আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ফ্রাইডে স্পেশাল ]

in আমার বাংলা ব্লগlast month

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং বেশ চাপে আছি। এই চাপটা মাঝে মাঝে আমাকে ভীষণভাবে চেপে ধরেন, মনে হয় এই বুঝি চ্যাপ্টা হয়ে গেলাম। আসলে কিছু বিষয় থাকে আমাদের জীবনে যা থেকে আমরা কখনোই মুক্তি পাই না কিংবা সেখান হতে বিরেয়ে আসতে পারি না, যার কারণে কারণে ক্রমাগত সেটার যন্ত্রণা আমাদের নিদারুণভাবে বিষিয়ে তোলে, একটা সময় পর আমরা সেটা নিয়ে অস্থির হয়ে যাই। বাস্তবতা বিষয়টি এমনই, যেখানে সমস্যা হবে সেটা বার বার যন্ত্রণা দিবে।

যাইহোক, জীবনের মানেই এটা, সমস্যাগুলোর মাঝেই সমাধাণ খুঁজতে হবে, সমস্যার মাঝেই আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ তৈরী করতে হবে। এখন অবশ্য একটু আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ তৈরী হয়েছে আর সেটা হয়েছে কোরবানীর ঈদের পশুর হাটকে কেন্দ্র করে। এবার আগ হতেই কোরবানীর নিয়ত করেছিলাম, যার কারণে চাপটাও তখন হতে বড় বড় হতে শুরু করে। যেহেতু পকেটের ওজন খুবই কম ছিলো সেহেতু চাপের মাত্রাটাও ভীষণ রকমের ছিলো। বুঝতেই পারছেন আমাদের মধ্যবিত্তদের শখের বিষয়গুলো অনেকটাই এভাবে একটা বাড়তি চাপ তৈরী করে দেয়।

people-4212598_1280.jpg

তবে এর মাঝেও মজার বিষয় হলো গতকাল হাটে গিয়েছিলাম এবং একটু একটু পর পর হুট করে দৌড় দিতে হয়েছিলো। যেখানেই দাঁড়াই হঠাৎ করেই আওয়াজ সরেন সরেন গরু আসতেছে, মুহুর্তের মাঝে সেই জায়গা ফাঁকা। না সেগুলো একটাও ফাঁকা আওয়াজ ছিলো না, যার কারণে ভয়টাও বেড়ে গিয়েছিলো। আর যেহেতু কয়েক দিন ধরেই টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেহেতু মাটির অবস্থাও খুব একটা তাজা মানে শুস্ক ছিলো না। ফলশ্রুতিতে দৌড় দেয়ার আগে এদিকে সেদিক চিন্তা করার সুযোগ থাকে না, অনেকেই কাদাকে আপন করে নিয়েছিলেন নিজের অজান্তেই।

আমার ছেলেও গিয়েছিলো আমার সাথে পশুর হাটে, ধপাস করেই সব কিছুর কালার চেঞ্জ করে ফেলেছিলেন। মানে কাদায় পড়ে পুরো শরীর মাখিয়ে ফেলেছিলেন, তার সাথে আমাকে এবং আরো এক ভদ্রলোককে মাখিয়ে দিয়েছিলেন। বেচারা ভদ্রলোক মুখখানা একদম কালো করে ফেলেছিলেন কিন্তু নেহায়েত ছোট ছেলে বলে কিছু বলতে পারেন নাই, পুরো ঘটনাই হজম করে সেখান হতে চলে গিয়েছিলেন। আমাকেও বেশ মাখিয়ে দিয়েছিলেন। আসলে কাদাময় পরিবেশ ছিলো তাই প্রতিটি পা বেশ সযত্নে ফেলতে হয়েছিলো। কিন্তু যখন পিছন হতে আওয়াজ আসতো গরু আসছে তখন আর যত্ন টত্ন থাকতো না হি হি হি।

এবারের হাটে বেশ সংখ্যক পুশ ছিলো কিন্তু মানুষের উপস্থিতি তেমন ছিলো না, কারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। সবার মাঝেই আমার মতো একটা স্পষ্ট চাপ ছিলো। অনেকের চোখে মুখে সেটা বেশ ভেসে উঠেছিলো। কারণ ভীষণ রকমের একটা ক্লান্তিকাল পার করতে হচ্ছে আমাদের দেশকে, মানুষ এখনো বেশ চিন্তিত আগামীর নির্বাচন নিয়ে, কতটা স্বাভাবিক হবে এই দেশ সেটাকে নিয়েও। যাইহোক, জীবনের বিষয়গুলো অনেকটাই এমন কাকতালীয়ভাবে একটা সাথে আরেকটা সংযোগ তৈরী হয়ে যায়, আর সেই কারণেই হয়তো জীবন গতিশীল থাকে।

Image Taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আসসালামু আলাইকুম @hafizullah,

আপনার কোরবানীর পশুর হাট নিয়ে লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো! মধ্যবিত্তের জীবনে ঈদের আনন্দ যে বাড়তি চাপ নিয়ে আসে, সেই বাস্তবতার চমৎকার চিত্র আপনি তুলে ধরেছেন। গরুর হাটের দৌড়াদৌড়ি আর কাদায় মাখামাখির ঘটনাগুলো বেশ মজার ছিল। বিশেষ করে আপনার ছেলের কাদায় পড়ে যাওয়া এবং অন্যদেরকেও মাখিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি পড়ে আমি হেসেছি।

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কোরবানীর হাটে মানুষের কম উপস্থিতি এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মুখগুলোর কথা উল্লেখ করে আপনি সমাজের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। আপনার লেখার মধ্যে জীবনের আনন্দ এবং কঠিন বাস্তবতা একাকার হয়ে আছে, যা পাঠকের মন ছুঁয়ে যায়।

আপনার чувствоগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। এমন বাস্তবধর্মী লেখা আরও চাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো!