জীবনের গল্প || সময়ের যত পার্থক্য

in আমার বাংলা ব্লগ6 hours ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। তবে প্রকৃতির ভিন্ন রূপের কারণে মাঝে মাঝে হৃদয়ের অস্থিরতা চেপে রাখতে পারছি না। কারণ গতকালও সারাদিন বাড়িতে বন্দি ছিলাম। অবশ্য সকালের দিকে আকাশ কিছুটা সুন্দর ও উজ্জ্বল ছিলো। কিন্তু সময় বাড়ার সাথে সাথে প্রকৃতির অবস্থা পাল্টে যেতে শুরু করে, তারপর হুটহাট করেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টিপাত। এটা সত্যি খুব সুখকর ছিলো না আমার জন্য, ছুটির দিনগুলোতে সারাদিন বাড়িতে বসে থাকা মানেই হৃদয়ের অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়া।

অবশ্য এই একই অবস্থায় ভিন্ন অনুভূতি ছিলো আমাদের আর সেই সময়টা ছিলো শৈশবকাল। একটু চিন্তা করে দেখুন, বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা কতটা দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছি, আমাদের মানসিকতা কতটা নিদারুণভাবে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। অবশ্য এর অনেকগুলো কারণ আছে, সেটা নিয়ে অন্য সময় বলবো। তবে আজকে বৃষ্টিপাতের সেই অনুভূতি নিয়ে কথা শেয়ার করবো। আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন মনে মনে বৃষ্টিপাতের কামনা করতাম, কারণ বৃষ্টিপাত হলেই সারাদিন বাড়িতে থাকতে হতো, আর সেই সুযোগে স্কুল কিংবা প্রাইভেট পড়া দুটোই মিস যেতো।

hike-2701926_1280.jpg

তখন অবশ্য মোবাইল কিংবা ডিসের এতো বেশী প্রসরতা ছিলো না। তাই একটু বেশী বৃষ্টিপাত মানেই বাড়িতে থাকা, তার সাথে ভাইবোনদের সাথে মিলে নানা ধরনের খেলার আয়োজন করা। হৈ হুল্লোল করার সাথে সাথে ভিন্ন স্বাদের কিছু উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া। হ্যা, তখন বাড়িতেই নানা ধরণের স্বাদের আয়োজন হতো, বৃষ্টিপাতের সময় যখন আমরা বাড়িতে থাকতাম। বাবা-মা ও চিন্তা করতো শিশুদের জন্য ভিন্ন স্বাদের কিছু তৈরী করা প্রয়োজন। না, তখন নুডুলস এর মতো এমন স্মার্ট খাবার ছিলো না। কোন কিছু না থাকলে আটা এবং গুড় অথবা চিনি গুলিয়ে তেলের পিঠা তৈরী করা হতো।

যদি সেটাও না করতো তাহলে আটার সাথে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ এবং হালকা হলুদ দিয়ে পাতলা চাপটি বানানো হতে, সেটা কিন্তু পিঠার মতোই দারুণ স্বাদের হতো। এগুলো আসলে খুব বেশী দামী খাবার না কিন্তু তবুও মা’র হাতের যত্নের কারণে দারুণ স্বাদের কিছু হয়ে যেতো। আমরা তখন বর্তমান প্রজন্মের মতো এভাবে উচ্চবাচ্য করতাম না, এটা খাবো না ওটা খাবো, এমন মানসিকতা ছিলো না আমাদের। আমাদের যা তৈরী করে দেয়া হতো আমরা সবাই সেটা বেশ আগ্রহ নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতাম। সত্যি তখন ছোট থাকলেও বৃষ্টিপাত হলে দারুণ খুশি হতাম।

এক যেমন ভাইবোনদের নিয়ে দারুণ সকল খেলা খেলার সুযোগ পেতাম, এর মাঝে অন্যতম একটা ছিলো চারজন মিলে কাগজ দিয়ে চোর পুলিশ খেলা, চারসেট থাকতো চার নামে, যারটা আগে মিলে যেতো সে বিজয়ী হতো। দারুণ মজা করতাম এসব খেলা নিয়ে। আর সাথে থাকতো বাড়িতে তৈরী, মা’র ভালোবাসা ভিন্ন ধরণের খাবার। আর এখন বৃষ্টিপাত হওয়া মানেই বাড়িতে বন্দি জীবন, হৃদয়ের মাঝে অস্থিরতা তৈরী হওয়া, যার যার অবস্থানে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকা, পাশাপাশি থাকা সত্বেও কোন বন্ধুত্ব নেই, নেই কোন হৈ হুল্লোল কিংবা আনন্দ। বাস্তবতা, সময়ের সাথে সাথে কতটা পাল্টে গেছি আমরা।

Image Taken From Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

@hafizullah, what a beautifully nostalgic post! I absolutely loved reading about your childhood memories associated with rainy days. Your description of the simple joys – the paper games with siblings, the special treats your mother made, and the pure happiness of missing school – truly resonated with me. It's a stark contrast to how we often perceive rainy days now, isn't it? This post really highlights how much our perspectives change as we grow older. Thank you for sharing these heartwarming reflections! It definitely made me smile and think about my own childhood experiences. I'm eager to hear more about the reasons behind these changes in perspective, as you mentioned. Looking forward to your next post!