জীবনের গল্প || বৃষ্টির যত আনন্দ

in আমার বাংলা ব্লগ2 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। হৃদয়ের চঞ্চলতা নিয়ে বৃষ্টির সুন্দর মুহুর্তগুলো দারুণভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। যেহেতু গতকাল সরকারী সাধারণ ছুটি ছিলো সেহেতু সারাদিনই বাড়িতে ছিলাম। আর গতকাল প্রায় সারাদিনই একটু পর পর মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছিলো। আমি আর আমার ছোট মেয়ে জানালার পাশে বসে বৃষ্টির সুন্দর মুহুর্তটা একত্রে উপভোগ করেছিলাম। এটা অনেক বেশী মিষ্টি হয় যদি আপনার বাড়িতে টিনের চাল থাকে, তাহলে দারুণ শব্দ শুনা যায়।

বৃষ্টির আসল মজাটা কিন্তু এখানেই, টিনের চাল থাকলে কখন বৃষ্টিপাত হচ্ছে, কতটা বেশী হচ্ছে তা আপনি নিমিষেই বুঝে নিতে পারবেন বৃষ্টির সেই শব্দগুলো শুনেই। আজকাল আমরা তো তেমন একটা বৃষ্টি উপভোগ করতে পারি না, কারণ আমরা থাকি চারদেয়ালের মাঝে আর তাই বৃষ্টির কোন শব্দও শুনতে পারি না। কখন বৃষ্টিপাত শুরু হলো আর কখন যে শেষ হলো? বাড়ি হতে বাহিরে বের না হলে বুঝাই মুশকিল। সত্যি বলছি একটু খেয়াল করে দেখিয়েন, বিল্ডিং এর মাঝে থাকলে বাহিরে কোন শব্দ এবং বৃষ্টিপাত কিছুই বুঝা যায় না। কারণ বৃষ্টির যে শব্দ সেটা শুনতে হলে বাহিরে কিংবা টিনের চাল থাকা চাই।

rain-84648_1280.jpg

আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন কিন্তু এতো বেশী পরিমানে বিল্ডিং ছিলো না, বিশেষ করে এলাকাগুলোতে শুরু হতে একদম শেষ মাথা পর্যন্ত হাতেগুনা দুই একটা বাড়ি পাওয়া যেতো, যাদের বাড়িতে ছাদ ছিলো টিনের পরিবর্তে। তারা হয় কোন বড় রাজনৈতিক নেতা ছিলো কিংবা বড় সরকারী কোন অফিসার ছিলো। এছাড়া অন্যদের পক্ষে এমন বাড়ি তৈরী করা বেশ কঠিন ছিলো। তবে হ্যা, সরকারী আবাসন প্রকল্প কিংবা আবাসিক এলাকাগুলোর বাড়িগুলো থাকতো তিনতলা বিশিষ্ট বিল্ডিং, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু পাড়া বা মহল্লাগুলোর অবস্থা ছিলো ঠিক উপরের মতো।

আমরা যে এলাকায় থাকতাম, সেখানে বেশ কিছু সরকারী বাসভবন ছিলো কিন্তু সেগুলোও টিনের চালের ছিলো। অথাৎ বিষয়টি বুঝতেই পারছেন তখন বিল্ডিং করার কালচারটা একদমই ছিলো না। যার কারণে মানুষের মন বা হৃদয়গুলো বিল্ডিং মতো এতো কঠিন ছিলো না, তাদের মনে মায়া মমতা অটুঁট ছিলো। তাই তারা খুব দ্রুত মানুষের মন বুঝে নিতে পারতেন এবং মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন। মানবতার বিষয়টি তখনও প্রচলিত ছিলো, এতো অহংকার কিংবা গরিমা ছিলো না কারোর মাঝে। সবাই সবাইকে ছোট ভাবতেন এবং স্বাভাবিক ব্যবহার করতেন।

কিন্তু ধীরে ধীরে সব বদলে যেতে থাকে, মানুষের টাকা পয়সা বাড়তে থাকে এবং তারপর আত্ম অহমিকা কিংবা গরিমা দেখানোর জন্য টিনের চালের পরিবর্তে ছাদ ঢালাই দেয়া শুরু করে, চারপাশে বিল্ডিং এর অস্থিত্ব বাড়তে শুরু করে। এর সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে মানুষের অহংকার, কঠিন হতে শুরু করে মানুষের মন। বিল্ডিং এর নিচে থাকতে থাকতে তাদের হৃদয়টাও বিল্ডিং এর মতো কঠিন হয়ে যায়, মায়া কিংবা মমতা বিলুপ হতে শুরু করে। আফসোস! আমরা নানাভাবে উপরে উঠেছি কিন্তু হৃদয়কে আগের অবস্থানে ধরে রাখতে পারি নাই।

Image Taken From Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

@hafizullah, your post beautifully captures the nostalgia and simple joys of childhood, especially the unique experience of enjoying rain with a tin roof! The way you've contrasted that with the modern, disconnected feeling of living in buildings truly resonated with me. It's a poignant observation about how our surroundings can subtly impact our hearts and relationships.

The image you selected perfectly complements your words, evoking a sense of peace and reflection. Thank you for sharing this thoughtful piece, it's a wonderful reminder to appreciate the small things and to stay connected to our roots. I am sure many of our readers would relate to your writing. What are your thoughts on modern vs old?