আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়!!
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। তবে জীবনে কি আমরা সবসময় ভালো থাকি বা থাকতে পারি। সেটা কি আদৌ সম্ভব হয় ভালে থাকা। জীবনে খারাপ সময় আসবে, ভালো সময় আসবে। তবে খারাপ সময় আসলেই যে হাল ছেড়ে দিয়ে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিতে হবে তা কিন্তু নয়! মানুষ কখন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়! যখন সে জীবনে তার দুঃখের পাল্লাটা ভীষণ ভারী হয়ে যায়! মনে এ পৃথিবীটা তার জন্য আর নয়। ছেড়ে চলে গেলেই বাচিঁ! কিন্তু আসলে কি তাই! মৃত্যুই কি সবকিছুর সমাধান হতে পারে? কখনোই না! আত্মহত্যার মাধ্যমে নিজেকে শেষ করে দিয়ে কোনো সমাধান হতে পারে না! কারণ আপনার পরিবার পরিজন আছে, আপন মানুষ আছে, আপনার কর্ম আছে। মোস্ট ইম্পর্টেন্ট বিষয় হচ্ছে আপনার একটা জীবন আছে। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে একটা চমৎকার জীবন দিয়েছে। আপনি কেন সেটা নিজ হাতে শেষ করে দিবেন। এ অধিকার কি আপনার আছে!
আত্মহত্যা কোনো কিছুর সমাধান হতে পারে না। আপনার জীবনে যতই দুঃখ কষ্ট থাকুক, যতই পাওয়া-না পাওয়ার হিসাব থাকুক না কেন অতি কষ্টে আপনি নিজেকে শেষ করে দিতে পারে না। আপনার সুন্দর জীবনের জন্য হলেও বেচেঁ থাকতে হবে। বর্তমানে আত্মহত্যার প্রবণতা দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে। স্মার্টফোন আসার পর থেকে সবকিছু এখন হাতের নাগালে। আমরা অ্যালকোহল কে এখন সহজ পানীয় বানিয়ে ফেলেছি, একসাথে তিন চারটা সম্পর্ককে স্মার্টনেস বানিয়ে ফেলেছি। ভালোবাসায় প্রতারণা, মন নিয়ে খেলা করা এখন সহজ বিষয়! কি এক আজব জাতি হয়ে যাচ্ছি আমরা! এজন্য আমাদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতাটাও আস্তে আস্তে বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মাঝে এটা বেশি দেখা যাচ্ছে। তারা আবেগের বশে অনেক কঠিন কাজ করে ফেলছে। অথচ তাদের মাথায় এটা আসে না যে আবেগ দিয়ে সব হয় না। তারা ইমোশন দিয়ে সবকিছু বিচার করে ফেলে। তারজন্য বাস্তবতা টা বুঝতে পারে না।
আত্মহত্যার কারণে অল্প বয়সেই প্রাণ চলে যাচ্ছে। যেটা একটা জঘন্য রকমের পাপ কাজ। সেটাই এখন বেড়ে চলেছে । সেটার কারণ অনেক। আসলে আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব কম দেয় যতটা না শারিরীক স্বাস্থ্যের প্রতি দেয় আমরা। অথচ মানসিকভাবে ভালো না থাকতে পারলে আমাদের কোনো কিছুই যে ঠিক থাকে না সেটার খেয়াল থাকে না! এজন্য মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আমাদের নজর রাখা জরুরি। তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা মাঝে মাঝে আমাদের নাগালের বাহিরে চলে যায়। তখন মনে হয় সবকিছু অন্ধকার! তবে আমাদের মনে রাখা জরুরি! জীবন একটাই! আর এক জীবনে অনেক কিছুই হবে। তবুও আমাদের ধৈর্য্যের সাথে অপেক্ষা করতে হবে। মনে রাখতে হবে খারাপ সময়ের পরেই ভালো সময় আসে। কেননা রাতের পরেই তো দিনের দেখা পাওয়া যায়।
আপনাদের সাথে একটা ঘটনা শেয়ার করি মানবিক সেবায় নিয়োজিত ছিল হেভেন নামের একটি ছেলে। পেশায় সে একজন চাকরিজীবি। অসহায় দরিদ্রদের জন্য সে অনেক কাজ করেছে। হোসেনপুরে তার অনেক সুনাম এটা নিয়ে। কিন্তু পারিবারিক জীবনে সে ভালো নেই। একটার পর একটা সমস্যা যেন লেগেই ছিল। তার বিবাহিত জীবনে কোনো শান্তি ছিল না। দুদিন পর পর বউয়ের সাথে ঝগড়া হতো। আর সেখানে বাহাত ডুকাতো বউয়ের মা। হেভেনের একটা ছেলেও ছিল। কিন্তু তাদের সংসারে আগুন লাগালো বইয়ের মা! তাদের মেয়েকে আর দিবে না। অযত্মে রাখে। ব্যাপারটা সিরিয়াস পর্যায়ে চলে যায়। বউয়ের পরিবার চাই ডিভোর্স হয়ে যাক। এটা মেনে নিতে না পেরে হেভেন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তারপর সোস্যল মিডিয়ায় দেয়া পোস্ট দেখে হেভেনের বন্ধুরা এগিয়ে আসে। তারপর হেভেন সেখান থেকে ফিরে আসে!
এই যে ঘটনাটা ঘটলো, মানুষ কতটা অসহনীয় হয়ে গেলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়! তবে সকলের চেষ্টা কিন্তু ফেরানোও সম্ভব! আমরা অনেক সময় খারাপ সময়ে সঙ্গ দেয় না! কিন্তু তখন আপনার ছোট্র একটি কথা অনেক গুুরুত্বপূর্ণ! আপনার কথার মাধ্যমে হয়তো সে কিছুটা হলেও স্বস্তি বোধ করতে পারে। দিনশেষে,আত্মহত্যা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বরং জীবনটাকে উপভোগ করাই বুদ্ধিৃমানের কাজ।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
আত্মহত্যা সত্যি অনেক ভয়ংকর। জীবনে দুঃখ কষ্ট কিংবা হতাশা থাকবে। তাই বলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া মোটেও উচিত নয়। সবকিছুর সমাধান কখনো আত্মহত্যা হতে পারে না।
একদম ভাই। আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়