কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। যেখানে গ্রামে এক ভ্রাম্যমান গুড় বিক্রেতার কাছ থেকে গুড় ও চিড়া কেনার অনুভূতি ব্যক্ত করব। আশা করি আমার এই কেনাকাটার অনুভূতির মধ্য দিয়ে বেশ অনেক কিছু আপনারা জানতে পারবেন।

photography device: Infinix Hot 11s
হঠাৎ রাস্তায় মাইকের শব্দ। একজন গুড় বিক্রেতা তার ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে আখের গুড় বিক্রয় করে বেড়াচ্ছেন। সাথে চিড়ে আর সবজি রয়েছে। কিছুদিন ধরে বাড়িতে বলা হচ্ছিল আখের গুড় কেনার কথা। কারণ কিছুদিন আগে আমাদের বাড়িতে আমাদের ডাক্তার ভাইয়া আমির হামজা এসেছিলেন। উনারকে বেলের শরবত বানিয়ে দেয়ার মুহূর্তে বলেছিলেন চিনি দিয়ে না তৈরি করে, যদি গুড় থাকে তাহলে গুড় দিয়ে তৈরি করে দিতে পারলে ভালো হয়। তখন প্রশ্ন করেছিলাম কেন চিনি কি দোষ করল? ডাক্তার ভাইয়া বলেছিলেন চিনির চেয়ে গুড় শরবতের জন্য বেটার। এই প্রচন্ড গরমের মুহূর্তে চিনি না খাওয়াটাই আরো বেটার। কাঁচা চিনির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঐদিন গুড় অল্প ছিল শরবত গলাতে ফুরিয়ে গেছিল। এই কয়দিন রাস্তার দিকে লক্ষ্য করে রয়েছি গুড় বিক্রেতা গেলে গুড় নেব। ঠিক যখন আম গাছের নিচে বসে শীতল বাশ তাসের আশায়, ওই মুহূর্তে রাস্তা দিয়ে গুড় বিক্রেতা হাক ছাড়ছিলেন। উনাকে ডাকা হল। আমাদের বাড়ির রাস্তায় আসলেন।


আমরা উনার কাছে গুড়ের দাম জানতে চাইলাম। উনি বললেন ১০০ কোটি টাকা কেজি। এদিকে চিড়ার দাম জানতে চাইলাম। বললেন ৭০ টাকা কেজি। আমরা উভয় কিছু ভালো করে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। প্রথমে গুড় দেখলাম ভালো-মন্দ যাচাই করলাম। গুড় বিক্রেতা বললেন আমার এই গুড় আপনারা খেয়ে দেখুন। তবে আমাদের বাড়িতে দীর্ঘদিন আখ মাড়ায় করে গুড় তৈরি করা হতো, তাই এ বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। ভালো করে দেখেই বুঝে গেলাম ভালো হবে।


এরপর বাড়িতে চলে গেলাম এবং একটি বয়ম নিয়ে আসলাম। আমি প্রথমে মনে করেছিলাম ডিজিটাল স্কেল রয়েছে ওনার কাছে। কারণ এখন সকল বিক্রেতারা ডিজিটাল স্কেল ব্যবহার করে। তারপর দেখলাম উনার হাতে হাত দাড়ি। বললাম হাত দারিতে মাপ ঠিক হবে তো। উনি বললেন আমার এইভাবে কোন কমতি হবে না বরঞ্চ একটু বেশি যেতে পারে। আমার কাছে মেপে নেওয়ার পর আপনারা ডিজিটাল স্কেলে মেপে দেখবেন। এরপর অনেক সুন্দর একটি গল্প বললেন। কিছুদিন আগে আমার খালাদের গ্রাম মহব্বতপুর এর এক গুড় বিক্রেতা গল্প। সে বিক্রেতা নাকি ৫ কেজি গুড়ের জায়গায় ডিজিটাল স্কেলে ভুয়া ভাবে মেপে সাড়ে চার কেজি দিয়েছিলেন। এটা ধরা পড়ার পর পাবলিকে তাকে অনেক মার মেরেছে।

উনি বললেন আমি সততা নিয়ে চলি সব সময়। আপনারা আমার কাছ থেকে মেপে নেওয়ার পর ভালো করে চেক করতে পারেন। উনার কথাবার্তা শুনে খুবই ভালো লাগছিল। এরপর কথার ফাঁকে ফাঁকে উনি গুড় মেপে দেখালেন। ১ কেজি গুড় মেপে নিলাম। এরপর উনি আমাদের চিড়া দেখালেন। দেখলাম বেশ দেখতে ভালো এবং মুখে দিয়ে দেখলাম তিতি লাগবে না। তাই হাফ কেজি চিড়া দিতে বললাম।

এরপর উনি চিড়া মেপে দিলেন। কোথা থেকে কিনেছেন,কখন বাড়ি থেকে বের হয়েছেন, কতদিন ধরে ব্যবসা করছেন এই সমস্ত বিষয়ে অনেক কিছু বললেন। কিছুটা ওনার কথা শুনলাম এরপর ১৫৫ টাকা পরিশোধ করে দিলাম। এরপর নতুন এই গুড় দিয়ে বাড়ির গাছপাকা বেলের শরবত তৈরি করা হয়ে গেল। এরপর আমাদের পরিবারের অনেকে একসাথে প্রচন্ড এই গরমে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার জন্য, আরাম করে গুড় দিয়ে বেলের শরবত তৈরি করে খেলাম।



সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।

অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত আপনি শেয়ার করলেন আপু। এই গরমের দিনে গুড়ের শরবত বেশ ভালোই লাগে। যেহেতু আপনি বেলের শরবত খাবেন তাই গুড় কিনলেন। আর গুড় গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো আপু একদম ফ্রেশ দেখতে। আর বেলের শরবতে গুড় দিলে খেতে খুব ভালো লাগে ঠান্ডা ঠান্ডা একটা ভাব চলে আসে। আপনি অনেক গুলো গুড় কিনে নিলেন। অনেক ভালো লাগলো মুহূর্তটি আপনি শেয়ার করলেন।
হ্যাঁ বেলের সাথে শরবত বেশি ভালো লাগে
প্রথমেই বেলের শরবত খাওয়ার জন্য গুড় কেনার মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু। এই অতিরিক্ত তাপদাহ থেকে বাঁচতে হলে আমাদের প্রচুর পরিমাণে শরবত বা লেবু পানি খাওয়া উচিত।তবে শরবতে চিনিটা আমাদের শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। তাই বেশ ভালো করেছেন গুড় কিনে।
আপনি ঠিক বলেছেন আপু