আজ - বৃহস্পতিবার
২০ আশ্বিন, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
০৫ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। অনলাইন থেকে কেনাকাটা করতে কার না ভালো লাগে। ঠিক তেমনি আমারও অনলাইন থেকে কেনাকাটার ভালোলাগা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে অনেক দিনের। আজকে আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে যাচ্ছি অনলাইন থেকে বই কেনার এক বিশেষ অনুভূতি। হয়তো এই পোস্ট আপনাদের অনেকের অনেক উপকারে আসবে। তাই চলুন আর দেরি না করে বিস্তারিত দেখি আসি এখনি।
আমি অনেকদিন আগে থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করতে বেশি পছন্দ করে থাকি। প্রথম যখন শিখেছিলাম অনলাইনে এভাবে কেনাকাটা করা যায় তখন কিন্তু বেশ অবিশ্বাস করতাম অনলাইনে কেনাকাটা। তবে আস্তে আস্তে যখন বিশ্বাস হতে থাকে আর বিশ্বস্ত জায়গাগুলো সত্যি ডেলিভারি দিয়ে থাকে তখন থেকে মোটামুটি বই ইলেকট্রনিক্সের জিনিস সহ বিভিন্ন জিনিস কিনে থাকি। আপনারা জানেন বাংলাদেশে খুব শীঘ্রই প্রাইমারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ধাপে ধাপে। তাই আমার ইচ্ছে ছিল এখন আর বিয়ে করব না ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে পড়বো ওদিকে চারকলায় কোর্স করছিলাম ভেবেছিলাম আর্ট এর কাজ শিখব আর ভালো করে পড়বো ঘরে বসে স্কুলটা ছেড়ে দিয়ে। ঠিক এমন মুহূর্তে দেখলাম আমার আব্বাও বেশ আমার জন্য উঠে পড়ে লাগলো বিয়ে দিবে বলে। হঠাৎ করে বিয়ে করবো এমন ইচ্ছে মত ছিল না তারপরেও আব্বা যখন শুনল না তখন আমি আর বেশি মাথা না ঘামিয়ে সবকিছু আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম আর অনলাইনে দেখলাম বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বই বিক্রয়ের অফার দিচ্ছে বিভিন্নভাবে যেখানে প্রাইমারির যাবতীয় শর্ট টেকনিক সাজেশন লক্ষ্য করা যায়। স্কুল চলাকালীন মুহূর্তেই অর্ডার করলাম অনলাইন থেকে তিনটা বই নেওয়ার জন্য। কারণ একটা ইউটিউব চ্যানেল আমার খুবই ভালো লাগে সেখানে খুব সুন্দর ভাবে বাংলা ইংরেজি গণিত ক্লাস নাইন এবং তারা খুব সুন্দর বই সাপ্লাই করে থাকে। হয়তো প্রতিষ্ঠানের নাম পেয়ে যাবেন মেমোর মধ্যে। whatsapp এর মাধ্যমে যোগাযোগ নিলাম নাম ঠিকানা পাঠিয়ে দিলাম টাকা সহ। তবে সম্পূর্ণ টাকা নয় এডভান্স কিছু টাকা। কারণ এটা হোম ডেলিভারি বই হাতে দিবে বাকি টাকা পরিশোধ করে নিবে। যাই হোক আমার যেদিন বিবাহ হলো ২৭ এ মার্চ। ঐদিন স্কুল চলাকালীন মুহূর্তে আমি যখন স্কুলে অবস্থান করছি একজন হোম ডেলিভারি লোক আমাকে ফোন দিয়ে জানালো আপনার বই চলে এসেছে কোথা থেকে গ্রহণ করবেন? আমি ঠিকানা দিয়ে দিয়েছিলাম গ্রিনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল মটকা বাজার। বলেছিলাম এখান থেকে বইটা গ্রহণ করব। উনি স্কুলে চলে আসলেন আমি ক্লাস নিছিলাম। এ মুহূর্তে ফোন দিয়ে বললেন ভাই আমি আপনাদের স্কুলের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি বইয়ে নিয়ে। আমি দ্রুত দুতালার সিক্সের রুম থেকে বের হয়ে এসে নিচে নেমে এলাম এবং উনাকে দেখতে পেলাম।


Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
বইগুলো চমৎকার ভাবে একি মলাটের মধ্যে তিনটা মুড়িয়ে দিয়েছে। বাকি টাকা পরিশোধ করার জন্য আমাকে বলল। বললাম ভাই বই ঠিকঠাক আছে তো ভেতরে। উনি বললেন ঢাকা থেকে যেভাবে পাঠিয়েছিস ঠিক সেভাবেই রয়েছে কেউ এটা নাড়েনি। আমি হোম ডেলিভারি ম্যানকে বাকি টাকা পরিশোধ করে দিলাম যেহেতু অ্যাডভান্স করা ছিল একশো কুড়ি টাকা। এদিকে বইয়ের মূল্য সাড়ে ৮০০ টাকা। যাই হোক উনাকে পরিশোধ করে দেওয়ার পরে বললেন ভাই নিশ্চিন্তে অর্ডার দিবেন বই হোক আর যাই হোক আপনাদের হাতে পৌঁছে যাবে। আর আপনাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব ইনশাল্লাহ কোন জিনিস ক্ষতি হবে না। নিশ্চিন্তে অর্ডার করতে পারেন। এই এরিয়ায় হোম ডেলিভারির দায়িত্ব এখন আমার।



Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
বইটা নিয়ে ক্লাসরুমে চলে গেলাম। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পড়ায় মনোযোগ ছেড়ে আমার বইগুলোর দিকে তাকানোর চেষ্টা করল ভাবলাম এই মুহূর্তে বইগুলো বের করলে এদের পড়া নষ্ট হয়ে যাবে তাই আর সেখানে প্যাকেট না ভেঙে শুধুমাত্র মেমোটা বের করলাম টেপ লাগানো থেকে। মনে করলাম বইগুলো অফিসে যেয়ে বের করে সবাইকে দেখাবো। যেন নতুন বই এর দারুন সুগন্ধি বের হচ্ছে মলাটের মধ্য থেকে। শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের বললাম হতে পারে এটা প্রাইমারি পরীক্ষার প্রস্তুতির বই তবুও এখান থেকে তোমাদের সাধারণ জ্ঞান আমি অনেক বিষয়ে শিখাবো যেগুলো এখন থেকে শিখলে ভবিষ্যতে অনেক কাজে আসবে। যেহেতু ষষ্ঠ শ্রেণী ফাইনাল পরীক্ষার পরে সপ্তম শ্রেণি উঠার আগে ক্যাডেটের পরীক্ষা দিতে যাবে তারা তাই তাদেরও প্রয়োজন রয়েছে এই বইয়ের বিশেষ বিশেষ কুইজ গুলো। আর ঠিক তেমনি গাইড থেকে তাদের পড়ানো হচ্ছিল। এদিকে আমার মাথায় বিশাল টেনশন চলছে বাড়ি থেকে। আমাকে দ্রুত স্কুল ছেড়ে বাড়ি আসার জন্য আব্বাও ভাই আমাকে ডাকছে। আব্বা বেশ কয়েকটা মেয়ে দেখেছে আমার বিবাহের জন্য তবে একটা মেয়ের বাড়িতে মেয়েটা দেখতে যাওয়ার জন্য ভাই আর আব্বা সকালে যাবে বলেছিল কিন্তু আমি রাজি নই বলেছিলাম তারা যেন দেখতে না যায় কয়েকটা বেড সাইট শুনেছিলাম তাই। এদিকে আব্বা আর ভাই সেখানে যে উপস্থিত হয়ে আমাকে বারবার ডাকছে বাড়ি এসে আমি যেন তৈরি থাকি আমাকে সাথে নিয়ে যাবে। যাই হোক বইগুলো আর অফিসে দেখা হলো না বেশ টেনসনে পড়ে গেলাম কিন্তু নতুন বই গুলো দেখার জন্য আমারও খুব মন আনচান করলো।


Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
অবশ্য সাতাশে মার্চ সেই মেয়ের সাথে আমার বিবাহ হয়ে গেল রাতে। তাই বইগুলো যেন আর দেখায় হয়ে উঠল না। অবশেষ ২ এ এপ্রিল বউ এর সামনে প্রাইমারির এই বই তিনটি প্যাকেটের মধ্য থেকে বের করলাম। অবশ্য বিবাহের পরের দিন আমার পরিবার আর ছোট শালিকাকে দেখিয়েছিলাম এই মুহূর্তে দেখো আমার বিয়ে করার মোটেও ইচ্ছে ছিল না এই বইগুলো কিনেছি আর সাতক্ষীরা থেকে অনেকগুলো রং পেন্সিল কিনে এনেছি। আমার চিন্তা-চেতনা এখনকার মত ছিল এক দুই মাসের মধ্যে যদি সুবিধা না করতে পারি তাহলে স্কুল ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে পরবো আর আর্ট করব। তারা রং তুলি আর নতুন এই বই দেখে অবাক হল। নতুন বউ হঠাৎ বলে বসলো কেন বিয়ে করে ক্ষতি হয়ে গেল নাকি। আমি বললাম না তেমনটা নয় তবে চিন্তাধারা যা ছিল সেটাই বললাম আর কি। সে আমাকে বলল তুমি তোমার মত পড়ো। তোমার পড়াইতে আমি বাধা দিব না। যাইহোক আরো অনেক কথা। দুই তিনটা ভালোভাবে ভেতরের পাতাগুলো উল্টিয়ে দেখলাম সবদিক থেকে ঠিকঠাক রয়েছে, কোন সমস্যা নেই। আর এভাবে আপনারাও চাইলে নিশ্চিন্তে বই কিনতে পারেন। আর এটাই ছিল আমার সেই অনলাইন থেকে বই কেনার অনুভূতি ও মুহূর্তের তথ্য।



Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |

আসলে ভাই বিয়েতে ভয় না পাওয়ায় ঠিক।আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই হালালের সাথে আছেন এবং তিনি দেখছেন।আপনার জন্য শুভ কামনা এবং দোয়া রইলো প্রস্তুতি ভাল করেন নিন সেই কামনা করি।
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন অনলাইন থেকে বই কেনার অনুভূতি। আপনি একদম ঠিক বলেছেন মামা প্রাইমারির সব সময় শর্ট টেকনিকে সবকিছু শিখিয়ে থাকে। আপনি অনলাইন থেকে তিনটা বই কিনেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। মামা আপনার কথা শুনে তো বিয়ে করতে আমারও অনেক ভয় লাগছে তাহলে বিয়ে আরও পিছিয়ে দিলাম ২০৩৫ সালের দিকে।
অনলাইনে কোন জিনিস কেনার অনুভূতি কেমন তা আমার জানা নেই। কেননা আজও অনলাইন থেকে তেমন কিছুই কেনা হয়নি। তবে আপনার পোস্ট করে বুঝতে পারলাম বেশ ভালোই অনুভূতি হয়েছে এ বিষয়ে আপনার। আপনি অনলাইন থেকে তিনটি বই কিনেছেন জেনে খুবই খুশি হলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি বিষয় আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
অনলাইনে বই কেনা টা আমার কাছেও খুবই ভালো লাগে। কেননা অনলাইন থেকে বই কিনলে দোকানে যাবার কোন ঝামেলা থাকে না আর সঠিক বই সঠিক সময়ে হাতে চলে আসে। আর বইয়ের ক্ষেত্রে এখন ডেলিভারী সিস্টেম অনেক ভালো।