চলছে অনলাইন জুয়া, নিঃস্ব হচ্ছেন তরুণ তরুণীরা

in আমার বাংলা ব্লগ20 days ago

আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ১৯ ই জুলাই ২০২৫ ইং

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে অনলাইন জুয়া সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।


IMG_0228.jpeg

Source

নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি এর কিছু দিক আমাদের ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এমনই এক ভয়ংকর দিক হলো অনলাইন জুয়া। দিনের পর দিন এর বিস্তার অনেক বেশি ভয়ানক আকার ধারণ করছে ।তরুণদের জন্য এই অনলাইন জুয়া যেন এক ডিজিটাল নেশা। মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রেখে বেটিং করা, স্পিনঘোরানো কিংবা ক্যাসিনো গেম খেলা এসব এখন কেবল গেম নয়, এক ধরনের মানসিক নির্ভরশীলতা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আর মজার জায়গায় থাকে না, হয়ে যায় অর্থ, মানসিক চাপ আর মারাত্মক খেলায় পরিণত।

শুরুর দিকটা হয় দুইশ, পাঁচশ টাকা দিয়ে একটি অ্যাপ বা সাইটে লগইন, ফ্রি বোনাসে কয়েকটি খেলা। হঠাৎ দুইশ টাকায় পাঁচশ টাকা হয়ে গেলেই মনের ভেতর এক ভ্রান্ত বিশ্বাস জন্ম নেয় আমি পারি। তারপরই শুরু হয় দৌড় দিনে দিনে হাজার হাজার টাকা ঢালা, ঘুমহীন রাত, পরিবারকে মিথ্যা বলা, নিজের পড়াশোনা কিংবা চাকরির দিক থেকে মনোযোগ হারিয়ে ফেলা।তরুণদের মধ্যে যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের, তারা একপ্রকার গোপনে এই নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। বাবা মায়ের অজান্তে, শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে, নিজের ভবিষ্যৎকে নিজের হাতেই ধ্বংস করছে। হারিয়ে যাচ্ছে সঞ্চয়, বিক্রি হচ্ছে ফোন, বন্ধক রাখা হচ্ছে গ্যাজেট।

এমনকি অনেক সময় ধার দেনায় জড়িয়ে পড়ে ভয়ানক বিপদে পড়ছে।এই অনলাইন জুয়ার ব্যবসা চালাতে বিদেশি কিছু চক্রের পাশাপাশি দেশের ভেতরেও একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। তারা মূলত তরুণদের টার্গেট করে সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন চালায়, ইউটিউবের ভিডিওতে লোভনীয় অফার দেয়, এমনকি জনপ্রিয় কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটররাও অজান্তে এই কাজকে প্রচার করে।আরেকটি ভয়ংকর দিক হলো এটা একেবারেই গোপনীয়। লোক দেখানো মদ্যপান বা প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়ার মতো নয়, বরং এটি ঘরের ভেতর, নিজের বিছানায় বসেই করা যায়। তাই অভিভাবকরাও অনেক সময় বুঝে উঠতে পারেন না, তাদের সন্তান কবে কোন পথে পা রেখেছে।

এর সামাজিক প্রভাব আরও গভীর। অনেকে সম্পর্ক হারাচ্ছে, কেউ কেউ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে, বিষণ্নতা বা আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। অথচ এই ভয়ংকর সমস্যাটি এখনো সমাজে স্বাভাবিকভাবে আলোচনা হয় না। এটি যেন এক অপ্রকাশ্য গোপন নেশা হয়ে থেকে যাচ্ছে। পরিবারকে হতে হবে বেশি সচেতন। সন্তান কোথায় সময় দিচ্ছে, কী অ্যাপে চোখ রাখছে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখা এখন সময়ের দাবি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত সচেতনতামূলক সেমিনার ও ওয়ার্কশপের আয়োজন প্রয়োজন। তরুণদের বুঝাতে হবে অর্থ উপার্জনের শর্টকাট নেই। একমাত্র শিক্ষা, পরিশ্রম ও পরিকল্পনাই পারে তাদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে।

সরকারের পক্ষ থেকেও অনলাইন জুয়ার অ্যাপ, ওয়েবসাইট এবং পেমেন্ট গেটওয়ের ওপর কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। প্লে স্টোর ও অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এমন অ্যাপ নিষিদ্ধ করা, সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের বিজ্ঞাপন বন্ধ করা, এবং যারা এগুলো পরিচালনা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।দিনশেষে, প্রযুক্তি আমাদের বন্ধু হোক, শত্রু নয় এই বোধ জাগিয়ে তুলতেই হবে। নইলে আমরা হারিয়ে ফেলবো একটি প্রজন্ম, যারা হতে পারতো দেশের ভবিষ্যৎ, কিন্তু তারা হারিয়ে যাবে জুয়ার অন্ধকার জগতে।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAqqCDY5m5Sn.png

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

1728830339945~3.jpg

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।
Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.