আজ চন্দ্রগ্রহণ ।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
মানবসভ্যতা গড়ে ওঠার প্রথম থেকেই চাঁদ নিয়ে মানুষের আগ্রহ ও কৌতূহল অপরিসীম। কখনও পূর্ণিমার আলো রোমাঞ্চ জাগায়, আবার কখনও আকাশের মাঝখানে চাঁদের রঙ লালচে হয়ে গেলে মানুষের মনে রহস্য আর ভয়ের ছায়া নামে। সেই ঘটনাকেই আমরা বলি চন্দ্রগ্রহণ। প্রকৃতপক্ষে এটি কোনো অশুভ ঘটনা নয় বরং একদম স্বাভাবিক ও মহাজাগতিক নিয়মের ফলাফল।
চন্দ্রগ্রহণ কীভাবে হয়?
চন্দ্রগ্রহণ ঘটে তখনই, যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে চলে আসে এবং পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়ে। সূর্যের আলো চাঁদে পৌঁছাতে না পারায় চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অন্ধকার হয়ে যায়। পৃথিবীর ছায়ার দুটি অংশ থাকে
পেনুম্ব্রা (আংশিক ছায়া)- এই অংশে আলো পুরোপুরি আটকে থাকে না, ফলে চাঁদের উজ্জ্বলতা সামান্য কমে যায়।
আম্ব্রা (পূর্ণ ছায়া)- এই অংশে সূর্যের আলো সম্পূর্ণরূপে বাধাপ্রাপ্ত হয়। চাঁদ সম্পূর্ণ অন্ধকারাচ্ছন্ন দেখায়, অনেক সময় লালচে আভা ধারণ করে, যাকে “ব্লাড মুন” বলা হয়।
বছরে কয়বার চন্দ্রগ্রহণ হয়?
এক বছরে সাধারণত দুই থেকে চারটি চন্দ্রগ্রহণ হতে পারে। এর মধ্যে কিছু পূর্ণগ্রাস, কিছু আংশিক, আবার কিছু পেনুম্ব্রাল বা খুব হালকা, চোখে ধরা পড়ে না। সব চন্দ্রগ্রহণ পৃথিবীর সর্বত্র দৃশ্যমান হয় না। নির্দিষ্ট অঞ্চল, রাতের সময় ও আকাশ পরিষ্কার থাকলেই দেখা সম্ভব।
কেন চাঁদ লাল হয়ে যায়?
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সূর্যের আলো ছেঁকে লালাভ আলো চাঁদের দিকে ছড়িয়ে দেয়। এই আলো সরাসরি নয়, ছড়িয়ে আসা সূর্যালোক। তাই পূর্ণগ্রাস গ্রহণের সময় চাঁদ লাল, বাদামি বা কমলা রঙের দেখা যায়। এ কারণেই একে অনেকে “ব্লাড মুন” বলে।
চন্দ্রগ্রহণের সময়ে কী করবেন, কী করবেন না
অনেক সংস্কৃতিতে চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে বিভিন্ন বিশ্বাস প্রচলিত। আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে চন্দ্রগ্রহণ ক্ষতিকর নয়। তবু কিছু প্রথা ও স্বাস্থ্যবিধি অনেকেই মেনে চলেন।
যা করা যেতে পারে:
আকাশ পর্যবেক্ষণ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের চর্চা।
ছবি ও ভিডিও ধারণ, শিক্ষামূলক কার্যক্রমে ব্যবহার।
পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে আকাশের এই বিরল সৌন্দর্য উপভোগ।
যা না করাই ভালো
গর্ভবতী নারীদের অতিরিক্ত ভয় পাওয়া বা কুসংস্কারে জড়ানো।
খালি চোখে সূর্যগ্রহণ দেখলে চোখের ক্ষতি হতে পারে, তবে চন্দ্রগ্রহণ খালি চোখে দেখায় কোনো ক্ষতি নেই এই তথ্য পরিষ্কার রাখা উচিত।
ভিত্তিহীন ভীতি ছড়িয়ে দেওয়া বা অতিরঞ্জিত ধারণা তৈরি করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
চন্দ্রগ্রহণের সামাজিক ও ঐতিহাসিক প্রভাব
প্রাচীনকালে চন্দ্রগ্রহণকে দেবতাদের রোষ, অশুভ সংকেত, কিংবা যুদ্ধ-বিপদের পূর্বাভাস হিসেবে দেখা হতো। অনেক সভ্যতা যুদ্ধ বন্ধ রাখতো, কেউ কেউ প্রার্থনায় মগ্ন হতো, আবার কেউ ভয়ে ঘরে তালা দিতো। সময়ের সাথে জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে চন্দ্রগ্রহণ একদম স্বাভাবিক ও পূর্বাভাসযোগ্য মহাজাগতিক ঘটনা।
চন্দ্রগ্রহণ মানুষের কৌতূহল, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। এটি ভয় পাওয়ার কিছু নয়, বরং এক বিরল সৌন্দর্যের মুহূর্ত যা মানুষকে আকাশের রহস্যময় জগতের আরও কাছে নিয়ে যায়। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের এই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ তাই শুধু একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা নয়, বরং জ্ঞান, আনন্দ ও মহাজাগতিক বিস্ময়ের উৎসব।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server