[লাইফ স্টাইল পোস্ট]:- মাছের বাজারে হট্টগোল

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

মাছের বাজারে মাছ কিনতে গিয়ে আমার একটা দুর্দান্ত কাহিনী আছে। ছোটবেলা থেকেই মাছের বাজারে যাওয়ার প্রতি আমার প্রচন্ড অনিহা ছিল। তার পিছনে প্রধান যে কারণ সেটা হলো সেটা হলো মাছের বাজারের প্রচণ্ড পরিমাণ দুর্গন্ধ বা আষ্টে গন্ধ যেটা আমি একেবারেই সহ্য করতে পারি না। তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই মাছ আমার খুব বেশি একটা পছন্দ নয়। তারপরেও একবার শখ করে ছোটবেলায় বাবার সাথে গিয়েছিলাম মাছের বাজার মাছ কিনতে। আপনারা তো সকলেই জানেন যে মাছের বাজারের ভিতরে কি রকম দুর্গন্ধ থাকে। যাই হোক বাজারের ভিতরে গিয়ে প্রথম ধাক্কাটা খেলাম পচা সামুদ্রিক মাছের গন্ধে। যদিও তখন সেই ধকল টা সামলে নিলেও ভিতরে ঢুকে আরও দশ মিনিট থাকার ফলে এতটা অস্বস্তি লাগছিল যে রীতিমতো বমি করে দিলাম। এরপর আমাকে ওখান থেকে সেই অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে যে আমি কত দিন মাছ খাইনি সেটার হিসাব না হয় নাই বললাম। তবে ওই সময় থেকে আর কখনো মাছের বাজারে যাওয়া হয়নি। তবে পরিস্থিতি মানুষকে অনেকটাই পরিবর্তন করে। সেই জন্য বর্তমানে যেখানে থাকি এখানে এসে আমাকে প্রায়ই মাছের বাজারে যেতে হয়। তাই অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। তবে তারপরও এখন বেশ খারাপ লাগে মাঝেমধ্যে।


InShot_20231226_100239675.jpg


আপনারা তো অনেকেই জানেন যে আমি বেশ কিছুদিন হল আমার বৌদির সাথে বেহালা এসেছি। যেহেতু বৌদি ডাক্তার দেখাতে এসেছেন এবং এখানে প্রায় ১৫ দিনের মতো থাকবেন তাই আমাকে বৌদির দেখাশোনা করতে হচ্ছে। এদিকে আমার নিজের পড়াশুনো তারপর আবার নিজের যাবতীয় কাজ সব শেষ করে তারপর আবার বৌদিকে সময় দিতে হচ্ছে আর বাজার ঘাট যাবতীয় যা কিছু আছে সব কিছুই আমাকে করতে হচ্ছে। তবে এখানে এসে মাছের বাজারে গিয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হলো সেটা আমাদের বারাসাতে হয়নি কখনো। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই কিছু না খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম গতকাল মাছের বাজারে মাছ কিনতে। যেহেতু নতুন জায়গা তাই কোন কিছু চিনি না এদিকে কোথায় যাব কার কাছে জিজ্ঞাসা করবে এটাও বুঝতে পারছি না। তারপরও আশেপাশের কয়জন মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করে ঠিক জায়গাটা চিনে নিলাম। এরপর একটা ভ্যান ধরে চলে গেলাম সেই গন্তব্যে। সত্যি কথা বলতে এখানে পৌঁছে যে ব্যাপারটা আমার চোখে পড়লো সেটা হলো এখানকার পরিবেশ। বলতে গেলে অনেকটা রাস্তার পাশে সবাই মাছ নিয়ে বসেছে এবং যথেষ্ট খোলা জায়গা।


20231225_173450.jpg


20231225_173556.jpg


এখানে তাজা মাছ খুব বেশি একটা পাওয়া যায় না দেখলাম। যা আছে সব বরফের মাছ এবং কিছু কিছু রয়েছে সামুদ্রিক মাছ। মোটামুটি বেশ কিছু জায়গা ঘোরাঘুরি করে বুঝতে পারছিলাম না যে কোন মাছ নেব। এদিকে বৌদিকে সামুদ্রিক মাছ খাওয়ানো যাবে না তাই শুধুমাত্র মিষ্টি জলের মাছ নিতে হবে। আর কাঁটাওয়ালা মাছ নেওয়া যাবে না যেহেতু বেছে খেতে সমস্যা হয়। তাই বড় মাছ ই নিতে হবে। বৌদি বাড়ি থেকে কিছু কিছু ইনস্ট্রাকশন দিয়েছিল, হয় কাতলা মাছ না হয় রুই মাছ। যদিও কাতলা মাছটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তাও একবার বৌদির কাছে ফোন করে কনফার্ম হয়ে নিলাম। বেশ কিছু দোকান ঘোরাঘুরি করে একটা মাছ এ বেশ চোখ আটকে গেল, সেটা হল তেলাপিয়া মাছ। এর আগে আমি কখনো এত বড় তেলাপিয়া মাছ দেখিনি। তারপর আবার কিছু কিছু সামুদ্রিক মাছ ছিল যেগুলো আমি আগে কখনো দেখিনি। তবে সেগুলোর নাম শুনে আমার কাছে একটু অদ্ভুত এবং ইউনিক মনে হল। তবে একটা জিনিস আশ্চর্য লাগল যে এই মাছের বাজারে তেমন কোনো বিশেষ দুর্গন্ধ নেই। মোটামুটি বেশ ভালই, হয়তোবা খোলা বাজার হওয়ার কারণে দুর্গন্ধটা খুব বেশি একটা না।


20231225_173536.jpg


20231225_173532.jpg


তবে দেখলাম এখানে মাছের দাম অনেক বেশি আমাদের ওইখান থেকে। কাতলা মাছ খুব সম্ভবত ৪০০ টাকা করে কেজি চেয়েছিল এবং রুই মাছ ৩৬০ টাকা। তাছাড়াও তেলাপিয়া মাছ আমাদের ওখানে যেটা ১৬০ টাকা এখানে দেখলাম ২২০ টাকা। তবে এটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়নি। কারণ যেহেতু হসপিটাল এরিয়া এবং বাইরের লোকের আনাগোনা অনেক বেশি এজন্য হয়তো তারা দামটা বাড়িয়ে রেখেছে। কারণ লোক অবশ্যই এখান থেকে কিনে খাবে কোন উপায় নেই তাই ছাড়া। যাই হোক আমি আধা কেজির মত কাতলা মাছ নিয়ে নিলাম এবং কিছু টেংরা মাছ নিয়ে নিলাম। যদিও বৌদি চেয়েছিল যে যদি জ্যান্ত শিং মাছ পাওয়া যায় তাহলে সেটা নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এখানে সেরকম কিছু দেখতে পারলাম না। সত্যি কথা বলতে বাজারের ভেতর মনে হয় আধা ঘন্টার মত ছিলাম তবে আমার কোন ধরনের অস্বস্তি হয়নি, যেটা একটা আশ্চর্যের বিষয়। তারপর এখান থেকে বেরিয়ে আরো টুকটাক যে বাজার ছিল সেগুলো করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যদিও রাস্তার মধ্যে আরো একটা ঘটনা ঘটেছিল সেটা না হয় অন্য কোন একটা পর্বে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।


20231225_173529.jpg


20231225_173526.jpg


পোস্ট বিবরণলাইফ স্টাইল
ফটোগ্রাফার@pujaghosh
ডিভাইসrealme 8i

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 years ago 

আসলেই মাছ বাজারে ঢুকলে আমিও উয়াক,উয়াক করি যা লজ্জিত হতে হয় আমাকে কারণ অনেকে ভাবতে পারে বাপরে বাপ ভাব কতো।কিন্তুু সত্যি আমার গন্ধ সহ্য হয় না।আপনার মাছ বাজারে ছোটবেলায় বাবার সাথে গিয়ে বমি হয়ে গিয়েছিল। আর এবার গন্ধ পাননি এরকম আমি একটি মাছ বাজার দেখেছি যে সব সময় জল ঝড়নার মতো বহমান রেখেছে পাইপ দিয়ে তাই একফোঁটা ও গন্ধ ছিলো না।আপনার মাছের সবগুলো ফটোগ্রাফি খুব সুন্দর লাগছে।মাছ গুলো তরতাজা দেখাচ্ছে।

 2 years ago 

হ্যাঁ আপু, সবগুলো মাছ প্রায় তরতাজা ছিল দেখছিলাম বাজারের। আর সামান্য একটু গন্ধ তো মাছ বাজারে থাকবে তাছাড়া বেশি একটা দুর্গন্ধ এই বাজারটিতে ছিল না।

 2 years ago 

মাছের বাজার মানেই হট্টগোলের জায়গা। দীর্ঘদিন মাছের আরত গুলোতে চলাচল রয়েছে যার জন্য এগুলো আমার কাছে বেশ কমন বিষয়। তবে খুব সুন্দর সুন্দর মাছের ফটোগ্রাফি করেছেন দেখছি যেখানে বিভিন্ন পর্যায়ের মাছ রয়েছে। তবে সুযোগ পেলে অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছের দাম বেশি বলে থাকে।

 2 years ago 

মাছের ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আশা করি দিদি ভালো আছেন? সত্যি মাছ বাজারে সব সময় হট্টগোলের হইচই লেগেই থাকে। মাছের বেশ চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি দেখে ভালো লাগলো। ইলিশ মাছ এবং রুই মাছ আমার বেশ প্রিয়। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

আমারও ইলিশ মাছ খুব প্রিয় ভাই। তবে রুই মাছ মোটামুটি ভালো লাগে। পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।