলকে বাঁচাতে পারব না।"
সোহান সাহস করে পুকুরে ঝাঁপ দিল। সে রাহুলের হাত ধরে টেনে তুলল। অবশেষে, তারা দুজনেই নিরাপদে পাড়ে ফিরে এল। রাহুল ভিজে ভিজে বলল, "তুমি আমার সত্যিকারের বন্ধু, সোহান। তুমি আমার জন্য যা করেছ, তার জন্য আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।"
এরপর থেকে তাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হলো। তারা একসঙ্গে পড়াশোনা করত, খেলাধুলা করত এবং একে অপরের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়াত। গ্রামের সবাই তাদের বন্ধুত্বের উদাহরণ দিত।
কিন্তু একদিন সোহানের বাবা একটি বড় শহরে কাজের জন্য চলে গেলেন। সোহানকে তার বাবার সঙ্গে যেতে হলো। রাহুল খুব দুঃখিত হলো, কিন্তু সে জানত যে সোহানকে তার পরিবারের জন্য কাজ করতে হবে। তারা একে অপরকে প্রতিজ্ঞা করল যে, তারা কখনো একে অপরকে ভুলবে না এবং নিয়মিত চিঠি পাঠাবে।
সোহান শহরে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করল, কিন্তু সে রাহুলকে ভুলতে পারেনি। প্রতিদিন চিঠি লিখে রাহুলের খবর নিত। রাহুলও নিয়মিত চিঠি পাঠাত। তাদের বন্ধুত্বের বাঁধন দিনে দিনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল।
বছর পেরিয়ে গেল। একদিন সোহান গ্রামের মেলার জন্য ফিরে আসল। রাহুল তাকে দেখে খুব খুশি হলো। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরল এবং তাদের বন্ধুত্বের গল্প মনে করে হাসতে লাগল। সোহান বলল, "দূরত্ব আমাদের বন্ধুত্বকে দুর্বল করতে পারেনি।"
গ্রামের সবাই তাদের বন্ধুত্বের উদাহরণ দেখে অনুপ্রাণিত হলো। তারা বুঝতে পারল, সত্যিকারের বন্ধুত্ব কখনো ভেঙে যায় না, বরং এটি সময়ের সাথে আরও শক্তিশালী হয়।
এভাবেই রাহুল ও সোহানের বন্ধুত্বের বাঁধন চিরকাল অটুট রইল।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.