ভোরবেলায় হাঁটতে যাওয়ার অনুভূতি।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি গুরুজনদের মুখে এবং মা-বাবাদের মুখে যে, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হয় এবং ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠতে হয়, তাহলে নাকি শরীর অনেক ভালো থাকে। আর তার সাথে যদি হয় সকালবেলা একটু শরীরচর্চা তবে তো আর কথাই থাকে না। আসলে ভোরবেলা সূর্যের আগে ঘুম থেকে উঠলে এবং শরীর চর্চা করলে সারাদিন শরীরটা অনেক সুন্দর ফুরফুরা থাকে আর তার সাথে সারাদিন অনেক এক্টিভ থাকা যায়। আমার যদিও রোজ ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠা হয় না তবে যেদিন উঠি একটু তাড়াতাড়ি সেদিন সারাদিনটা খুব ভালো যায়। আমি রোজ আমার বাড়িতে থাকা দুই বৌদির সাথে বিকাল বেলা কম করে এক ঘন্টা হাটাহাটি করি। বৌদিরা এবং আমি সবাই একটি টার্গেট পূরণ করার লক্ষ্যে ছুটেছে যেটি হল পেটের মেদ কমানোর। আসলে আমাদের পেটে এত বেশি মেয়ের জমে যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজ কর্মের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে ওঠে। আর এই পেটের মেয়েদের কারণেই আমরা অনেক বেশি হাপিয়ে উঠি। তাই আমরা চেষ্টা করি প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা হেঁটে শরীরের মেদ কমানোর। প্রতিদিনের মতো গতকাল রাতে যখন হাঁটাহাঁটি করছিলাম তখন কথায় কথায় মনে পড়ল কিছু মাস আগেও আমি ভোরবেলায় শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের উপর প্রতিদিন হাঁটতে যেতাম।
বৌদিকে এ কথা বলতেই বৌদি বলল যে সবুজ ঘাসের উপর হাটার অনেক উপকারিতা আছে। আমিও বৌদির কথায় সহমত জানালাম। তখনই বৌদিকে বললাম যে কাল তাহলে ভোর বেলায় অর্থাৎ আজকে ভোর বেলায় মাঠে শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের উপর হাটতে যাব। যেমন কথা তেমনটাই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হল। দুই বৌদি এবং আমি মিলে তিনজন এবং এক বৌদির ছোট ছেলে মোট চারজন ভোরবেলা অন্ধকার থাকতে থাকতেই ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম এবং একটু ফ্রেশ হয়ে হাতমুখ ধুয়ে অন্ধকার কেটে সামান্য আলো ফুটতেই বেরিয়ে পড়লাম বাড়ি থেকে। এত ভোরবেলা বাড়ি থেকে বেরোতে এমন সুন্দর একটা অনুভূতি হচ্ছিল যা বলে বোঝানোর মত নয়। ঘুম থেকে ওঠার সময় যদিও একটু কষ্ট হচ্ছিল ঘুম ভাঙতে চাইছিল না কিন্তু রাস্তায় বেরোনোর পর একদম তরতাজা অনুভব হচ্ছিল। ঘরের মধ্যে যতক্ষণ ছিলাম মনে হচ্ছিল আমরাই যেন উঠেছি কিন্তু বাইরে এত মানুষ এত ব্যস্ততার জীবন দেখে একটা অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করছিল। আমাদের বাড়ির সামনেই যেহেতু সবজি এবং মাছের আরত, তাই তাদের বাজার বসানোর একটা ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছিল। আমরা বাড়িতে যখন ভোরবেলা ঘুমিয়ে থাকি তখন বাইরে অনেক মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য ব্যস্ততায় এবং ঘুমহীন চোখে কাজে লেগে পরে।
বাজারের এই ব্যস্ততা দেখতে দেখতে আমরা হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে গেলাম মাঠের দিকে। বেশ কদিন ধরে একটানা বৃষ্টি হয় মাঠে এখন কেউ আসে না, যেহেতু বৃষ্টির কারণে মাঠ পুরো কাদা কাদা হয়ে রয়েছে। আমরা গিয়ে দেখলাম মাঠ পুরো ফাঁকা রয়েছে, শুধুমাত্র একটি লোক মাঠের একদম কোনায় শুকনো জায়গা দেখে এক জায়গা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করছিল। আমরা মাঠে ঢুকতেই এক জায়গায় সবাই জুতো খুলে রেখে হাঁটতে শুরু করলাম। সত্যি কথা বলতে ঘাসের ওপরে শিশির তো ছিল কিন্তু শিশিরের থেকে বেশি কাঁদাটাই পায়ে মাখামাখি হচ্ছিল। মাঠে এতটাই বেশি জল জমে গেছিল যে পুরো কাঁদা অবস্থা ছিল। তবুও আমাদের যেন এই কাদার মধ্যে হাটতেও ভীষণ ভালো লাগছিল। আমরা কাদার মধ্য দিয়ে হাটতে হাঁটতেই দেখলাম একটু উঁচু জায়গা রয়েছে যেখানে কাদা নেই, তারপর সেখানে বেশ দীর্ঘ সময় ধরে হাটাহাটি করলাম। হাটাহাটি করতেই দেখতে পেলাম আমাদের পাশেই একটা ফড়িং উড়ে বেড়াচ্ছিল কিন্তু আমাদের দেশে বা আমাদের সংস্পর্শে আসা সত্ত্বেও একটুও ভয় পাচ্ছিল না আবার সরেও যাচ্ছিল না। বেশি বেশ ভালো লাগলো তাই ওই ফড়িংটা আর একটা ফটোগ্রাফি করে নিলাম।
ভোরবেলার এমন সুন্দর শান্ত পরিবেশ সুন্দর এক আবেগি মনোভাব গড়ে তোলে। ঘরের কিছু গৃহিণীরা রাস্তার পাশের ফুল গাছ আবার মাঠের পাশের ফুল গাছ থেকে ফুল তুলে ঘরে নিয়ে যাচ্ছে, কেউ আবার সংসারের টুকটাক কাজকর্ম করা শুরু করে দিয়েছে, কারো আবার আড়তে যাওয়ার ব্যস্ততা। সব মিলিয়ে পরিবেশটা খুবই সুন্দর এবং আমাদের মাঠের পরিবেশটা খুবই মনোরম এবং আবেগী ছিল। বেশ কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে করতে মাঠের মধ্যেই আমাদের উল্টোদিকে দেখতে পেলাম তিন-চারটে সাদা বক হেঁটে বেড়াচ্ছে আর সম্ভবত কিছু একটা খাচ্ছে। মাঠের চারিদিকটা বিভিন্ন রকম গাছপালায় ঘেরা আবার তার ফাঁকে ফাঁকে কিছু বাড়ি দেখা যাচ্ছে। ভীষণ সুন্দর এই প্রাকৃতিক পরিবেশ। ভোরবেলা এমন সুন্দর পরিবেশে হাঁটাহাঁটি করতে এবং কিছুটা সময় কাটালে মনটা ভালো হয়ে যায়। আমরা বেশ দীর্ঘ সময় হাটাহাটি করার পর দেখতে পেলাম সূর্যি মামা যেন উঁকিঝুঁকি করছে। সূর্যি মামা উঠলেই ভীষণ গরম লাগবে এবং আমাদেরও সংসারের কাজ শুরু করে দিতে হবে তাই আমরা হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির দিকে চলে এলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আসলে সবাই মিলে হাঁটতে যাওয়ার মজাই আলাদা। বেশ ভালো লেগেছে আপনার অনুভূতি পড়ে।
আপু সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলে শরীরের জন্য ভালো হয়। তবে আমাদের গুরুজনও বলে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তবে অনেকে যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন কর্ম জীবন মানুষগুলো কাজের জন্য মাঠে লেগে যায়। আপনি দেখছি সকালবেলা হাঁটতে গিয়ে ভালোই সময় কাটিয়েছেন। ভালো লাগলো আপনার পোস্টে পড়ে।