বিকাল বেলা নদীর পাড়ে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত

in আমার বাংলা ব্লগlast month (edited)

আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার, ২৪ ই জুন ২০২৫ ইং

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে বিকাল বেলা নদীর পাড়ে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।


FunPic_20250624_211816091.jpg

দিনের শেষে যখন সূর্যটা একটু একটু করে পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ে, তখন প্রকৃতির রঙ বদলাতে শুরু করে। গরম রোদের তাপ একটু কমে আসে, হাওয়ার মধ্যে মিশে যায় এক ধরণের শীতলতা। আর এই বিকেলবেলা যদি নদীর পাড়ে কাটানো যায়, তাহলে সেই অনুভূতির কোন তুলনা হয় না।সেদিনের বিকেলটা ছিল অন্যরকম। শহরের ব্যস্ততা থেকে একটু দূরে, পরিচিত একটা নদীর ধারে গিয়েছিলাম আমি। সঙ্গে ছিল আমার ডায়েরি, মোবাইল ফোন, আর একটা ক্লান্ত মন, যা একটু প্রশান্তি খুঁজছিল। হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম সেই পুরনো ঘাটের কাছে, যেখানে আগে অনেক বিকেল কেটেছে, কিন্তু এখনকার ব্যস্ত জীবনে অনেকদিন আর যাওয়া হয় না।

IMG-20250624-WA0000.jpg

নদীর জল ছিল শান্ত। মাঝে মাঝে দু একটা নৌকা আসছিল, যাচ্ছে। নৌকার মাঝিরা নিজের ছন্দে গান ধরছিল, সেই গান যেন নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে মিশে এক অপূর্ব সুর তুলছিল। পাড়ে বসে চোখ বন্ধ করে সেই গান শোনার মধ্যে এক ধরণের আত্মিক প্রশান্তি আছে, যেটা শহরের কোন শপিং মল বা রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় না।আকাশটা তখন লালচে। মেঘেরা একে অপরকে ধাক্কা দিয়ে চলেছে, যেন শিশুর মতো খেলা করছে। নদীর জলে সেই আকাশের রঙ পড়ে গেছে, পুরো পরিবেশটাই যেন একটা জলরঙের ছবির মতো। সেই ছবি আমি না ছুঁয়ে, না এঁকে শুধু মনের মধ্যে জমিয়ে রাখলাম।

IMG-20250624-WA0002.jpg

পাশেই কয়েকজন শিশু খেলছিল। নদীর ধারে তারা কাদামাটি নিয়ে মূর্তি বানাচ্ছে। তাদের মুখে ছিল নির্ভেজাল আনন্দ। এক বৃদ্ধ দাদু চুপচাপ বসে ছিলেন, চোখে ছিল হাজারো দিনের ক্লান্তি, কিন্তু মুখে যেন এক শান্তির ছায়া। হয়তো তিনিও আমার মতোই কিছু স্মৃতি নিয়ে বসে ছিলেন, হয়তো কোনো প্রিয় মানুষকে মনে করছিলেন।আমি ধীরে ধীরে পা ফেলতে লাগলাম নদীর পাড়ে, জুতা খুলে নরম বালির স্পর্শ নিলাম। পায়ের নিচে সেই বালির ছোঁয়ায় মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি যেন আমাকে আপন করে নিচ্ছে। হাওয়াটা চুলের ফাঁকে ঢুকে মুখ ছুঁয়ে যাচ্ছিল। এমন মুহূর্তে কিছু ভাবার প্রয়োজন পড়ে না মন আপনাতেই নির্ভার হয়ে যায়।

IMG-20250624-WA0005.jpg

বিকেলটা কেটে গেল এক অপূর্ব মায়ায়। সময় থেমে থাকেনি, কিন্তু মনটা যেন আটকে গিয়েছিল সেই বিকেলের রং, নদীর ঢেউ, হাওয়ার গন্ধ আর স্মৃতির শব্দে। বিদায় নেওয়ার সময় মন চাইল না ফিরতে, কিন্তু জানতাম, আবার আসব। এই নদীর পাড়ে আবার বসব একদিন, আবার ছুঁয়ে দেখব সেই শান্তি।এই নদীর পাড় যেন শুধু জল আর বালি নয় এটা একটা অনুভবের জায়গা, যেখানে মন চাইলে নিজের মতো করে হেসে নিতে পারে, আবার কেঁদেও ফেলতে পারে। এখানে কেউ কাউকে বিচার করে না, এখানে অনুভূতির ভাষা বোঝে শুধু বাতাস, ঢেউ আর আকাশের রং। মানুষ যতই যান্ত্রিক হোক না কেন, এমন জায়গায় এলেই মনে হয় আমরা এখনও প্রকৃতির সন্তান, আমাদের ভেতরেও রয়ে গেছে ভালোবাসার, শান্তির ক্ষুদ্র এক টুকরো বাসা।

IMG-20250624-WA0006.jpg

এই বিকেলটা হয়তো আরও হাজার বিকেলের ভিড়ে হারিয়ে যাবে, কিন্তু মন জানে এই অনুভূতি, এই নিঃশব্দ শান্তি, এই সৌন্দর্য কোনোদিন মুছে যাবে না। জীবনের দুঃসময়ে, ব্যস্ততার ক্লান্ত সন্ধ্যায়, চোখ বন্ধ করলেই আবার ফিরে পাব সেই নদীর পাড়, সেই হাওয়া, আর সেই বিকেলবেলার মায়া। প্রকৃতির কোলে কাটানো এই ক্ষণিকের আনন্দই হয়তো জীবনের আসল সঞ্চয়। আসলে মাঝে মাঝে এরকম সুন্দর সময় উপভোগ করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আসলে আমি বিকাল বেলা এই নদীর মধ্যে বেশ দারুন একটি সময় উপভোগ করেছিলাম।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ক্যামেরা পরিচিতি
DeviceiPhone 11
Camera11+11 MP
CountyBangladesh
LocationRangpur, Bangladesh

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAqqCDY5m5Sn.png

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

1728830339945~3.jpg

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।