সকালের বেলি ও আমার একান্ত সময়
প্রতিদিনকার মত আজও সকালে ঘুম ভাঙলো পাখির ডাকে। কিন্তু আজকের সকালটা যেন একটু আলাদা ছিলো। জানালার পর্দা সরাতেই চোখে পড়লো বাগানে সাদা-সাদা ফুলের মেলা।
হ্যাঁ, আমার প্রিয় বেলি গাছটা আজ যেন নিজের সমস্ত সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে।
এক কাপ চা হাতে নিয়ে গিয়েছিলাম বাগানে। সেখানে দাঁড়িয়ে মনে হলো, কত কিছু বদলেছে জীবনে, কিন্তু এই বেলি গাছটা ঠিক আগের মতই রয়ে গেছে—নির্বিকার, শান্ত, আর আপন ছন্দে ফুটে চলেছে।
প্রথম ছবিটা তুলেছি যখন একটা বেলি কুঁড়ি প্রথমবারের মতো ফুঁটে উঠেছে। মনে হলো ওটা যেন হালকা হেসে বলছে—"সুপ্রভাত!"
পরের ছবিগুলোতে ধীরে ধীরে ফুলগুলো আরও প্রস্ফুটিত। প্রতিটা স্তবক যেন নিজের গল্প বলছে। কোনটা একা ফুটে আছে, কোনটা জোড়ায় জোড়ায়, আবার কোনটা পাতার আড়াল থেকে মুখ বের করে লুকোচুরি খেলছে।
তাদের এমন ফুটে ওঠা দেখে হঠাৎ করেই মনটা অনেক শান্ত হয়ে গেলো। জীবনের যত ব্যস্ততা, যত টেনশন—সব কিছু এই ফুলের কোমলতার সামনে হার মানলো।
বেলি ফুলের সৌন্দর্য শুধু চোখেই না, মনে গিয়েও গেঁথে থাকে। তার মিষ্টি গন্ধটা যেন স্মৃতি জাগায়, কোথাও হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোকে মনে করিয়ে দেয়। ছোটবেলায় দাদির বাগানের কথা মনে পড়ে যায়, যেখানে এমনই গন্ধে ভরে থাকতো সন্ধ্যাবেলা।
এইসব ভাবতে ভাবতেই নিজেকে অনেক ধন্য মনে হলো। এত কিছুর ভিড়ে এই নির্ভেজাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে ছুঁয়ে গেলো।
আজকের দিনটা তাই শুরু করলাম এই বেলির সঙ্গে কিছু নীরব মুহূর্ত ভাগ করে।
তুমি কখনো এমন শান্ত সকাল উপভোগ করেছো?