স্মৃতিচারণ: শৈশবের গ্ৰীষ্মকালীন ছুটিতে গ্ৰামের পুকুরে গোসল করার স্মৃতিচারণ

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ১৪ ই জুন ২০২৫ ইং

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে শৈশবের গ্ৰীষ্মকালীন ছুটিতে গ্ৰামের পুকুরে গোসল করার স্মৃতিচারণ শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।


photo-1600965962102-9d260a71890d.jpeg

Source

গ্রীষ্মকাল এলেই এখনো মনটা হারিয়ে যায় ফেলে আসা সেই শৈশবে যেখানে সময় যেন ধরা পড়ত না, আর জীবনের সবচেয়ে সেরা আনন্দগুলো লুকিয়ে থাকত। শহরের কংক্রিটের মাঝে বসে চোখ বন্ধ করলেই ভেসে ওঠে সেই সবুজ গ্রাম, খেজুরগাছের ছায়া, আর সেই প্রিয় পুকুরটা যার জলে ডুব দিয়ে আমরা খুঁজে পেতাম শীতলতা, আর আনন্দগ্রীষ্মকালীন ছুটি মানেই ছিলো নানাবাড়ি বা দাদাবাড়ি যাওয়ার তোড়জোড়। সঙ্গে থাকত প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরা জামা-কাপড়, আর একরাশ উচ্ছ্বাস।

ট্রেন বা বাসে চেপে যখন গ্রামের দিকে যাত্রা করতাম, মনে হতো যেন কোনো স্বপ্নপুরীতে পা দিতে যাচ্ছি। রাস্তার পাশে খোলা মাঠ, ধানক্ষেত, আর লম্বা লম্বা তালগাছ দেখে মনের ভেতর এক অদ্ভুত ভালোলাগা জন্মাতো।গ্রামে পৌঁছেই সবার আগে যে জায়গাটায় ছুটে যেতাম, সেটা ছিলো আমাদের পুকুর। সেই পুকুরটা যেন আমাদের শৈশবের সাথী ছিল। সকাল হতে না হতেই আমরা দল বেঁধে ছুটে যেতাম গোসল করতে। গামছা কাঁধে, গায়ে হাফ প্যান্ট, কেউ কেউ আবার লুঙ্গি গুটিয়ে, কাদামাখা পথ বেয়ে পুকুর ঘাটে পৌঁছে যেতাম।

কেউ সাঁতার জানত, কেউ জানত না তবুও পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ার উত্তেজনা সবার মুখেই ছিল।পুকুরে নামার আগে একটু জল ছিটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা কি না দেখে নিতাম। তারপর এক, দুই, তিন বলে সবাই একসাথে ঝাঁপ চারদিক ছলছলিয়ে উঠত। কেউ পাটার মতো ভেসে থাকত, কেউ জলের নিচে ডুব দিয়ে একদিক থেকে আরেকদিক চলে যেত। মাথা ভেজার সঙ্গে সঙ্গে যেন সমস্ত দুঃখ-কষ্টও কোথাও গলে যেত।আমাদের মাঝে ছিল প্রতিযোগিতা কে কতক্ষণ ডুবে থাকতে পারে, কে পুকুরের মাঝখানে প্রথম পৌঁছতে পারে, কে সবচেয়ে উঁচু থেকে লাফ দিতে পারে।

পুকুরের এক পাশে ছিল একটা বড় পাথর, যেটা ছিলো আমাদের ‘ডাইভিং স্পট’। সেই পাথরের উপর উঠে দাঁড়িয়ে আমরা লাফ দিতাম একে একে। জল ছিটকে পড়ত চারপাশে, আর উঠত আনন্দের চিৎকার।গোসল শেষে সবাই পুকুরঘাটে বসে রোদ পোহাতাম। কেউ ঘাটের সিঁড়িতে বসে গা মুছতো, কেউ আবার গামছা মাথায় দিয়ে গল্প করতো। পাশেই থাকত পুকুরপাড়ের আমগাছ, যার ছায়ায় বসে ঠাকুরমা বা মা খই-মুড়ি এনে দিত। গরমে গরম সেই খাওয়া যেন ছিলো রাজভোজের মতো।

আজ অনেক বছর পেরিয়ে গেছে। এখন আর সে পুকুর নেই, নেই সেই নির্মল ছুটি। কিন্তু সেই সব স্মৃতিগুলো বুকে আগলে রাখি। মন যখন ক্লান্ত হয়, তখন সেই পুকুরে ডুব দেওয়া দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। মনে হয়, আহা! যদি আর একবার ফিরে যেতে পারতাম সেই সোনালি গ্রীষ্মে, সেই গ্রামীণ পুকুরে, যেখানে জলের প্রতিটা ফোঁটা ছিল আনন্দের অমৃত।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ক্যামেরা পরিচিতি
DeviceiPhone 11
Camera11+11 MP
CountyBangladesh
LocationRangpur, Bangladesh

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAqqCDY5m5Sn.png

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

1728830339945~3.jpg

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।