চাঁদাবাজি, সাংবাদিক হত্যা ও আমাদের সমাজের নীরবতা।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আমার সকালের শুরুটা অনেকের মতোই হয়,ঘুম থেকে উঠে হাতে মোবাইল, তারপর ফেসবুক বা নিউজ পোর্টাল স্ক্রল করা। কিন্তু কিছু খবর এমন থাকে, যা সারাদিনের মানসিক অবস্থা এলোমেলো করে দেয়। আজকের খবরও তেমনই। গাজীপুরে দুই সাংবাদিক চাঁদাবাজির খবর প্রকাশ করায় নির্মমভাবে হত্যা হয়েছেন, একজনকে জবাই করে, অন্যজনকে ইট দিয়ে থেতলে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের এক এলাকায় চাঁদাবাজির খবর প্রকাশ করার কারণে বাসায় সাংবাদিককে না পেয়ে তার স্ত্রী ও মেয়েকে চাঁদাবাজরা হুমকি দিয়েছে।
এ যেন এক ভয়ঙ্কর বাস্তবতা, যেখানে অপরাধী কারা তা সবাই জানে, কিন্তু কেউ প্রকাশ্যে বলতে সাহস পায় না। সংবাদমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব দেখায়। প্রায় প্রতিটি পত্রিকায় বলা হচ্ছে “দুর্বৃত্তদের হাতে সাংবাদিক খুন।” অথচ সাংবাদিক মহল ভালোভাবেই জানে, কোন দলের কারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু দলের নাম বলার মতো সাহস যেন কারও নেই। আমরা যেন আবার কোন অদৃশ্য দলের কাছে বাক স্বাধীনতা হারিয়ে ফেললাম।
আমাদের স্বাধীনতার বয়স ৫৪ বছর পেরিয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সময়ে এমন কোনো শাসক আসেননি, যিনি নিজের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। যতবার ক্ষমতা পরিবর্তন হয়েছে, ততবারই দেখা গেছে, নিজস্ব গোষ্ঠী, দলের কর্মী, রাজনৈতিক স্বার্থই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি, এসব যেন শাসকদলের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হলেও, সাধারণ মানুষের জীবনে উন্নতির প্রভাব খুব কমই পড়ে।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবার জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই নির্বাচনের পর যদি নতুন সরকার আসে, তারা কি সত্যিই দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে? নাকি আগের মতো নিজের আখের গোছানোই হবে মূল লক্ষ্য? ইতিহাস আমাদের শেখায় ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন, সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ চালানোর দৃষ্টান্ত খুবই বিরল।
সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো যারা সত্যিকারের দেশপ্রেম নিয়ে কথা বলতে চায়, তারা নানা অপবাদে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যেন সত্য বলা মানেই রাষ্ট্র বা সমাজের বিরোধী হয়ে যাওয়া। অথচ দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব তখনই, যখন নাগরিকরা সাহসের সঙ্গে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও অনেক সময় এসব জানলেও উপেক্ষা করে, চুপ থাকে, কিংবা দলীয় রাজনীতির আবেগে সত্যকে মেনে নিতে চায় না।
এই নীরবতা, এই উদাসীনতা অপরাধীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। কারণ, যখন অপরাধ ঘটে কিন্তু প্রতিরোধ হয় না, তখন অপরাধ আরও বেড়ে যায়। সাংবাদিকদের হত্যা শুধু একজন ব্যক্তির মৃত্যুই নয় এটি মুক্ত সাংবাদিকতার গলায় ছুরি চালানো। এটি আসলে সত্যকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা।
আমাদের এখন প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা, সঠিক রাজনৈতিক সচেতনতা, এবং ন্যায় ও অন্যায়ের স্পষ্ট পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা। যারা দেশের কথা ভাবে, তাদের কণ্ঠস্বর রোধ না করে বরং শোনার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, একটি দেশ কেবল তখনই উন্নতির পথে এগোতে পারে, যখন তার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে দাঁড়াবে, এবং শাসকরা বুঝবে দেশের স্বার্থই সর্বোচ্চ, ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়।
কবে সেই দিন আসবে, আমরা জানি না। তবে একদিন যদি দেশের মানুষ সত্যিকার অর্থে জেগে ওঠে, তখন হয়তো আমরা গর্ব করে বলতে পারব এটাই আমাদের স্বাধীনতার প্রকৃত অর্জন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রিয়েলমি সি-৫৩ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
স্থান | ব্রাহ্মনবাড়িয়া,ঢাকা, বাংলাদেশ |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
https://x.com/RamimHa74448648/status/1953872704211407057?t=4sIpXzFdIlooAogP99tBZg&s=19
https://x.com/RamimHa74448648/status/1953873117387850033?t=vJtOhNH6M4aXsGnwLfc9wg&s=19