মাহে রমজানের প্রস্তুতি🌙
আর মাত্র একদিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে মাহে রমজান, মুসলমানদের জন্য বছরের সবচেয়ে পবিত্র ও বরকতময় মাস। এই মাসে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অফুরন্ত রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সৌভাগ্য লাভ করা যায়। তাই একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের উচিত আগে থেকেই রমজানের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা।রমজানের জন্য সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আমরা পুরো মাস সঠিকভাবে ইবাদত করতে পারি এবং আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারি। মাহে রমজানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে আপনাদের সাথে আজ আলোচনা করবো।চলুন তাহলে শুরু করি...
রমজান শুধু শারীরিক উপবাসের মাস নয়, বরং আত্মশুদ্ধিরও মাস। তাই এই মাসে আমাদের উচিত বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা, নামাজ আদায় করা এবং নফল ইবাদতে মনোযোগী হওয়া।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত ও আওয়াবিন নামাজ পড়ার চেষ্টা করা।
দয়াল নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শানে দরুদ শরিফ পাঠ করা।
কুরআন শরিফ বেশি করে তেলাওয়াত করা এবং তার অর্থ বোঝার চেষ্টা করা।
রমজান হলো দান-খয়রাত ও সহানুভূতির মাস। এই মাসে আল্লাহ আমাদের অনেক বেশি নেকি দান করেন। তাই আমাদের উচিত গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা, যাকাত প্রদান করা এবং যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদের পাশে দাঁড়ানো।
দরিদ্রদের ইফতার ও সেহরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
যাদের উপর যাকাত ফরজ হয়েছে, তারা অবশ্যই সঠিক নিয়মে যাকাত প্রদান করা।
বিভিন্ন সামাজিক কাজ ও সেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা।
রমজানে আমাদের শুধু খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকলেই হবে না, বরং মনের ওপরও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। রাগ, হিংসা, বিদ্বেষ, মিথ্যা বলা, পরনিন্দা করা, গিবত করা ইত্যাদি বন্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
ধৈর্যশীল ও সহনশীল হওয়ার চেষ্টা করা।
অন্যের প্রতি সদয় আচরণ করা।
সব ধরনের অন্যায় বা খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকা।
পরিবারের সাথে ভালো সময় কাটান এবং সুস্থ চিন্তাধারার চর্চা করা।
রমজান শুরু হওয়ার আগেই একটি আমল পরিকল্পনা তৈরি করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ , যাতে পুরো মাস ইবাদতে কাটানো যায়।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াতের লক্ষ্য নির্ধারণ করা।
তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য সময় নির্ধারণ করা।
দান-সদকা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট ঠিক করা।
প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করার সংকল্প করা।
রমজানে অনেকেই ইফতারে অতিরিক্ত ভারী খাবার খেয়ে ফেলেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের জন্য খুবই জরুরি।
সেহরিতে পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা।
ইফতারে ভাজাপোড়া খাবারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা।
অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে পেটের ওপর চাপ সৃষ্টি না করা।
নিয়মিত ব্যায়াম ও হালকা শারীরিক পরিশ্রম করা।
মাহে রমজান আমাদের জন্য আত্মশুদ্ধি, সংযম ও আল্লাহর রহমত লাভের এক মহাসুযোগ। সঠিক প্রস্তুতির মাধ্যমে আমরা এই মাসের বরকত ও ফজিলত থেকে সর্বোচ্চ উপকার পেতে পারি। তাই আসুন, আমরা সবাই রমজানের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করি, বেশি বেশি ইবাদত করি এবং গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে রোজা পালনের তৌফিক দান করুন, আমিন।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟
রমজান মাস সম্পর্কে আগে শুনেছিলাম তবে এত ডিটেলসে জানতাম না। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছুই জানলাম এবং শিখলাম। খাবার-দাবারের প্রতি লোভ-লালসা ছাড়ার সাথে সাথে মানুষকে জীবনেও অনেক আলোকিত দিকগুলোর দিকে লক্ষ্য করতে হবে এবং সব থেকে বড় কথা মানুষের জন্য সমাজের জন্য বাঁচতে হবে। এর থেকে ভালো আর কি বা হতে পারে। যারা সঠিকভাবে রমজান পালন করে অর্থাৎ এই এক মাসের ত্যাগ এবং ভালো থাকা বা ভালো মানুষ হয়ে থাকা তারা এক প্রকার অভ্যেস হয়ে যায়। ফলে পরবর্তীতে ও সমাজের জন্য বা মানুষের জন্য ভাবতে বা করতে কোন অসুবিধা হবে না। আপনি কি রমজানের আগাম শুভেচ্ছা জানাই খুব ভালোভাবে কাটুক আপনার এই এক মাস।
রমজান মাস আসলে ত্যাগের মাস,সমাজের আশেপাশের মানুষকে ভালোবাসার অভ্যাস করার মাস,জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলে হাতে হাত রেখে চলার অভ্যাসের মাস।আর আমরা এই রোজার এক মাস যদি রোজার মাসের সব বিধিবিধান অনুযায়ী চলতে পারি তাহলে সারা বছর এই ভালো কাজগুলোর মধ্য দিয়েই চলার অভ্যাস গড়ে উঠবে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি,আপনার মন্তব্যটি পড়ে অনেক অনেক ভালো লাগলো।
আমরা আবারও নতুন একটি রমজান মাস পেয়ে গেলাম। সৃষ্টিকর্তা যেন আমাদের কে এই রমজান মাসে সুস্থ রাখেন। আমরা সুস্থ অবস্থায় যেন পুরো রমজান মাস টি কাটাতে পারি। রমজান মাসে সব সময় আমাদের কে সাবধানতা অবলম্বন করে চলা উচিত।
বছর ঘুরে আবারও আমাদের মাঝে রমজান মাসে এসে উপস্থিত হয়েছে। এ সময় আমাদের সিয়াম সাধনা পালন করতে হবে রোজা রেখে। এরই মধ্যে আমাদের সংযুক্ত হতে হবে। সারা বছরের ভুল ত্রুটি গুলো দূর করে নিজেদের শুধরিয়ে নিতে হবে।
আমার কাছে আপনার আজকের পোস্টটা পড়েই খুব ভালো লেগেছে ভাইয়া। মাহে রমজানের প্রস্তুতি পোস্টটি অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। আপনার প্রতিটা কথা কিন্তু খুব ভালো ছিল। সবাই সবকিছু পেছনে ফেলে এই মাসটাকে আপন করে নেয়। সব মিলিয়ে আপনার আজকের পোস্ট এবং কথাগুলো খুব ভালো লেগেছে।