লাইফস্টাইল: আড্ডা।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
বাঙ্গালী আড্ডা প্রিয় জাতি। আড্ডা পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, ব্যতিক্রম দু-একজন বাদে। মনের অবসাদ কাটাতে আড্ডা দারুণ কার্যকর। কাজ করতে করতে ক্লান্তি এসে গেলে কলিগের সাথেও আমরা আড্ডা দেই। বন্ধুদের সাথে আড্ডা তার তুলনা হয় না। অনেকেই বলে থাকেন যার কাজ নেই তারা আড্ডা দেয়! কিন্তু কাজের গতি আনতে আড্ডার প্রয়োজন আছে। তবে অলস যারা তাদের বিষয় টি আলাদা। আড্ডা বিভিন্ন ধরণের হতে পারে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক। বন্ধুদের সাথে আড্ডা,সমমনাদের সাথে আড্ডা,পরিচিত -অপরিচিত মানুষের সাথে এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে আড্ডা। হ্যাঁ বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের জন্য, আমার আজকের লাইফস্টাইল ব্লগ আড্ডা।
আড্ডার স্বর্ণ সময় বলা চলে ছাত্রজীবন। নোটিশ বিহীন রাত দিনের সেই আড্ডা! আহা! সেই গুলি খুব মনে পড়ে। বন্ধুরা সব কর্মব্যস্ত। একেক জন একেক জায়গায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্য হাই-হ্যালো হয়। বছরে একবার দু'বার আড্ডা জমে। জীবন থেমে থাকে না। চলার পথে প্রতিদিনেই কারো না কারো সাথে কথা হয়! পরিচয় হয়। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সাথেও আড্ডা হয়। হোক সে কলিগ,ক্লায়েন্ট বা প্রতিবেশি। পরিচিত গন্ডির আড্ডা থেকে অনেক ক্রিয়েটিভ আইডিয়াও বের হয়ে আসে। এসব আড্ডা থেকে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে যায় বিপদগ্রস্তদের পাশে। সমমনাদের আড্ডা থেকে অনেক ভালো কিছুর সৃষ্টি হয়। যা মানুষের উপকারে আসে। অবশ্য বন্ধু বান্ধবদের সাথে অনলাইন আড্ডাও এখন বেশ জনপ্রিয়।
তবে সব আড্ডা ছাপিয়ে রাস্তার ধারের,পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানের আড্ডা বেশ প্রাণবন্ত। সময় ও বিভিন্ন কারণে এসব চায়ের দোকানের আড্ডায় কম যাওয়া হলেও আমাকে খুব টানে। এসব আড্ডায় পরিচিতজন না থাকলেও চলে।কথা না বলেও দারুণ উপভোগ করা যায়। সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠে এসব আড্ডায়। রাজনীতি, বাজারদর, ধর্ম,চুরি-ডাকাতি,ভাইরাল ঘটনা,এলাকার খবর,গুজবের ডালপালা সবেই পাবেন, এসব চায়ের দোকানের আড্ডায়। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ চলার পথে একটু জিরিয়ে নিতে,কারো জন্য অপেক্ষা করতে,চা-বিড়ি খেতে খেতে এসব আড্ডায় মনের অজান্তে যুক্ত হয়ে যায়। সবাই সবার অভিমত বিনা বাঁধায়-নির্ভয়ে, অকপটে প্রকাশ করে। পক্ষ বিপক্ষ দারুণ জমে উঠে। ভালোই লাগে আমার এধরণের অনানুষ্ঠানিক আড্ডা!
গত সপ্তাহ খানেক আগে এক চায়ের দোকানে ডুকেছি। হিরো আলন থেকে ডাকসু ভোট, আগামি সংসদ নির্বাচন, ইউনুস সরকার,নিত্যপণ্যের দাম বিভিন্ন বিষয়ে তাদের আলোচনা শুনলাম, হু-হ্যাঁ র মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে দারুণ একটা সময় উপভোগ করলাম। সেই চায়ের দোকানে ছিল অধিকাংশই নিম্ন আয়ের মানুষ। তারাই দেশের সং্খ্যা গরিষ্ঠ। তাদের কথা শোনার কেই নেই! তাদের কথা আমাদের রাষ্ট্র শুনতে পায়না! দেয়ালের কান আছে, এটা সত্য হয়ে রাষ্ট্র যদি এই মানুষ গুলোর কথা শুনতে পেত, তাগলে দেশটার বড় উপকার হত। জয়তু আড্ডা।
ধন্যবাদ।
ঢাকা-বাংলাদেশ।