আসুন আবার দেশকে সবুজ করে গড়ে তুলি।
কয়েকদিন আগে একটি খবর দেখতে গিয়ে হঠাৎ করে একটি খবরে চোখ আটকে গেলো। বিস্তারিতভাবে খবরটি পড়তে গিয়ে দেখলাম ঢাকার ধানমন্ডিতে পুরনো কিছু গাছ কেটে শহরের সৌন্দর্য বর্ধন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর সেখানকার স্থানীয় পরিবেশ সচেতন লোকজনেরা তাতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছেন। খবরটি দেখে আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছি। এই বছর এখন পর্যন্ত রেকর্ড পরিমাণ গরম পড়েছে। এই গরমে মানুষের প্রাণ বের হওয়ার দশা। সেখানে সরকারের উচিত ছিল পুরো দেশে ব্যাপকভাবে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন করা। সেটা না করে শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের নামে ঢাকা শহরে সামান্য যে সবুজের ছোঁয়া অবশিষ্ট আছে সেটাও কেটে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কি সাংঘাতিক রকমের অবিবেচক আমাদের কর্তা ব্যক্তিরা। আসলে তাদের তো খুব একটা সমস্যা নেই। কারণ তারা যে বাড়িতে থাকে সেখানে এসি আছে। যে গাড়িতে চলে সেখানেও এসি। আবার যে অফিসে বসে অফিস করে সেখানেও এসি আছে । যার ফলে তাদেরকে কখনোই প্রচন্ড এই তাপদাহের সম্মুখীন হতে হয় না। সেই কারণে তারা সাধারণ মানুষের কষ্ট বোঝেনা। আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাই। যেখানে আমার মত সাধারন একজন মানুষও বুঝতে পারছে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাদের কি করা উচিত। কিন্তু সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের সেটা নিয়ে কোনই মাথাব্যথা নেই। তারা সবাই নিজেদের চেয়ার বাঁচাতে ব্যস্ত।
দেশ বা দেশের মানুষজন জাহান্নামে যাক। তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না। আর তারা দেশের কথা চিন্তা করবেই বা কেন? কারন তাদের সকলেরই তো বিদেশে সেকেন্ড হোম থার্ড হোম রয়েছে। তাদের সকলের বাচ্চা-কাচ্চারা দেশের বাইরে সেটেলড। যার ফলে এই দেশ ধ্বংস হয়ে গেলেও তাদের কিছু যায় আসে না। দেশে বড় কোনো সমস্যা দেখা দিলে তারা এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষের তো যাওয়ার কোন জায়গা নেই। আমাদের এখানেই থাকতে হবে। সেই জন্য এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমাদেরকেই উদ্যমী হতে হবে। আমাদের যার যার জায়গা থেকে সবাইকে পরিবেশ ধ্বংসকারী কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কিভাবে দেশে আবার সবুজ বিপ্লব ঘটানো যায় সে ব্যাপারে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।
এ কাজ শুধু কারো একার না। এ কাজ দেশের প্রত্যেকটা জনগণের। প্রত্যেকটা সাধারণ মানুষের। একবার চিন্তা করে দেখুন আমাদের দেশে ১৭ কোটি মানুষ। এর অর্ধেকও প্রাপ্তবয়স্ক হয় তাহলে হবে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ। এক একজন মানুষ যদি মাত্র পাঁচটা করে গাছ লাগায় তাহলে এক বছরে ৪০ কোটি গাছ এই দেশে লাগানো সম্ভব। এবং এই ধারা যদি আগামী পাঁচ বছর চলতে থাকে তাহলে আগামী পাঁচ বছরে আমাদের দেশে ২০০ কোটি গাছ লাগানো সম্ভব। এই অবস্থা যে শুধু আমাদের দেশে তা নয়। আশেপাশের প্রায় সব দেশেরই একই অবস্থা। এই কারণে সবারই উচিত বৃক্ষরোপনের উপর বেশি করে গুরুত্ব দেয়া।
আমার মনে আছে কয়েক বছর আগে উপকূলীয় কোন এক এলাকায় একদিনে কয়েক লক্ষ গাছ লাগানো হয়েছিল সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে। অবশ্য সেখানে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা মূল ভূমিকা পালন করেছিল। কোন এক প্রবল ঝড়ের কারণে সেই উপকূলীয় এলাকার গাছপালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই ক্ষতি পোষানোর জন্যই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। সেই উদ্যোগের সুফল আজ সেখানকার লোকজন পাচ্ছে। এখান থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে পুরো দেশে একটি সবুজ বিপ্লব গড়ে তুলতে হবে। আর এই বিপ্লব শুরু করার জন্য আমাদের সকলকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে প্রতিবছর এই গরমের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। একসময় সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে উঠবে দুর্বিসহ।
এ বছর প্রচন্ড তাপদাহের সময় যখনই বাইরে বের হয়েছি। তখনই শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের কষ্ট দেখে নিজের কাছেই খারাপ লেগেছে। বিশেষ করে যে সমস্ত মানুষজন যাদেরকে এই প্রচন্ড রৌদ্রের ভেতরেও বাইরে থাকতে হয়। সেটা বিভিন্ন কোম্পানির সেলসম্যান থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালা দিনমজুর সব পেশার লোকজনই। এই প্রচন্ড গরমে কি অমানুষিক কষ্ট টাই না তাদের করতে হয়েছে। তাদের এই কষ্ট দেখে মনে হয়েছে আসলেই কিছু করা দরকার। আমি নিজে খুব একটা বিক্ষ প্রেমি নই। কিন্তু তারপরেও এবারের গরম দেখে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্তত দুটি গাছ হলেও আমি লাগাবো। নিজে লাগাতে না পারলেও আমার গ্রামের বাড়িতে কয়েকটি গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করব। আমার আজকের এই পোষ্ট পড়ে যদি একজন মানুষও অনুপ্রাণিত হয় তাহলেই আমার প্রচেষ্টা সার্থক হবে। তবে আমার সকলের কাছে বিশেষ অনুরোধ থাকবে আপনারা যারা এই পোস্টটি পড়বেন। তারা নিজে যেখানেই পারেন অন্তত কয়েকটি গাছ লাগাবেন। আর আপনাদের পরিচিত বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন যারা আছেন তাদের সকলকে গাছ লাগানোর ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করবেন। তাদেরকে এমনভাবে বোঝাবেন যাতে তারাও যার যার অবস্থান থেকে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন করে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ভাই। পরিবেশকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে গাছ রোপণ করতে হবে। বর্তমানে মানুষ নিজেদের স্বার্থের জন্য যেভাবে গাছ নিধন করছে তাতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। এক শ্রেণীর লোক যারা নিজেদের সুবিধা ভোগের জন্য এই ধরনের কর্মকাণ্ড সাথে জড়িত সত্যি হতাশাজনক।
গাছ লাগাই পরিবেশ বাচাই। পরিবেশ বান্ধব অনুপ্রেরণা মূলক পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ঢাকায় আজ বিগত ৩৪ বছরের মধ্যে মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে। দিন দিন পৃথিবী গরম হচ্ছে।এ অবস্থায় ধানমন্ডির গাছ কাটার সিদ্ধান্ত আত্নঘাতি।কতৃপক্ষ্যের এমন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। আসুন সবাই একটি করে হলেও গাছ লাগাই।আমাদের পৃথিবীকে আমরা বাচাই।শুভ কামনা আপনার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া, এ বছরে আপনার দু'টি গাছ লাগানোর সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। আমরা যদি প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থান থেকে বছরে একটি অথবা দুটি করে গাছ লাগাই তাহলে হয়তো আমাদের পৃথিবীর আবহাওয়াটা পরিবর্তন হলেও হতে পারে। ভাইয়া আপনার এই পোস্টটি পড়ে অনেকেই আমাদের পরিবেশকে বাঁচানোর লক্ষ্যে গাছ লাগাতে উৎসাহিত হবে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য।