বাড়িতে শালিক পাখির বিরক্তি
দুইটি শালিক পাখির ফটোগ্রাফি
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। বিভিন্ন প্রকার রেনডম ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি। তবে আজকে আমি উপস্থিত হলাম একটু ভিন্নতা নিয়ে। আপনারা জানেন আমি পশু পাখির ফটোগ্রাফি এবং কৃষি কাজের ফটোগ্রাফি বেশি পছন্দ করি। ঠিক তেমনি আজকে শালিক পাখির বেশ কিছু ফটোগ্রাফি নিয়ে উপস্থিত হলাম। জানিনা কতটা ভালো লাগবে। তবুও কিছুটা ভালো লাগা এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে। যা এই পোষ্টের মাঝেই ব্যক্ত করব আমি।
আমরা গ্রামে বাস করি। গ্রামের বাড়িগুলোতে সব সময় লক্ষ্য করা যায় শালিক পাখির উৎপাত বেড়েই চলেছে প্রতিদিন। অন্যান্য পাখি তেমন বাড়ির মধ্যে জ্বালায় না। কারণ মানুষকে দেখে অন্যান্য পাখিরা ভয় পায় এবং দূরে উড়ে চলে যায় যে কোন গাছের ডালে বসে। কিন্তু শালিক পাখি এতটাই জ্বালাতে থাকে। যেন মানুষকে দেখে কখনো ভয় পায় না। খাবার খাওয়ার জন্য ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। রান্নাঘরে খুঁজে বেড়ায়। ঠিক এমনি আমাদের বাড়িতে একাধিক শালিক পাখি উৎপাত করতে থাকে। আর শালিক পাখির এমন অত্যাচার বা অতিষ্ট মুহূর্ত পাড়ার প্রায় পরিবারের মানুষের মুখে শুনতে পারি। কারো শুধু আমাদের পরিবারের না বিভিন্ন পরিবারের মানুষ যখন গল্প করে তখন বলে তাদের বাড়িতেও ঠিক এভাবে সারাদিন শালিকে জ্বালায়। কেউ বলে তাদের বাড়িতে দুইটা শালিকে জ্বালায় কেউ বলে চারটা শালীকে জ্বালায়। অর্থাৎ প্রত্যেকটা পরিবারেই কমবেশি শালিক পাখি এভাবেই ঘুরে বেড়ায় এবং খাবার খোঁজে জালিয়ে বেড়ায়। তাই অনেকে বিরক্তি অনুভব করে বলে বনের পাখি বনে থাকতে, পোকা মাকার সংগ্রহ করবে। মানুষের বাড়িতে কেন এত জ্বালাতন করবে। সত্যিই জানো তাই দিনে দিন যেন শালিক পাখির অত্যাচার বেড়েই চলেছে।
আগের মানুষ বলতো যে বাড়িতে শালিক পাখির আগমন বেশি সে বাড়িতে ফসল হয় বেশি। এমন কথাও শুনেছি নানা দাদারা শালিক পাখি তাড়াতো না। তাদের আমলেও শালিক পাখি এভাবে বাড়িতে ঘোরাঘুরি করতো। তাই অনেকে বলে শালিক পাখি বাড়িতে আসলে সে বাড়িতে উন্নতি হয়। আমি মোটেই সমস্ত কুসংস্কার কথা পছন্দ করি না। আমি যতটা জানি এই পাখি অন্যান্য প্রাকৃতির থেকে আলাদা। মানুষ চাইলে এই পাখিকে পোষ মানাতে পারে। কারণ তারা অতি মানুষের নিকটে থাকে। অন্যান্য পাখি এভাবে থাকে না। শালিক পাখিকে খাবার দিলে তারা খেতে আসে। কিন্তু বাড়িতে ঘুঘু পাখি দেখেছি, দোয়েল পাখি দেখেছি এছাড়া অন্যান্য পাখির আগমন দেখেছি কিন্তু তারা কখনো এভাবে খেতে আসে না। তবে যাই হোক বেশ বিরক্তি হলেও শালী পাখির এ ঘোরাঘুরি যেন অন্যরকম ভালো লাগার।
কখনো বাড়ির আঙিনায়। কখনো ঘরের মধ্যে উঠে পড়ে। কখনো রান্নাঘরে এভাবেই বেড়াতে থাকে পাখি গুলো। যখন তখন তারার চেষ্টা করি কিন্তু যেন সাহস হয়ে গেছে অতিমাত্রায়। ডান দিক থেকে তাড়া দিলে বা দিকে আসে বসে। আবার বাঁ দিক থেকে তাড়া দিলে ডান দিকে আসে। এবার নতুন দুইটা বাচ্চা ফুটেছে তাই তাদের সাথে নিয়ে এসে যেন আরো বেশি জ্বালাতন করে। মাঝে মাঝে অতিষ্ট হয়ে যেতে হয় তাদের বিরক্তি কর কার্যক্রমে। একদিকে শুকাতে দেওয়া জামা কাপড় নষ্ট করে। আরেক দিকে ধোয়া পাত্রে উঠে ময়লা লাগিয়ে দেয়। ঠিক এভাবে এতটাই বিরক্তি করে মাঝেমধ্যে অতিষ্ঠ হতে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় যেন সতীন থাকলে এত জ্বালাতো না। কারণ প্রত্যেকটা দিন একইভাবে, দুইটা চাইরটা বা এক পাল শালিকের কিচিরমিচির শুরু হয়ে যায় চোখের সামনে। মনে হয় যেন তাদের সম্পত্তি বারিয়ে যাচ্ছে,তাই তারা ঝগড়া লাগিয়েছে চোখের সামনে এসে। দীর্ঘদিন আমাদের বাড়িতে মুরগী পাখি পোষা হয় না এইজন্য শালিক পাখিগুলোর জ্বালাতন বেড়েই চলেছে। তাই হঠাৎ মাথায় আসলো অতিমাত্রায় জ্বালাতন করা পাখিটাকে ব্লগ করে শেয়ার করে রাখি। তাই রুমের মধ্য থেকে ফটো ধারন করার চেষ্টা করেছিলাম। আবার রুমের বাইরে থেকেও ফটো ধারণ করার চেষ্টা করেছিলাম। একদম কাছে গিয়ে ফটো ধারণ করেছি কিন্তু তার পরেও যেন কাছ থেকে নড়ছে না। তাহলে বুঝতে পারছেন কতটা বাড়ির মধ্যে তাদের অবস্থান তৈরি হয়ে গেছে ও সাহস তৈরি হয়ে গেছে। তবে এই সাহস তৈরি হওয়ার পিছনে কারন রয়েছে অনেক। মাঝেমধ্যে বাড়িতে খাবার অতিরিক্ত হলে তাদের দেওয়া হয়। আর সেই থেকে তাদের সাহস দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তবুও এরা বন্যপ্রাণী তাই মানুষকে জ্বালাতন করবে না তবে কাকে জ্বালাতন করবে। এরা আছে বলেই তো প্রাকৃতিক পরিবেশের সৌন্দর্য বজায় রয়েছে। কিন্তু মাত্রায় অতিরিক্ত জ্বালাতন করলে খুবই খারাপ লাগে।
ডিভাইস | Infinix Hot 11s/Huawei P30 Pro-40mp |
---|---|
বিষয় | শালিক পাখির ফটোগ্রাফি |
লোকেশন | গাংনী- মেহেরপুর |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
শালিক পাখির জ্বালাতনে আপনি অতিষ্ঠ জেনে খারাপ লাগছে।আমার সামনে মিনিমাম বিশটি সালিক দৌড়া দৌড়ি করছে।সালিক পাখি বেশ ভালোই জ্বালাত করে।আমার বাড়ির জানালার গ্লাসে এসে অত্যাচার করে।আসলে আগেকার দিনে মানুষ পাখি বাড়িতে আসকে শুভ মনে করতো।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ দাদা-দাদীদের মুখে শুনেছি।
গ্রামে এমন অসংখ্য কুসংস্কার এর প্রচলণ আছে। তার মধ্যে শালিক নিয়ে বেশ কয়েকটা আছে। সত্যি বলতে শালিক পাখিটা মানুষকে দেখে ভয় একটু কমই পায়। আপনার পোস্ট টা দেখে বুঝতে পারলাম সত্যি সত্যি পাখি টা বেশ বিরক্ত করছে আপনাদের। কিন্তু কী আর করবেন আপু। সাধারণ একটা প্রাণী সহ্য তো করতেই হবে।
হ্যাঁ ভাইয়া ঠিক বলেছেন
আপু যারা গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করে তারা এই শালিক পাখিগুলোর উৎপাত দেখতে পায়। তবে আমাদের এদিকেও গ্রামাঞ্চলে এই শালিক পাখিগুলো দেখা যায়। অন্যান্য পাখিগুলো তেমন দেখা যায় না শালিক পাখি বেশি দেখা যায়। আর এই পাখিগুলোকে খাওয়ার দিলে তাদের সাহস আরো দ্বিগুণ বেড়ে যায় কথাটি একদম ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন আপনি।
অন্যান্য মানুষ তো খাবার দিয়েও বাড়িতে শালিক পাখি আনতে পারে না। আপনাদের ভাগ্য কত ভালো। বাড়িতে এমনি এমনি শালিক পাখি চলে আসে। আশা করা যায় আপনাদের ভাগ্যে ভালো কিছু আছে। ধন্যবাদ।