দীর্ঘদিন পর গ্রামের প্রাচীনতম ফল পানিয়াল খাওয়া
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শুক্রবার, ১৬ ই আগস্ট ২০২৫ ইং
দীর্ঘদিন পর গ্রামের প্রাচীনতম পানিয়াল গাছের নিচে বসে ফল খাওয়া যেন আমার হৃদয়ের ভেতরে জমে থাকা সব শৈশবের স্মৃতি একসাথে জাগিয়ে তুলল। আজ শুক্রবার, সকাল থেকেই গ্রামের ছেলেদের মাঝে এক ধরনের উৎসবের আমেজ ছিল। কেউ বাড়ি থেকে ডাকছিল, কেউ আবার মাঠের দিক থেকে হাঁটতে হাঁটতে আসছিল। গ্রামের চারপাশে বর্ষার সবুজে মোড়া প্রান্তর, দূরে ধানের ক্ষেত, পাখির ডাক আর হালকা বাতাস যেন আমাদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলছিল।
আমাদের গ্রামের এই পানিয়াল গাছটি অনেক পুরনো প্রায় সবার দাদার সময় থেকেই এখানে দাঁড়িয়ে আছে। গাছের কাণ্ডে পুরনো ক্ষতচিহ্ন, ডালে ডালে অসংখ্য গল্প লুকিয়ে আছে। শৈশবে আমরা গাছটিকে ঘিরে কত খেলা খেলেছি লুকোচুরি, দড়ি লাফ, গাছে ওঠার প্রতিযোগিতা। গ্রীষ্মে যখন গাছ ভর্তি পানিয়াল হতো, আমরা স্কুল ছুটির পর ছুটে এসে গাছের নিচে বসে ফল কুড়াতাম। সেই স্বাদ, সেই আনন্দ আজ যেন হুবহু ফিরে এলো।
গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো পড়ে পাকা পানিয়ালগুলো চকচক করছিল, আর হালকা বাতাসে পাতাগুলো সোঁ সোঁ শব্দ করছিল। কেউ গাছে উঠে পাকা ফল পাড়ছিল, কেউ নিচে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে নিচ্ছিল। প্রথম কামড়ে পানিয়ালের রস মুখে ছড়িয়ে পড়তেই সবাই খুশিতে চিৎকার করে উঠল। মিষ্টি আর হালকা টক স্বাদ এমনভাবে মিশে ছিল যে, একবার মুখে দিলেই মনে হচ্ছিল আরও চাই। বন্ধুরা একে অপরকে খাওয়াচ্ছিল, আর মাঝে মাঝে মজা করে বলছিল এইটা আমারটাই ছিল, তুই খেলি হাসি ঠাট্টায় চারপাশ মুখরিত হয়ে উঠেছিল।
গ্রামের প্রাচীন এই পানিয়াল গাছের ফল একসময় ছিল সবার প্রিয়, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে এই ফল যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আগে গ্রীষ্ম এলেই আশেপাশের অনেক গাছ ভরে যেত পানিয়ালে, গ্রামের ছোট বড় সবাই মিলে খেতাম। এখন সেই দৃশ্য প্রায় বিরল। অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, নতুন প্রজন্মের অনেকেই এই ফলের নামও জানে না। বাজারেও খুব কমই মেলে, আর পেলেও আগের মতো টাটকা আর সুস্বাদু হয় না।কখনো কখনো মনে হয়, আমরা আমাদের গ্রামীণ জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলো নিজেই ভুলে যাচ্ছি।
এই পানিয়ালের মতো অনেক দেশি ফল, যা একসময় গ্রামবাংলার স্বাভাবিক অংশ ছিল, এখন শুধু স্মৃতিতে রয়ে যাচ্ছে। শহরের চাহিদা, জমির অভাব, আর মানুষের অবহেলায় এমন অনেক ফল বিলীন হয়ে যাচ্ছে।আজকের মতো দিনে যখন গ্রামের সেই একমাত্র পুরনো গাছ থেকে আমরা পানিয়াল খেলাম, তখন মনে হলো এটা শুধু ফল খাওয়া নয়, বরং হারিয়ে যেতে বসা এক ঐতিহ্যের সাথে আবার হাত মেলানো। হয়তো আর কয়েক বছরের মধ্যে এই গাছটিও থাকবে না, আর তখন এই ফল আমাদের কাছে কেবল গল্পের মতো থাকবে। তাই যতদিন আছে, ততদিন এই স্বাদ, এই স্মৃতি আর গাছের ছায়া আমাদের আগলে রাখতে হবে।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Daily task
https://x.com/riyadx2p/status/1956262681138356270?s=46
https://x.com/riyadx2p/status/1956263045543682535?s=46
https://x.com/riyadx2p/status/1956263283213926714?s=46
পানিয়াল ফল অনেকদিন আগে খেয়েছি। ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেলো। ভাই আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।