বাংলাদেশে অনলাইন প্রতারণা: বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সচেতনতা জরুরি।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হলো অনলাইন প্রতারণা। মোবাইল ব্যাংকিং, সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রতারকরা প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে। এ সমস্যার ভয়াবহতা বোঝা যায় যখন কাছের কেউ এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়। সম্প্রতি আমার এক সহকর্মী এবং গ্রামের এক চাচাতো মামা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় সচেতনতার অভাবই প্রতারকদের সুযোগ করে দিচ্ছে।
কিছুদিন আগে আমার এক কলিগ অনলাইন তথা WhatsApp এ প্রতারণার শিকার হয়ে ৫ হাজার টাকা গচ্ছা দিয়েছে। সেই গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আজকে আবার গ্রামে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম এক চাচাতো মামা বিকাশের প্রতারনার ফাঁদে পড়ে ১০ হাজার টাকা হারিয়েছে। বিষয়টা খুবই সিম্পল। একটি অপরিচিত নাম্বারে ফোন দিয়ে মামাকে বলল আপনি দেড় লাখ টাকা লটারি পেয়েছেন। তবে বিষয়টি কাউকে জানানো যাবে না। জাস্ট আপনি আপনার বিকাশ একাউন্টে দশ হাজার টাকা জমা রাখুন। বাকিটা আমরা বলে দিবো। এ কথা বলেই ফোন কেটে দিল। আমার বোকা মামা ও কাউকে কিছু না বলে অন্য একজন থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নিয়ে নিজের বিকাশ একাউন্টে রাখলো। ঘটনাটি ঘটেছে শেষ রাতে। সকালে বিকাশে টাকা এড করেছে। দ্বিতীয় বার ফোন দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার নিলো। জিজ্ঞেস করল ব্যাংক একাউন্টে কোন টাকা আছে কিনা। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোন টাকা ছিল না। তখন প্রতারক বলল সমস্যা নেই আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকে আমরা দেড় লাখ টাকার চার্য সমপরিমাণ টাকা ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিবো। এ কথা বলে প্রতারক মামার থেকে বিকাশ একাউন্ট এর পিন নাম্বার নিয়ে নিলো। তার এক মিনিট পরেই মামার মোবাইলে এসএমএস আসলো বিকাশ একাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা গায়েব। প্রতারকের ফোন নাম্বার বন্ধ। এ হলো ঘটনার মূল কাহিনী।
এই দুইটি বাস্তব কাহিনী আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় প্রতারকরা কতটা চতুর এবং সাধারণ মানুষ কত সহজে ফাঁদে পড়ে।
বাংলাদেশে প্রতারকরা নানা কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে:
ভুয়া লটারি ও পুরস্কারের প্রলোভন, বিকাশ/নগদে অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার ভয় দেখানো, ফেসবুক আইডি হ্যাক করে বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া, অনলাইন শপিংয়ে নকল বা ভুয়া পণ্য সরবরাহ, ভুয়া লোন অ্যাপ ইন্সটল করিয়ে তথ্য চুরি ইত্যাদি।
কেন মানুষ প্রতারিত হয়?
প্রধানত অসচেতনতা ও লোভ এই প্রতারণার মূল কারণ। হঠাৎ লটারি পাওয়া বা অল্প টাকায় বেশি লাভ, এমন প্রলোভনে পড়ে মানুষ নিজের ব্যক্তিগত তথ্য, এমনকি বিকাশের পিনও দিয়ে ফেলে।
প্রতারণা থেকে বাঁচতে করণীয়
বিকাশ, নগদ, রকেট কখনোই ফোন করে পিন চাইবে না। অপরিচিত নম্বর বা লটারির খবরে বিশ্বাস করবেন না। অনলাইন কেনাকাটা করার আগে বিক্রেতার রিভিউ দেখে নিন। ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে টাকা পাঠানোর আগে ফোনে সরাসরি কথা বলুন। টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করুন প্রতারণার শিকার হলে দেরি না করে ৯৯৯ বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ করুন।
বাংলাদেশে ডিজিটাল লেনদেন যত বাড়ছে, প্রতারণার ঘটনাও তত বাড়ছে। তবে একটাই জিনিস আমাদের রক্ষা করতে পারে সচেতনতা। প্রতারকেরা কখনো সহজে থামবে না। কিন্তু আমরা যদি নিজেদের সতর্ক রাখি, তথ্য শেয়ার না করি এবং প্রতিটি লেনদেনে সাবধান হই, তাহলে এ ধরনের ভয়াবহ ক্ষতির হাত থেকে অনেকটাই বাঁচা সম্ভব।
সবার প্রতি আহ্বান লোভে পা দেবেন না, সচেতন থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server