জীবনের গল্প || সেকাল আর একালের পার্থক্য

in আমার বাংলা ব্লগ15 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। তবে মাঝে মাঝে হৃদয়ের অনুভূতিগুলোকে সুস্থ রাখতে পারছি না, কারণ চারপাশের নানা ঘটনা এবং দৃশ্যাবলী হঠাৎ করেই অনুভূতিগুলোকে পরিবর্তন করে দেয়, অনুভূতির কালারকে রংহীন করে দেয়। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই, আমাদের সমাজ ব্যবস্থার মাঝে দারুণ করমের একটা অবক্ষয় ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। হ্যা, অবক্ষয়টা অনেক আগ হতেই শুরু হয়েছে কিন্তু বর্তমানে সেটা বেশ খারাপ অবস্থানে পৌঁছে গেছে।

যদিও যাদের এটা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন তারা সেটা করছেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। দেখুন সহজ একটা উদাহরণ দিচ্ছি, সমাজের নানা ঘটনা কিংবা বাস্তব উদাহরণ নিয়ে আমাদের আমাদের সমাজে যেমন মঞ্চ নাটক হতো ঠিক তেমনি সেই সকল ঘটনাকে পূঁজি করে টিভি সিরিয়াল কিংবা সিনেমাও তৈরী হতো। তাদের লক্ষ্য থাকতো একটাই সমাজের মানুষদের সচেতন করা এবং বিষয়গুলোকে অবহিত করা। যাতে নতুন প্রজন্ম সেগুলো হতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং বিষযগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সেখান হতে ফিরে আসতে কিংবা দূরে থাকতে পারে।

person-4733756_1280.jpg

মঞ্চ নাটক কিংবা যাত্রাপালা তখন খুবই জনপ্রিয় ছিলো, চলমান বিষয়গুলো হতে যেগুলো একটু বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিলো সেগুলোকে উপজীব্য করে নাটক তৈরী করা হতো, তারপর সমাজের গন্য মান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে দারুণভাবে উপস্থাপন করা হতো। সেগুলো যেমন মানুষ দেখতো, তারপর দীর্ঘ একটা সময় পর্যন্ত সেগুলোকে নিয়ে আলোচনা কিংবা সমালোচনা চলতো। কারণ যতটা বেশী সময় ধরে সেটা রাখতে সক্ষম মতো মানুষজন, ততো বেশী সময় ধরে সেটার প্রভাব থাকতো সমাজের মাঝে। আর এখন, যাত্রা কিংবা মঞ্চ নাটক তো নেই কিন্তু যে সকল বিষয় নিয়ে টিভি নাটক কিংবা সিনেমা হচ্ছে, সেগুলো আমাদের কি শিক্ষা দেয়?

আজকাল তো সামাজিক অনুষ্ঠান বলতে কিছুই নেই, মাঝে মাঝে দুই একটা তৈরী হলেও সেখানে দর্শকদের উপস্থিতি নেই কারণ সেগুলো দেখার আগ্রহ নেই কারো। একটা নির্মম পরিবর্তন এসেছে আমাদের মাঝে, সামাজিকতার বিষয়টি এখন আর আমাদের মাঝে ভেসে উঠে না বরং স্বার্থের বিষয়টি নিদারুণভাবে স্পষ্ট থাকে। আগে গুণীজনরা সমাজ নিয়ে চিন্তা করতেন, সমাজের মাঝে থাকা সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করতেন এবং সেগুলোর সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতেন। এখনো গুণীজনরা আছেন কিন্তু তারা সেই মানের কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে।

তারা চিন্তা করেন এবং সমাধানও খুঁজেন তবে সেটা আগামী প্রজন্ম নিয়ে নয় বরং বর্তমান সময় নিয়ে এবং তাদের ব্যবসা নিয়ে। যার দৃষ্টান্ত বর্তমান সময়ের টিভি সিরিয়াল এবং রঙিন ও চকচকে সিনেমা, যেখানে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একত্রে বসে উপভোগ করার কিছুই থাকে না। বরং মাঝে মাঝে একা দেখলেও নিদারুণ একটা অস্বস্তি কাজ করতে শুরু করে দেয়। মাঝে মাঝে সত্যি ভীষণ আফসোস হয়, কেমন ছিলো আমাদের সেকাল আর কেমন হলো আমাদের একাল!

Image Taken From Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বাহ @hafizullah, আপনার আজকের লেখাটি খুবই সময়োপযোগী! সমাজের অবক্ষয় এবং এর প্রতিকারে অতীতের সংস্কৃতি ও নাটকের ভূমিকার কথা আপনি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। বর্তমানের বিনোদন মাধ্যমগুলো যে কিভাবে আমাদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে, তা স্পষ্ট।

আপনার লেখার গভীরতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আপনি ঠিকই বলেছেন, এখনকার বিনোদন মাধ্যমগুলোতে সেই শিক্ষা ও সামাজিক বার্তা নেই বললেই চলে। আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করি।

আপনার এই মূল্যবান চিন্তাগুলো অন্যদের সাথেও শেয়ার করুন। মন্তব্যের মাধ্যমে আপনার ভাবনাগুলো আরও বিস্তারিতভাবে জানতে আগ্রহী থাকলাম। ধন্যবাদ!