নাটক রিভিউ || ফান্দা
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে ফান্দা। এই নাটকটি সপ্তাহ খানেক আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে খায়রুল বাশার এবং তানজিন তিশা। এই নাটকটি একেবারে ভিন্ন ধরনের,তাই দেখতে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | ফান্দা |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | এ কে পরাগ |
অভিনয়ে | খায়রুল বাশার,তানজিন তিশা এবং আরও অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ |
দৈর্ঘ্য | ১ ঘন্টা ২ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের শুরুতে দেখা যায়, নাটকের নায়ক এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিল এবং সেজন্য এনজিওর লোক তার গ্রামে এসেছে লোনের টাকা নিতে। কিন্তু গ্রামে এসে সেই লোক জানতে পারে, গ্রামের অনেকের কাছ থেকেই টাকা ধার নিয়েছে বাশার এবং ফেরত দেওয়ার কোনো নাম নেই। তো সেই লোক এবং গ্রামের এক লোক যখন বাশারের বাসায় যায়, তখন তাকে খুঁজে পায় না বাড়িতে। বাশারের ওয়াইফ তানজিন তিশা বলে,সে বাড়িতে নেই। কিন্তু তারা চলে যাওয়ার পর,বাশার মুরগির ঘর থেকে বের হয় হা হা হা। বাশার আসলে জুয়া খেলে, মদ খায় এবং ঠিকমতো কাজকর্ম করে না। বরং মানুষের কাছ থেকে মিথ্যা বলে বলে টাকা ধার নেয়। এমনকি যেখানে সে কাজ করে,সেই মহাজনের কাছ থেকেও অগ্রিম বেতন নিয়ে নেয় এবং কাজে যায় না ঠিকমতো। তিশা যে বাড়িতে কাজ করতে যায়, সেই বাড়ির এক মহিলার গলায় খুব সুন্দর একটি নেকলেস দেখতে পায় এবং সে খুব পছন্দ করে নেকলেসটা। কিন্তু তাদের সামর্থ্য নেই বলে আফসোস করে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
যাইহোক এক রাতে মদ খেয়ে জুয়া খেলে,জিততে জিততে বাশার হেরে যায় এবং সেই রাতে গ্রামের এক পাওনাদার তাকে রাস্তায় ধরে ফেলে। সেই পাওনাদারের সাথে আরও কয়েকজন লোক ছিলো। তারা বাশারকে ধরার পর বলে,তাদের গ্রামে যে ভয়ানক কবরস্থান রয়েছে, সেখানে গিয়ে কবর খুঁড়ে মানুষের মাথার খুলি বের করতে এবং সেই খুলি তিন রাস্তার মোড়ে রাখতে বলে। তাছাড়া মাথার খুলির উপরে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে দিতে বলে। বাশার এটা শুনে তো খুব ভয় পেয়ে যায়। কারণ দিনের বেলায়ও ভয়ে কেউ একা যায় না সেই কবরস্থানে। সেই পাওনাদার বাশারকে বলে,সে যদি এটা করতে পারে, তাহলে তার সব টাকা মাফ করে দিবে। বাশার শেষ পর্যন্ত রাজি হয় এবং মাথার খুলি তিন রাস্তার মোড়ে রেখে দেয়। দিনের বেলা সেটা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়। তো এলাকার সবাই জানে বাশারকে জ্বীনে ধরেছে। তারপর সেই এনজিওর স্যার আবারও বাশারের কাছে আসে টাকা নিতে। কিন্তু বাশারের অঙ্গভঙ্গি দেখে সেই স্যার প্রচুর ভয় পায় এবং দৌড় দিয়ে গ্রাম থেকে পালিয়ে যায়।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তো গ্রামের অনেকের সাথে অদ্ভুত আচরণ করে বাশার এবং এরপর থেকে বাশারকে সবাই প্রচুর ভয় পায়। একদিন রাতের বেলা মসজিদের হুজুর দেখতে পায়,একটি সাদা ঘোড়ার উপরে শাড়ি পড়ে একটি ছোট মেয়ে বসে আছে। হুজুর সেটা দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে যায় এবং এরপর থেকে সবাইকে বলা হয়, জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ রাতের বেলা বাসা থেকে বের না হয়। যদি কেউ বের হয়,তাহলে তার ক্ষতি হতে পারে। সেদিন রাতে গ্রামের এক বাসায় ডাকাতি হয় এবং স্বর্ণ অলংকার সহ অনেক কিছু নিয়ে যায় ডাকাতেরা। একদিন রাতের বেলা বাশার ঘরে নেই বলে, তিশা তাকে খুঁজতে বের হয়। কিন্তু তিশাও সেই ঘোড়া দেখে এবং প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়। বাশার বাসায় আসার পর তিশাকে বলে,সে নামাজ পড়তে গিয়েছিল। এভাবে প্রতি রাতেই সেই গ্রামে ডাকাতি হতে থাকে। বাশার এক রাতে তিশাকে কিস্তির টাকা দেয় এবং বলে যে, এখন থেকে আর মানুষের বাড়িতে কাজকর্ম করতে হবে না।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
কিন্তু তিশা বলে সে যে বাড়িতে কাজ করে,সেই বাড়ির ছেলে সৌদি আরব থেকে আসবে বিয়ে করতে। সে আসলে তাকে নাকি বিদেশি সাবান দিবে। কিন্তু তবুও বাশার নিষেধ করে তিশাকে যেতে। তো সেই ছেলে সৌদি থেকে বাসায় আসার পর,বাশার সহ তার গ্রুপের কয়েকজন মিলে ডাকাতি করে। তারা ডাকাতি করে একটি নলকূপের মধ্যে সবকিছু জমাতো। তো সেই নলকূপের সামনে বাশার চেক করতে যায় সব ঠিক আছে কিনা। কিন্তু সে দেখে বস্তার মধ্যে তাদের গ্রুপের ছোট ছেলেটা। আর সেটা তাদের গ্রুপের আজগর দেখে ফেলে এবং আজগর ভাবে, বাশার সেই ছেলেকে মেরে ফেলেছে সবকিছু নিয়ে যাওয়ার জন্য। তারপর বাশার এবং আজগর মারামারি করতে লাগে। যাইহোক এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
এই নাটকটি আসলেই একেবারে ভিন্ন ধরনের। এই ধরনের নাটক সচরাচর দেখা হয় না। আসলে এই নাটকে কবরস্থান থেকে মানুষের মাথার খুলি তোলার পরে,বাশারকে জ্বীনে ধরেনি। সে শুধু অভিনয় করেছে এবং সেই সুযোগে তারা কয়েকজন মিলে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে ডাকাতি করে। বাশার যে ডাকাতি করে,সেটা তিশা আগেই বুঝতে পারে, কিন্তু বাশারকে কিছু বলে না। তিশার বাবা ছিলো ডাকাত এবং তিশা শেষের দিকে আসল খেলাটা খেলে। বাশারের গ্রুপের ছোট ছেলেটা নলকূপ থেকে ডাকাতি করা সব মালামাল তুলে ফেলে, সবকিছু নিয়ে পালানোর জন্য। কিন্তু তিশা সেই ছেলেকে খুন করে বস্তার মধ্যে ভরে রাখে। তাছাড়া আজগর যখন বাশারকে মেরে ফেলতে চায়, তখন তিশা আজগরকে মেরে ফেলে। তিশা এবং বাশার এককথায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
তারিখ | ১৯.৯.২০২৫ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ডেইলি টাস্ক স্ক্রিনশট এবং লিংক:
https://x.com/mohin3242127/status/1968679913059152236?t=OmGpYKQzM4YfwbG3-yAJtQ&s=19
https://x.com/mohin3242127/status/1969074928298119437?t=R673wxtNCJ5SQeeTCP1IMQ&s=19
X-promotion
তিশা এবং বাসার দেখতেছি এই নাটকের মধ্যে খুবই জাকজমকপূর্ণ অভিনয় করেছে। তিশার বাবা ডাকাত ছিল এদিকে বাসার আবার নিজেই ডাকাত। তার মানে নাটকের রিভিউ পড়ে যতটা মজা পেলাম দেখলে মনে হয় আরো মজা পাওয়া যাবে। সময় করে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব।
নাটকটি দেখলে আসলেই বেশ মজা পাবেন। রিভিউ পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি অনেক সুন্দর করে আজকের এই নাটকের রিভিউ করেছেন। এই নাটকের রিভিউ পোস্ট পড়তে আমার খুব ভালো লেগেছে। নাটকটা কয়েকদিন আগে আমি দেখেছিলাম। এই নায়ক নায়িকা গুলো আমার অনেক পছন্দের। তাদের নাটকগুলো প্রায় সময় আমার দেখা হয়ে থাকে। আজকের এই নাটকের কাহিনীটা অনেক সুন্দর ছিল।
নাটকটি আপনি দেখেছেন,এটা জেনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সময়ের কারণে যদিও নাটক খুব একটা দেখা হয় না, তবে রিভিউর মাধ্যমে নাটকের রিভিউ পোস্ট পড়ার জন্য চেষ্টা করি। এই নাটকের কাহিনীটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। তাই আমি ভাবছি সময় পেলেই নাটকটা আমি দেখবো। আশা করছি আপনি প্রতিনিয়ত এরকম সুন্দর সুন্দর নাটকগুলো রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করে যাবেন। অনেক ধন্যবাদ এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
এই নাটকের কাহিনী আসলেই খুব সুন্দর। এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাহ্ আপনি তো অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন।নাটকটির রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লাগলো।তবে নাটকটি এখনো দেখা হয়নি তবে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো।ধন্যবাদ ভাই খুবই সুন্দর ভাবে নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করছেন।
আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই পোস্ট করার সার্থকতা। রিভিউ পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই নাটকের ছোট ছোট অনেকগুলো ক্লিপ আমি দেখেছিলাম৷ তবে পুরো নাটকটি দেখা সুযোগ হয়ে ওঠেনি৷ আপনার কাছ থেকে এই পুরো নাটকটির রিভিউ দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো৷ যেভাবে আপনি এখানে এই সুন্দর নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন তা খুব সুন্দর হয়েছে৷ তার পাশাপাশি এখানে নাটকের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে নাটকটি যেন এখনি এখান থেকে দেখে নিলাম৷ অবশ্যই আমি সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব৷
চেষ্টা করেছি এই নাটকের রিভিউ যথাযথভাবে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেকদিন থেকে নাটক দেখি না। আর নাটক রিভিউ শেয়ার করা হয় না। আপনার শেয়ার করা নাটক রিভিউ পড়ে ভালো লেগেছে ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।
মাঝেমধ্যে সময় বের করে নাটক দেখতে বেশ ভালো লাগে। এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।