জীবনের গল্প || বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ছায়া

in আমার বাংলা ব্লগyesterday

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। আসলে সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় একটা নেয়ামত, যদিও আমরা সেটা সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারি না এবং সেই সুযোগটাও যথার্থভাবে কাজে লাগাতে পারি না। কারণ আমাদের বিশ্বাসের উপর ধুলো জমে গেছে, আমরা বিশ্বাসের উপর দৃঢ় থাকতে পারছি না। আজকালতো মানুষ আপন মানুষগুলোকেও বিশ্বাস করতে পারছে না, অবিশ্বাসের একটা আবহ সর্বদা হৃদয়ে চঞ্চল থাকছে। যার পরিনতি অবশ্য আমরা বেশ নিদারুণভাবে টের পাচ্ছি।

কিন্তু কি বলেন তো? আমরা মানুষ, অনেক কিছুই খুব দ্রুত বুঝতে পারি আবার অনেক কিছু শত চেষ্টা করেও সেটা বুঝতে পারি না। আমাদের মানসিকতা এমন হয়ে গেছে যে, যেটা আমি বুঝেছি সেটা ভুল হলেও সেখান হতে আর বের হয়ে আসতে চাই না, আবার যেটা আমি বুঝতে পারি নাই সবাই যতই চেষ্টা করুক না কেন সেটা বুঝার চেষ্টা করতেও আমি প্রস্তুত নই। এই যে একটা অন্যরকম মানসিকতা, এটা আমাদের ধীরে ধীরে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, আমাদের কাছের মানুষগুলোকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে, আমাদের সুন্দর সম্পর্কগুলোকে ভঙ্গুর করে দিচ্ছে।

sunrise-6759987_1280.jpg

একটা কথা আছে আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝতে পারিনা, কিন্তু যখন সেটা নষ্ট হয়ে যায় তখন আমরা নিদারুণভাবে উপলব্ধি করতে পারি সেটা কতটা কার্যকর জিনিষ ছিলো আমাদের জন্য। বিশ্বাস বিষয়টি সত্যি অনেকটাই সেই রকম, এটা তৈরী করতে অনেক সময় ও পরিশ্রম করতে হয় আমাদের, শত প্রমান হাজির করতে হয় এর জন্য। কিন্তু অবিশ্বাসটা খুব দ্রুত তৈরী হয়ে যায় আমাদের মাঝে, আস্থাটা খুব দ্রুত নষ্ট করে ফেলি আমরা। তারপর অবশ্য যথারীতি আমরা আফসোস করতে থাকি। কিন্তু অবিশ্বাসের বিষযটি এতোটা নির্মম যে সেখান হতে আর ফিরে আসা সম্ভব হয় না।

হ্যা, এমন অসংখ্য বিষয় আমাদের সামনে থাকতে পারে, বা চারপাশের মানুষগুলো তৈরী করতে পারে কিন্তু তাই বলে যেখানে বিশ্বাস ও সম্পর্ক পাশাপাশি আছে সেখানে খুব দ্রুত এমন অবিশ্বাসের জায়গা আমরা কিভাবে তৈরী করি। প্রসঙ্গক্রমে আরো একটা কথা মনে পড়ে গেলো, আমরা হুটহাট করে রাগ প্রকাশ করে ফেলি তারপর কিছু একটা বলে ফেলি। কিন্তু পরবর্তীতে রাগ ঠান্ডা হলে বুঝতে পারি কতটা বড় ভুল আমরা করেছি। ঝড় থামার পরেই কেবল বুঝা যায় সেটার ক্ষতিটা কতটা ভয়াভহ ছিলো, সেটার আঘাতটা কতটা নির্মম ছিলো। কিন্তু ততোক্ষণে আমাদের হাতে আর কোন সুযোগ থাকে না।

আমাদের জীবনের বিষযগুলো অনেকটাই তেমন, অনেক বিষয় বা ধ্রুবক এখানে ক্রিয়াশীল থাকে, একটা সাথে আরেকটার দারুণ সংযোগও থাকে, তাই হুটহার করে কিছু করার পূর্বে আমাদের একটু সময় নিতে হবে, রাগের মাথায় কিছু বলা হতে বিরত থাকতে হবে, বিশ্বাসের দেয়ালে আঘাত হানে এমন কিছু হতে একটু বেশী সচেতন থাকতে হবে। বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মাঝের দূরত্ব যেন কোনভাবে হ্রাস না পায় সেই বিষয়ে আরো বেশী যত্নশীল হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। গ্লাস একবার ভেঙ্গে গেলে সেটাকে আর আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব হয় না, বিশ্বাস অনেকটাই সেই রকম জিনিষ।

Image Taken From Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  
 4 hours ago 

বর্তমান সময়ে বিশ্বাস শব্দটা যেন বিলুপ্তির পথে।সেখানে বাসা বেঁধেছে অবিশ্বাস আর রাগ।রাগ মানুষের হাতের বাইরে চলে গিয়ে ঘটিয়ে ফেলছে অনেক অঘটন।সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ভাইয়া, ভালো লাগলো পড়ে।ধন্যবাদ আপনাকে।