সন্ধ্যা ৭ টা নাটকের রিভিউ।
আমার প্রিয় বন্ধুগন, সবাই কেমন আছেন? সবাইকে আমার আন্তরিক মোবারকবাদ এবং অন্তরের অন্তস্থল থেকে আপনাদেরকে জানাই শুভেচ্ছা।
সন্ধ্যা ৭ টা নাটকের রিভিউ। |
---|
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | সন্ধ্যা ৭ টা |
---|---|
অভিনয় | ইরফান, পরশা ইভানা সহ আরো অনেকে |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তির তারিখ | ১১ এপ্রিল ২০২৪ |
আপনারা হয়তো এই নাটকের নামটি দেখেই বুঝে গিয়েছেন যে নাটকটি কেমন হতে চলেছে। এই নাটক এর রিভিউ হয়তো অনেকেই দেখেছেন৷ আমিও এই নাটকের রিভিউ পড়েছিলাম। তাই আমি এই নাটকটি আজকে আপনাদের মাঝে আমার মতো করে রিভিউ শেয়ার করার চেষ্টা করব। প্রথমেই নাটকটি শুরু হয়ে যাবে এবং সেখানে একজন চোরকে দেখানো হয়। সে মানুষের বাড়িতে গিয়ে চুরি করত এবং সব সময়ই সন্ধ্যা সাতটা বাজে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ফলে অনেকেই অনেক ধরনের অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়েছে। একই সাথে এখানে নায়ক এবং নায়িকাকে দেখানো হয়।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
তারা দুজনে একসাথে দেখা করার জন্য আসতো। তাদের গ্রামের এটা একটা রুটিন হয়ে গিয়েছিল যে সাতটা বাজে বিদ্যুৎ চলে যাবে৷ সাতটা বাজে বিদ্যুৎ যাওয়ার পরে সবাই সবার কাজ করতে থাকবে৷ একেকজন একেকজনের কাজ করতে থাকে৷ কিছু মানুষ তাদের চুরির কাজের লেগে পরে৷ আবার কিছু মানুষ তাদের যে বেয়াইনি কাজগুলো রয়েছে অর্থাৎ যে সকল মাদকদ্রব্য আদান-প্রদানের কাজগুলো রয়েছে সেগুলো করে থাকে৷ একইসাথে এখানে নায়ক এবং নায়িকা দেখা করে। কারণ নায়ক এই গ্রাম থেকে অনেক আগেই বিদায় নিয়ে নিয়েছে৷ কারণ এখানে তার সাথে একজন লোকের ঝামেলা ছিল৷
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
তাই সে দিনের বেলায় গ্রামে আসতো না৷ শুধুমাত্র রাতের বেলা আসে নায়িকার সাথে দেখা করার জন্য৷ সে রাতের বেলা ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে চলে আসতো৷ এরপর দিন গ্রামের সবাই মিলে একসাথে হয় এবং সেখানকার যে বিদ্যুতের লোক আসে লাইন ঠিক করার জন্য তখন তাকে বলে যে তাদের এলাকায় প্রতিদিন সাতটা বাজে বিদ্যুৎ চলে যায় কেন। তখন ওই ব্যক্তি বলে যে এটা তো তারা জানে না। তারা তো ঠিকভাবেই সব সময় বিদ্যুৎ দেয় এবং কোন ভাবে তারা কোন লোডশেডিং করে না।
এভাবেই অনেকদিন চলতে থাকে এবং প্রতিদিনই সাতটার দিকে বিদ্যুৎ চলে যেতো৷ বিদ্যুৎ চলে যেত এবং সেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরে সবাই সবার কাজে লেগে যেত৷ যে ব্যক্তি চুরি করে মানুষের বাসা থেকে জিনিসপত্রগুলো নিয়ে আসতো সেগুলো সে বিক্রি করার জন্য একজন ব্যক্তির কাছে আসতো৷ সেই ব্যক্তি এলাকার অনেক বড় একজন নেতা ছিল এবং তার সাথেই নায়কের ঝামেলা হয়েছিল৷ সে নায়ককে হুমকি দিয়েছিল যে সে যদি কখনও এই গ্রামে আসে তাহলে তাকে সেখানে মেরে ফেলবে৷
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
পরবর্তীতে অনেকদিন যাবত তাদের এই সকল কর্মকান্ড যখন চলতে থাকে৷ তখন এলাকার যে মেম্বার এবং চেয়ারম্যান রয়েছে তাদের বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা এখানে বলা হয়৷ এখানে যে মেম্বার ছিল তিনি ভালো মানুষ ছিলেন৷ তবে এই এলাকার যে চেয়ারম্যান ছিল সে ব্যক্তির চরিত্রে একটু সমস্যা ছিল৷ কারণ যখন বিদ্যুৎ চলে যেত সে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে এবং খারাপ স্পর্শ দিয়ে সেখান থেকে চলে আসতো৷ এর পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানের বিচার করার জন্য কেউ ছিলনা৷ কারণ মানুষ জানতো না যে এটি আসলে চেয়ারম্যান নাকি অন্য কেউ৷
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
তাই মানুষজন তাকে এমনভাবে তাকে ধরার পরিকল্পনা করে যাতে করে সে অতি সহজে ধরা পড়ে যায়৷ তাই এলাকার যে চেয়ারম্যান রয়েছে সে বুঝতে পারে যে চেয়ারম্যানই মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এরকম কাজ করছে৷ তখন এরপর দিন তার বাসায় পুলিশ আসে এবং সেখানে চেয়ারম্যানের সাথে কিছু মেয়েকে দেখতে পায়৷ তাই চেয়ারম্যানকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়৷
সবাই ভেবেছিল যে প্রতিদিন সাতটার দিকে চেয়ারম্যান লাইন বন্ধ করে দিতে এবং বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার পরে সে সবার বাড়িতে গিয়ে এরকম খারাপ আচরণ করত৷ এর ফলে সে এলাকায় অনেকটাই বদনাম এর শিকার হয়। তবে এরপর দিন থেকে আবারো সেই সাতটা বাজে বিদ্যুৎ যেতে থাকে। কেউই বুঝতে পারছিল না যে আসলে কি হচ্ছে। প্রতিদিন সাতটা বাজে কেন বিদ্যুৎ চলে যায়। এর পরবর্তীতে নায়িকা এবং নায়ক দেখা করার জন্য এসেছিল।
তখন তারা দেখা করার পরে নায়িকা বলে যে তার বাবা তাকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দিবে। নায়িকা যখন একদিন নায়কের সাথে দেখা করার পরে তার বাসায় আসছিল তখন সেখানে নায়িকার বাবা তাকে দেখে ফেলে। তিনি বলেন যে আর কখনো এই বাসা থেকে বের হওয়া যাবে না৷ সে এখন তার বাসাতেই থাকবে৷ সে যদি বাসা থেকে আর একবারও বের হয় তাহলে তাকে আর কোনদিনও বাসা থেকে বের হতে দিবে না৷ এর পরবর্তীতে নায়িকার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে যায়৷ নায়ক যখন এই কথাটি শুনতে পায় তখন সে শেষবারের মতো নায়িকাকে সেখানে আসতে৷ একইসাথে নায়ক সেদিন দিনের বেলা এসেছিল৷ কারণ রাতের বেলা যদি নায়িকার বিয়ে হয়ে সে যদি সেখান থেকে চলে যায় তাহলে সে কিছুই করতে পারবে না৷
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
তাই দিনের বেলা যখন নায়ক সেখানে আসে তখন এলাকার যে নেতা নায়ককে হুমকি দিয়েছিল তার একজন লোক সেখানে চলে আসে। সে দেখতে পায় যে নায়ক সেখানে বসে রয়েছে৷ এর পরবর্তীতে সে সবাইকে খবর দিয়ে দেয়৷ সেখানে নায়ক গা ঢাকা দিয়ে নায়িকার সাথে দেখা করার জন্য আসে। তবে সে কোনোভাবেই নায়িকার সাথে দেখা করতে পারে না৷ সে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এর পরবর্তীতে আবারও সেই সাতটা বাজে সে চলে আসে শেষ দেখা করার জন্য৷ সে নায়িকার জন্য অপেক্ষা করে৷ তবে নায়িকা সেখানে না আসাতে সে নিজেকে বিদ্যুতের লাইনের সাথে সংযুক্ত করে তার জীবন দিয়ে দেয়৷ এভাবেই সে সেখানে মৃত্যুবরণ করে৷ পরবর্তীতে নায়িকা সেখানে আসে এবং সে অনেক কান্নাকাটি করতে থাকে৷ এভাবেই নাটকটি শেষ হয়ে যায় এবং সবাই এই নাটকের আসল রহস্য খুঁজে পায়৷
আমার ব্যক্তিগত মতামত।
খুবই সুন্দর একটি নাটক ছিল এটি। প্রথমে যখন আমি নাটকের নাম দেখতে পাই তখনই আমি ভেবেছিলাম যে নাটকের মধ্যে একটু ভিন্ন ধরনের কিছু হবে৷ তবে নাটকের মধ্যে এত অসাধারণ বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যা আমাকে অনেকটাই মুগ্ধ করেছে৷ আশা করি আপনারা যখন এই নাটকটি দেখবেন তখন আপনাদেরকেও এই নাটকের সবগুলো বিষয় অনেকটা মুগ্ধ করবে৷ নায়ক সবসময়ই নায়িকার সাথে দেখা করার জন্য সন্ধ্যা সাতটা বাজে বিদ্যুতের লাইনের তার কেটে দিয়ে চলে আসতো৷ তবে এই সুযোগের কিছু লোক অসৎ ব্যবহার করে৷ কারণ যদি বিদ্যুৎ থাকে তাহলে এরকম আলোর ভিতরে তারা তাদের অনৈতিক এবং অন্যায় কাজগুলো করতে পারবে না৷ যার ফলে যখন বিদ্যুৎ চলে যেত তখন থেকে তারা তাদের এই কাজ করা শুরু করে দিত৷
চোর তার চুরি করা শুরু করে দিত৷ মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের মাদক আদান প্রদানের কাজ শুরু করে দিত৷ একই সাথে এখানে যে চেয়ারম্যান ছিল সে তার দুশ্চরিত্রের পরিচয় দিত৷ এভাবে তাদের মধ্যে অনেক দিন ধরে এরকম ঘটনা ঘটতে থাকে৷ তবে শেষ পর্যন্ত যখন চেয়ারম্যানের আসল পরিচয় বের হয়ে আসে এবং তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, এরপর সবাই ভেবেছিল যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে৷ তবে শেষ পর্যন্ত নায়কের মৃত্যুর মাধ্যমে সবকিছু শেষ হয়ে যায়৷ আসলে ভালোবাসার মানুষটিকে দেখার জন্য অনেকেই অনেক কষ্ট করে থাকে৷
সেরকম একটি কষ্টের বিষয়কে নাটকের মধ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ প্রিয় মানুষটিকে দেখার মধ্য দিয়ে যে ভালো লাগা কাজ করে সে রকম ভালো লাগার মতো আর কিছুই হয় না৷যখন শেষ পর্যন্ত নায়ক তাকে আর বিয়ে করতে পারেনি তার অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যাচ্ছিল তাই তখনই সে তার জীবন শেষ করে দেয়। আসলে আমাদের বাস্তব জীবনেও এমন অনেক ভালবাসার মানুষ রয়েছে তাদেরকে না পাওয়ার কারণে অনেকেই তাদের জীবন শেষ করে দিচ্ছে।
আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুসারে নাটকের রেটিংঃ |
---|
৯.৯/১০
সমাপ্ত
ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানে বিদায় নিচ্ছি।আগামিতে অন্য কোন নাটকের রিভিউ নিয়ে আবারও হাজির হবো।ভালো থাকবেন সবাই।আর কষ্ট করে রিভিউটি যারা পড়ছেন তাদেরকে মনের অন্তস্থল থেকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আজ আর নয়, আপনার নিকটতম এবং প্রিয়জনদের সাথে সুস্থ ও নিরাপদে থাকুন, নিজের যত্ন নিন। আপনার দিনটি শুভ হোক।
VOTE @bangla.witness as witness
OR


ফোনের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | নাটক রিভিউ । |
অবস্থান | বাংলাদেশ |
আমি বাংলাদেশ থেকে ইমদাদ হোসেন নিভলু।আমার স্টিমিট আইডি হল @nevlu123।আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড মেম্বার।২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে আমি স্টিমিট এ কাজ করি।আর এই প্লাটফর্মে জয়েন করি শখের বসে। আর সে থেকেই আজ অব্দি ভালোলাগা থেকেই কাজ করি।জাতিগতভাবে আমি মুসলিম। কিন্তু ভাষাগতভাবে আমি বাঙালি। কারণ আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি।আমার সবচাইতে বড় শখ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করা।এ পর্যন্ত আমার তিনটি দেশ ভ্রমণ করা হয়েছে যদিও আরও ইচ্ছে রয়েছে অন্যান্য দেশ ভ্রমণ করার।যাইহোক শখের মধ্যে আরো রয়েছে গান,ভিডিও ইডিটিং, ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি,আর্ট এবং টুডি থ্রিডি ডিজাইন এর কাজ।
দারুন একটি নাটক রিভিউ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আপনার চমৎকার এই নাটক রিভিউ করতে দেখে অনেক অনেক ভালো লেগেছে আমার। অসাধারণ ভাবে আপনি নাটক রিভিউ করে দেখিয়েছেন। এ জাতীয় নাটকগুলো আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লাগে।
আমি মনে করি নাটকের মধ্যে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় থাকে। আর অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তারা বিশেষ কোনো বিষয় দর্শকের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে। ঠিক তেমনি আপনার আজকের এই নাটক রিভিউ এর মধ্যে আমি অনেক কিছু খেয়াল করে দেখলাম। সুন্দর এ নাটকটা আমাদের মাঝে রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই নাটকটা সত্যি অনেক বেশি সুন্দর ছিল। আমার কাছে তো নাটকটার রিভিউ অনেক ভালো লেগেছে পড়তে। অনেক সুন্দর বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এই নাটকে। বিদ্যুতের লাইনের তার কেটে দিয়ে নায়ক প্রতিনিয়ত নায়িকার সাথে সন্ধ্যা সাতটায় দেখা করতে আসতো। কিন্তু শেষ মুহূর্তটা এরকম হবে এটা ভাবতে পারিনি। নায়িকা আসতে দেরি করাতে সে নিজেই মারা গিয়েছে দেখে অনেক খারাপ লাগলো। আমি সময় পেলে নাটকটা দেখব।
পুরো কাহিনীটাকে সংক্ষেপে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য প্রথমে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন এই সুন্দর নাটকটির রিভিউ। এই নায়ক নায়িকা আমার অনেক পছন্দের। তাদের অভিনয় আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। অনেক আগে থেকেই আমি তাদের নাটক দেখি। তাদের দুজনের অভিনয় অনেক সুন্দর হয়। এ নাটকের মধ্যেও অনেক সুন্দর অভিনয় করেছে তারা। রিভিউটা সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ।
খুব সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নাটকের শেষ দিকে আসলেই ভীষণ খারাপ লেগেছে। ভিন্ন রকম গল্পের একটা নাটক ছিল এটা। অনেক আগেই এটা দেখেছিলাম। আজকে আপনার রিভিউ এর মাধ্যমে দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর ভাবে পুরো নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।