কুলেখাড়া শাকের গুনাগুন এবং রেসিপি।

in আমার বাংলা ব্লগyesterday


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


1000051947.jpg


1000051987.jpg


আমরা অনেকেই এই কুলেখাড়া শাকের সাথে পরিচিত আবার অনেকেই অপরিচিত। এই কুলেখাড়া শাকের আরো অনেক নাম আছে তবে আমি একটা নামও জানিনা, আমি এই শাকের শুধুমাত্র কুলেখাড়া শাক নামই জানি। আগেকার মানুষেরা কুলেখাড়া শাক সম্পর্কে অনেক বেশি ধারণা রাখতো। যার কারণে আগেকার মানুষেরা ওষুধ কম খেত এবং এইসব শাকসবজি এবং প্রাকৃতিক খাবার খেয়েই শরীরকে অনেক বেশি সুস্থ রাখতো এবং দীর্ঘায়ু হয়ে নিরোগ ভাবে বেঁচে থাকত। আসলে বর্তমানে আমাদের শরীরে অনেক বেশি হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা যায়। আর এই হিমোগ্লোবিনের অভাব মেটাতে পারে একমাত্র এই কুলেখাড়া শাক। আমি ছোটবেলা থেকে কুলেখাড়া শাক সম্পর্কে না জানলেও বড় হয়ে যেদিন থেকে জানতে পেরেছি সেদিন থেকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে এই কুলেখাড়া শাকের প্রতি। কুলেখাড়া শাকে আছে অপরিসীম গুনাগুন। ঝোপে জঙ্গলে বিভিন্ন জলাশয়ের পাশে একদম অযত্নে জন্মগ্রহণ করে এবং বেড়ে ওঠে এই কুলেখাড়া শাক। বাজারেও এর মূল্য একদম কম কোন দোকানে পাঁচ টাকা আবার কোন দোকানে দশ টাকা আটি বিক্রি হয়ে থাকে। এই কুলেখাড়া শাক বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়।

1000051953.jpg


1000051961.jpg



বিভিন্ন ধরনের শাক যেমন আমরা সাধারণভাবে ভেজে রান্না করে খাই তেমন ভাবেও খাওয়া যায় আবার কাচা রস করেও খাওয়া যায়। এই কুলেখাড়া শাক খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে রক্তাল্পতা এবং অ্যানিমিয়া জাতীয় সমস্যা আমাদের থেকে দূরে থাকে। রক্ত পরিষ্কার করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এমনকি শিশুদের এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই কুলেখাড়া শাক খাওয়া খুবই উপকারী। রক্ত সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা দূর করতে এই কুলেখাড়া শাক সক্ষম এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এ কুলেখাড়া শাক দূর করে থাকে। তবে আমি এই কুলেখাড়া শাক ভাজা করেও খাই না বা কাঁচা রস করেও খাই না। এই কুলেখাড়া শাক আমি সেদ্ধ করে রস করে খাই। আসলে কাঁচা রস করে খেতে গেলে কেমন একটা গন্ধ বের হয় তাই এভাবে অনেকেই খেতে পারে না। আর ভাজা করে খেলে আমার মনে হয় এর পুষ্টিগুণ অর্ধেকের বেশি নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমি সব সময় অল্প সেদ্ধ করে খাওয়াই পছন্দ করি। আজ আমার এই কুলেখাড়া শাক সেদ্ধ করে এবং রস করে খাওয়ার পদ্ধতিটাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

1000051964.jpg


1000051967.jpg


-:উপকরণ:-

কুলেখাড়া শাক
জল

-: কুলেখাড়া শাকের জল তৈরি পদ্ধতি:-


প্রথমে আমি এক আটি কুলেখাড়া শাক নিয়ে নিয়েছি। এবার কুলেখাড়া শাক ডাল সহ পাতা একটু ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিলাম যাতে সেদ্ধ করতে সুবিধা হয়। নিচে যে শিকড়ের অংশ রয়েছে এটা বাড়িতে যদি এমন কোন জায়গা থাকে যেখানে মাটি একটু নরম বা জলাশয়ের পাশে সেরকম স্থানে লাগিয়ে দিলে খুব দ্রুত এটি আবার পাতা ছাড়তে শুরু করে। অযত্নে এই শাক অনেক বেশি বেড়ে উঠতে থাকে। এবার শাকগুলিকে ভালো করে পরিষ্কার জলে বেশ কয়েকবার ধুয়ে নিলাম যেন নোংরা না থাকে। এবার পরিমাণ মতো জল দিয়ে আগুনে সেদ্ধ হতে বসিয়ে দিলাম। জল ফুটে আসলে লো ফ্লেম করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম। তাহলে ভালো করে সেদ্ধ হয়ে পুরো উপকারিতা জলের সাথে মিশে যেতে পারবে।

1000051968.jpg


1000051971.jpg


কিছুক্ষণ পর ঢাকনা খুলে দেখতে পেলাম জলের রং একদম পরিবর্তন হয়ে গেছে। বেশ কিছুক্ষণ জাল দেওয়ার পর আগুন নিভিয়ে দিলাম। কিছুটা সময় ওইভাবেই রেখে দিলাম যেন জলটা একটু ঠান্ডা হয়ে আসতে পারে। কিছুক্ষণ পরে যখন জলটা একটু ঠান্ডা হয়ে এসছে তখন শাকগুলো ভালো করে চটকে নিলাম। তারপর একটি গ্লাসে ছাকনির সাহায্যে জলটি ছেঁকে নিলাম একটি গ্লাসে। এবার কুলেখাড়া শাকের জল খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে গেছে। এই কুলেখাড়া শাকের জল বা রস যে কোন সময় খাওয়া যায়। তবে সকালে খালি পেটে খেলে উপকারিতা অনেক বেশি পাওয়া যায়। এইভাবে কুলেখাড়া শাকের জল তৈরি করলে জলে একটুও কোনরকম গন্ধ লাগে না। নিয়মিত এই জল খেতে পারলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের কখনোই ঘাটতি পরবে না।

1000051990.jpg


1000051993.jpg


1000051996.jpg


ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।