ফটোগ্রাফি পোস্ট// কয়েকটি এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি নিয়ে একটি অ্যালবাম।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে কয়েকটি এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

বৃষ্টি মানেই প্রকৃতির এক অদ্ভুত ছোঁয়া, এক নির্মল পরশ। আর যখন সেই বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে আমার ছাদবাগানের পাতায়, ফুলে।তখন মনে হয় যেন প্রকৃতিই আপন করে নিচ্ছে সবুজের এই ছোট্ট রাজ্যটাকে। আজকের এই লেখায় শেয়ার করছি এমনই কিছু মুহূর্ত, কিছু ভেজা পাতা আর ফুলের ছবি, যা আমি আমার ছাদবাগানে বন্দি করেছি ক্যামেরার চোখে। ছবিগুলোর প্রতিটিতে লুকিয়ে আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শ্রম, আর অদম্য ভালোবাসার গল্প।

বৃষ্টি ভেজা পুঁই শাক পাতা

উপরের যে পাতা দেখা যাচ্ছে, সেটি আমাদের অতি পরিচিত ও পুষ্টিকর শাক পুঁই শাকের। বৃষ্টির পর তার উপরে জমে থাকা জলবিন্দু গুলো যেন প্রকৃতির এক নিখুঁত অলংকার হয়ে উঠেছে। এই দৃশ্যটি শুধু চোখে শান্তি এনে দেয় না, বরং প্রকৃতির জীবনধারার একটি ক্ষণস্থায়ী অথচ গভীর চিত্রও তুলে ধরে। পুঁই শাক আমাদের রান্নাঘরের এক চিরচেনা উপাদান হলেও, এর ভেজা পাতা যখন এমনভাবে ক্যামেরায় ধরা পড়ে, তখন মনে হয়।প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়ে তুলেছে তার সবুজ সিংহাসন। এই পাতাগুলোর প্রতিটিতে রয়েছে সতেজতা, সজীবতা এবং এক ধরনের প্রাকৃতিক পরিপূর্ণতা যা শহরের কংক্রিটের ভিড়ে পাওয়া যায় না। ছাদবাগানের এক কোণে জন্ম নেওয়া এই শাক শুধু খাদ্য উপাদান নয়, বরং প্রকৃতির প্রাণবন্ত স্পর্শ।

---

মরিচ গাছের সাদা ফুল

এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে ছোট্ট, আমার হাতে ধরা মরিচ গাছের কোমল সাদা রঙের ফুল। এটিকে অনেকেই চিনেন, কারণ মরিচ গাছের এই ফুল খুব দ্রুত কুঁড়ি থেকে ফলের রূপ নেয়। কিন্তু প্রকৃতিকে যত্ন নিয়ে অবলোকন করলে দেখা যায়, এই সাদা ফুলটি কতটা সুন্দর ও নিখুঁত। এর পাঁপড়ির সৌন্দর্য এবং কোমলতা চোখে পড়ার মতো। এটি যেন গাছের মুখে ফোটা এক হাসি ।যার মধ্য দিয়ে সে জানান দেয়, তার ভেতরে একটি ফল জন্ম নিতে যাচ্ছে। এই সাদা ফুলের গঠন এবং তা ধারণ করা সবুজ পাতার রঙের ভারসাম্য দেখে মনে হয় যেন এক শিল্পকর্ম। এই ছবিটি প্রমাণ করে, প্রকৃতি কখনোই আমাদের ছোট ছোট বিষয়ের সৌন্দর্য ভুলে যেতে দেয় না শুধু দরকার একটু মন দিয়ে তাকানো।

---

সিম পাতা

ছবিতে যে পাতা দেখা যাচ্ছে, তা আমাদের চেনা সিম গাছের। তিনটি পাতা একত্রে মিলে একটি প্রকৃতি-বেঁধা ছন্দে তৈরি হয়েছে এই গাছের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। সিম গাছের পাতা সাধারণত ঝকঝকে সবুজ, হালকা খসখসে, এবং তার শিরা ও শাখাগুলো পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান থাকে। বিশেষ করে বৃষ্টির পর এই পাতাগুলোতে জমে থাকা পানির ফোঁটা যেন প্রকৃতির এক শিল্পকর্ম হয়ে ওঠে ।এক ফোঁটা পানি, এক টুকরো জীবনের প্রতিচ্ছবি।এই পাতাগুলোর গঠন শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়, বরং তা গাছের শক্তি, স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধি বোঝার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমও। পাতার রঙ যদি গাঢ় সবুজ হয়, তবে বোঝা যায়।গাছটি পর্যাপ্ত পুষ্টি পেয়েছে, ভালোভাবে বেড়ে উঠছে। আবার পাতার উপর জমে থাকা পানির কণাগুলোও জানান দেয়, প্রকৃতি তার যত্ন নিচ্ছে।সিম গাছ আমাদের গ্রামীণ ও শহুরে ছাদবাগানে চিরচেনা একটি সবজির উৎস। কিন্তু এই চেনা গাছটিকেও নতুন করে চিনতে পারি যখন আমরা তার পাতায় মনোযোগ দিই।তার গঠনে, রঙে, আর বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়া নির্মলতায়। পাতার কোণায় জমে থাকা পানি আর সূর্যের আলো মিলে যে দীপ্তি তৈরি করে, তা যেন বলে ওঠে ।প্রকৃতি কখনো সাধারণ নয়, প্রতিটি পাতায় সে নতুন কিছু লিখে রাখে।

---

বৃষ্টি ভেজা নয়ন তারা ফুল

এই ছবিতে রয়েছে নয়ন তারা ফুল, যার রঙ হালকা গোলাপি ও পাপড়িতে জমে থাকা জলের ফোঁটা তাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে। নয়ন তারা এমন একটি ফুল যা সহজেই জন্মায়, সহজেই ফোটে, এবং তার সহজ সরল সৌন্দর্য দিয়ে মনকে মোহিত করে। কিন্তু যখন বৃষ্টির পর তাকে এমন রূপে দেখা যায়, তখন মনে হয় সে যেন আরও বেশি সৌন্দর্যময় হয়ে উঠেছে। এই ফুলের পাপড়ি এবং তার কোমল গঠন দেখে মনে পড়ে যায়। প্রকৃতি আমাদের মাঝে কত অনায়াসে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেয়। ছবির ফ্রেমে এই ফুলটি যেন প্রকৃতির এক দুর্লভ মুহূর্তের স্থিরচিত্র।

---

বেগুনি রঙের মরিচ ফুল

এটি একটি তুলনামূলক ভাবে অচেনা ফুল বেগুনি রঙের মরিচ ফুল। সাধারণত মরিচ গাছে সাদা ফুল দেখা যায়, কিন্তু কিছু প্রজাতির মরিচে বেগুনি রঙের ছোট ছোট ফুল ফোটে। এই ফুলের গঠন খুবই অনন্য এবং চোখ ধাঁধানো। ফুলের মাঝখানে গাঢ় রঙের কেন্দ্র এবং চারপাশের নরম পাপড়িগুলো যেন একটি ছোট্ট শিল্পকর্ম। এটি শুধু দেখতে সুন্দর নয়, বরং এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে একটি মরিচ ফলের প্রতিশ্রুতি। ছাদবাগানে এমন কিছু ভিন্নধর্মী ফুল ফোটানো মানে শুধুই উদ্ভিদ চাষ নয়, বরং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যকে নিজের করে নেওয়া।

---

বেগুন ফুল

এই ছবিতে রয়েছে বেগুন গাছের ফুল। হালকা বেগুনি রঙের এই ফুলটি আমাদের চেনা হলেও, বৃষ্টির পরে তার রঙ ও গঠন আরও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। চারপাশে সবুজ পাতা এবং ফুলের মাঝখানে হলুদ রেণুগুলো মিলিয়ে এমন একটি সমন্বয় তৈরি হয়েছে, যা প্রকৃতির নিপুণ কারুকার্যকেই মনে করিয়ে দেয়। এই ফুলটিই একদিন পরিণত হবে আমাদের চেনা বেগুনে।যেটি রান্নার টেবিলে এসে হাজির হবে। কিন্তু তার আগে এই ক্ষণস্থায়ী সৌন্দর্যটিকে দেখা এবং উপভোগ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ফুলের সৌন্দর্য যেন মনে করিয়ে দেয়।প্রতিটি ফলের পেছনে থাকে এক সূক্ষ্ম, অবহেলিত সৌন্দর্যের গল্প।

এই ছবিগুলোর প্রতিটি আমার ছাদ থেকে তোলা ।সকালবেলার বৃষ্টির পরে হেঁটে বেড়িয়ে ছবি তুলে নিয়েছি, ঠিক যখন পাতায় এখনো পানি জমে, বাতাসে একধরনের সজীব গন্ধ ছড়িয়ে থাকে। এটি আমার জন্য শুধু ছবি তোলা নয়, বরং প্রকৃতির সঙ্গে একান্ত কিছু সময় কাটানো।ছাদবাগান আমার কাছে শুধুই কিছু গাছপালা নয়, এটি আমার শান্তির আশ্রয়, আমার শেখার জায়গা, আর প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার একটি ছোট্ট পথ। এই গাছগুলো আমি নিজ হাতে রোপণ করেছি, জল দিয়েছি, আগাছা তুলেছি ,এরা যেন আমার সন্তানসম। আর যখন বৃষ্টির ছোঁয়ায় এরা আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তখন আমি কেবল দাঁড়িয়ে দেখি, ছবি তুলি আর ভাবি এটাই তো জীবন, সহজ, সবুজ আর সত্য।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।