সবুজ মালতা বাগানে হেঁটে যাওয়া এক নিঃশব্দ আনন্দের অনুভূতি।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে সবুজ মালতা বাগানে হেঁটে যাওয়া এক নিঃশব্দ আনন্দের পথে অনুভূতি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

বাংলাদেশের প্রকৃতির আঁচলে লুকিয়ে আছে কত না রঙের গল্প, কত না জীবনের শ্বাসপ্রশ্বাস। ঠিক তেমনি এক নিঃশব্দ অথচ গভীর প্রশান্তির জায়গা হলো মালতা বাগান। চারপাশে ছড়িয়ে থাকা সবুজ গাছের সারি, পাতার ফাঁকে লুকিয়ে থাকা টসটসে সবুজ মালতা, আর নরম রোদের আলতো ছোঁয়া । সব মিলিয়ে যেন এক জীবন্ত কবিতার অনুভব এনে দেয়। এই অভিজ্ঞতা কেবল চোখ দিয়ে দেখা নয়, বরং মন দিয়ে অনুভব করার মতো।বহুদিন ধরে বাংলাদেশে কমলা জাতীয় ফল বলতে বুঝানো হতো রাঙা বা হালকা হলুদ রঙের ফলকেই। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে কৃষির জগতে এসেছে নতুন ধারা। আজ থেকে এক দশক আগেও বাংলাদেশে সবুজ মালতার চাষ প্রায় ছিল না বললেই চলে। অথচ বর্তমানে দেশের অনেক অঞ্চলে, বিশেষত পাহাড়ি এলাকা ও উঁচু ভূমিতে সবুজ রঙের মালতা গাছের চাষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

এই পরিবর্তনের পেছনে আছে কৃষি বিজ্ঞানীদের গবেষণা, চাষিদের আগ্রহ, এবং সরকারের দিকনির্দেশনা মূলক সহায়তা। বাংলাদেশে আগে যে জাতের কমলা চাষ হতো, সেগুলো ছিল রঙে পাকা, কিন্তু উৎপাদনশীলতা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সংরক্ষণে কিছুটা দুর্বল। অথচ মালতা বিশেষ করে সবুজ খোসা যুক্ত ভিয়েতনামী বা চায়নিজ জাতের মালতা।চাষের উপযোগী হয়ে উঠেছে দেশের আবহাওয়ায়, বিশেষ করে রংপুর, সিলেট, বান্দরবান, ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে। এই মালতাগুলো দেখতে সবুজ হলেও একবার পাকলে ভেতরে রসালো, স্বাদে মিষ্টি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর।

আমি যখন হঠাৎ একটি মালতা বাগানে কিছু সময় কাটানোর সুযোগ পেলাম। তখন সেই অভিজ্ঞতা শুধু চেহারা দিয়ে নয়, বরং হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছিলাম। সারি সারি গাছে ঝুলছে সবুজ মালতা প্রতিটি গাছে যেন প্রকৃতির এক শিল্পকর্ম ফুটে উঠেছে। পাতার সবুজে মিশে থাকা টসটসে মালতা গুলো যেন বলছে।এই দেশও পারে, নিজের মাটিতে ফলাতে পারে বিশ্বমানের ফল।বাগানের মালিক জানালেন, তিনি প্রথমে এ ফলের চাষ শুরু করেন অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে। প্রথম বছর ফলন কম হলেও পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি আশাতীত সাফল্য পান। এখন তিনি শুধু নিজের জমিতেই নয়, আশেপাশের অনেক কৃষককেও উদ্বুদ্ধ করছেন এই চাষে। মালতা গাছে রোগ কম হয়, সারের ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কম, আর একবার গাছ বসে গেলে পরবর্তী ৮–১০ বছর নিয়মিত ফল দিয়ে থাকে। এতে যেমন কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি দেশের ফল আমদানির উপর নির্ভরশীলতাও কমছে।

এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে গিয়ে একটুখানি গাছের ছায়ায় বসে যখন আঙুল ছুঁয়ে ধরেছিলাম একেকটা কাঁচা সবুজ মালতা, মনে হচ্ছিল।এই মাটির গন্ধ, ফলের ছোঁয়া, আর প্রকৃতির ছায়া মিলে যে প্রশান্তি এনে দেয়, তা শহরের কোনো দামী রেস্টুরেন্ট বা এসি রুম দিতে পারে না।মালতার এই পরিবর্তন কেবল চাষের ধরণ নয়, গ্রামীণ জীবনের চেহারাও বদলে দিয়েছে। এখন অনেক শিক্ষিত তরুণও কৃষিকাজে আগ্রহী হচ্ছে, ফল রপ্তানি, প্রক্রিয়াজাতকরণ, অনলাইন বিপণন।সব কিছু মিলিয়ে তৈরি হচ্ছে এক নতুন কৃষি-অর্থনীতি। এইসব সবুজ মালতা শুধু ফল নয়, বরং ভবিষ্যতের সম্ভাবনার বীজ। এ যেন নিজের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বে কিছু করার সাহস জোগায়।

সব মিলিয়ে মালতা বাগানে কাটানো সেই কয়েক ঘণ্টার অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে।প্রকৃতি যেমন দেয় প্রশান্তি, তেমনি প্রমাণ করে যে, একটু ইচ্ছা, চেষ্টা আর বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনাই পারে একটি দেশের কৃষি খাতকে বদলে দিতে। সবুজ মালতা এখন শুধু এক ফল নয়, বরং একটি প্রতীক।নতুন দিনের, নতুন স্বপ্নের।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।