লাইফ স্টাইল পোস্ট- প্রিয়জনদের সাথে বাহিরে খেতে যাওয়ার অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি লাইফ স্টাইল পোস্ট নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার লাইফ স্টাইল পোস্ট দেখে আসি কেমন হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর যখন পরিবার নিয়ে কোথাও বাইরে খেতে যাওয়ার সুযোগ আসে, তখন সেটি যেন একটি ছোটখাটো উৎসবের মতোই মনে হয়। কাজের ব্যস্ততা, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার একঘেয়েমি, এবং সময়ের অভাবে বাহিরে খাওয়ার মতো মুহূর্তগুলো ক্রমেই কমে এসেছে। তবে মানুষ মাত্রেই মাঝে মাঝে একটু স্বাদ পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। আর সেই চাহিদা মেটাতেই আমরা সেদিন রাতে বের হয়েছিলাম – গন্তব্য ছিল খিলগাঁও তালতলার একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট, যার নাম Sub Lover’s।

সেদিন ছিল এক সাধারণ বৃহস্পতিবার। দিনটা ছিল কাজকর্মে ভরা, কিন্তু সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই ইচ্ছা হলো – আজ বাইরে খাওয়া যাক। আমি, আমার তিন বোন ও ভাইয়া আর আপু – সবাই বেশ অনেকদিন বাহিরে একসাথে সময় কাটাইনি। তো আমিই প্রস্তাব দিলাম, আর সবাই এক কথায় রাজি হয়ে গেল। জায়গা নিয়ে কিছুক্ষণ আলোচনা চললো। কেউ বললো ডিএনসিসি ফুড কোর্ট, কেউ চায়না টাউন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা ঠিক করলাম – চলো, Sub Lover’s-এ যাই। শুনেছি, খাবারের মান ভালো, পরিবেশও পারিবারিক।

খিলগাঁও তালতলার ট্রাফিক অনেক সময়ই বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে, কিন্তু আমাদের ভাগ্য ভালো ছিল। সন্ধ্যা ৮টার দিকে আমরা রেস্টুরেন্টে পৌঁছাই। বাইরের সাজসজ্জা ছিল সাধারণ, তবে ভিতরে ঢুকেই বুঝলাম – জায়গাটা ছোট হলেও সুন্দরভাবে গুছানো, পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন। ভিতরে হালকা বাদামী আলো, কিছু মনোমুগ্ধকর দেওয়ালের পোস্টার, আর শান্ত সুরের মিউজিক – সব মিলিয়ে পরিবেশটি বেশ আরামদায়ক লেগেছিল। মেনু হাতে নিয়ে আমরা কিছুক্ষণ চিন্তায় পড়ে গেলাম – কারণ খাবারের তালিকা বেশ বৈচিত্র্যময়। তবে শেষে আমরা একটি প্যাকেজ অর্ডার করলাম যাতে ছিল: ফ্রাইড রাইস উইথ চিকেন,চিলি চিকেন, কেসোনাট সালাদ এবং কোকাকোলা – প্রতিটি আইটেমের সাথে ঠান্ডা কোলা পরিবেশিত হয়েছিল। সবকিছু মিলে প্যাকেজের মূল্য ছিল প্রায় ২০০০ টাকা, যা পাঁচজন মানুষের জন্য যথেষ্ট বলা চলে। প্রতিটি পদ পরিবেশন করা হয়েছিল গরম ও সুন্দরভাবে সাজানো অবস্থায়।

সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে বিষয়টি – সেটি হলো পরিবেশ ও সময়ের ব্যবস্থাপনা। আমাদের আশেপাশে কিছু ছোট পরিবার ও কিছু তরুণ গ্রুপ বসে খাচ্ছিল। রেস্টুরেন্টটি মোটামুটি শান্ত ছিল, যার ফলে একে অপরের সঙ্গে মন খুলে কথা বলা যাচ্ছিল। আমি ও আমার বোনেরা মিলে পুরোনো স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেছিলাম – কার কোথায় প্রেম ছিল, কার কোন কলেজে রেজাল্ট খারাপ এসেছিল – হাসি আর গল্পে সন্ধ্যাটা অন্যরকম হয়ে উঠলো। খাবার এতটাই বেশি হয়েছিল যে আমরা শেষ পর্যন্ত দুটো পার্সেল নিয়ে ফিরি – একটিতে ফ্রাইড রাইস, আরেকটিতে চিলি চিকেন। বাড়িতে এসে সেগুলো আমার ছোট ভাই খেয়ে দারুণ প্রশংসা করলো। এতে বোঝা গেল, খাবারের মান শুধু রেস্টুরেন্টেই নয়, প্যাকেজেও ভালো থাকে।

২০০০ টাকার বিনিময়ে এমন অভিজ্ঞতা সত্যিই প্রশংসনীয়। পাঁচজন মানুষ পরিপূর্ণভাবে খেয়ে, তৃপ্ত হয়ে, কিছু পার্সেল নিয়েও ফিরেছে – এটা এখনকার দিনে খুব কম রেস্টুরেন্টেই পাওয়া যায়। আর Sub Lover’s-এ আমরা কোনো প্রকার অতিরিক্ত চার্জ বা সার্ভিস ফি দেইনি, যা আমাকে বেশ সন্তুষ্ট করেছে। সার্ভিস স্টাফদের কথা আলাদা করে বলতে হয়। তারা ছিল ভদ্র, সময়মতো খাবার পরিবেশন করেছে এবং কোনো বাড়তি ঝামেলা ছিল না। টেবিল পরিষ্কার ছিল, ওয়াশরুমও ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় ছিল – যা মধ্যম মানের রেস্টুরেন্টে অনেক সময় অনুপস্থিত থাকে।

আমাদের রেটিং যদি দিতে হয়, আমি Sub Lover’s-কে ১০-এ ৮ দিবো। খাবারের স্বাদ, পরিবেশ, সার্ভিস – সবকিছু মিলিয়ে এটি খিলগাঁওয়ের একটি নির্ভরযোগ্য পারিবারিক রেস্টুরেন্ট বলেই মনে হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে বাইরে খাওয়ার মজাটা আলাদা। শুধু খাবারের স্বাদ নয়, বরং এই মুহূর্তগুলো জীবনের স্মৃতির পাতায় জায়গা করে নেয়। Sub Lover’s আমাদের এমনই এক সন্ধ্যার সাক্ষী করেছে – যা বহুদিন মনে থাকবে। আপনারাও যদি এমন এক সন্ধ্যার পরিকল্পনা করেন, খিলগাঁওয়ের Sub Lover’s-এ একবার ঘুরে আসতেই পারেন। হয়ত আপনিও ফিরে আসবেন তৃপ্ত হৃদয়ে, একটি স্মৃতিময় গল্প নিয়ে।

কেমন হয়েছে আজ আমার লাইফ স্টাইল পোস্টটি। আশা করছি আপনাদের সবার কাছে আমার পোস্টটি পড়েও অনেক ভালো লেগেছে। সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন সে পর্যন্ত আগামীতে আবার নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে চলে আসবো ইনশাল্লাহ। আল্লাহ হাফেজ।

You have been supported by the team:
Curated by: @adeljose
প্রিয়জনদের সাথে বাহিরে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে দারুণ অনুভূতি শেয়ার করেছেন। আসলে মাঝে মধ্যে বাহিরে খাওয়া দাওয়া করা দরকার। তা না হলে একগুঁয়েমি চলে আসে। সবকিছু ঠিক ঠাক ছিল। ধন্যবাদ।
প্রিয়জনের সাথে দারুন সময় অতিবাহিত করেছেন আপু। মাঝে মাঝে বাহিরে গিয়ে সময় কাটাতে এবং খাওয়া-দাওয়া করতে ভালোই লাগে। খাবার গুলো খুবই লোভনীয় লাগছে।