দীর্ঘ দিন পরে আমাদের ফসলের মাঠে ঘুরতে গিয়েছিলাম।
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
বুধবার, ০৬ ই আগস্ট ২০২৫ ইং
দীর্ঘ দিন পরে তেকানীর মাঠে যাওয়া যেন আমার শৈশবের দরজা খুলে দিল। গতকাল আমাদের এলাকায় প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটানা জল ঝরেছে আকাশ থেকে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরও চারপাশে রয়ে গেছে সেই ভেজা গন্ধ, হালকা কুয়াশার মতো মেঘ, আর সিক্ত মাটির উষ্ণতা। আজ ভোরবেলায় আকাশে রোদ না উঠলেও বাতাসে ছিল এক অদ্ভুত সতেজতা, যা আমাকে টেনে নিয়ে গেল আমাদের ধানক্ষেতের দিকে। বেশ কিছুদিন ধরে কৃষকেরা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিল। অবশেষে আজকে বৃষ্টির দেখা পেয়েছে তাই সকল কৃষকেরা অনেক বেশি খুশি। কিছুদিন আগে কৃষকেরা মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিয়ে জমিতে ধান চাষ করেছে।
মাঠে পৌঁছাতেই চোখের সামনে যেন সবুজের সমুদ্র খুলে গেল। দূর থেকে ধানক্ষেতের পানিতে সূক্ষ্ম ঢেউ খেলছে, হালকা বাতাসে কচি ধানের পাতাগুলো মৃদু দুলছে। বৃষ্টির পানিতে ভিজে পাতাগুলো চকচক করছে, যেন প্রত্যেকটি গাছের গায়ে কেউ মণিমুক্তো ছড়িয়ে দিয়েছে। তেকানীর মাঠের বিশেষত্ব হলো এর মাটি বর্ষায় এই মাটি এত উজ্জ্বল ও গভীর রঙে ভরে ওঠে যে তাকিয়ে থাকলেই মনে হয় প্রকৃতি নিজ হাতে এর সাজ সাজিয়েছে। আসলে আমাদের ফসলের মাঠের সৌন্দর্য অনেক বেশি সুন্দর চারিদিকে সবুজ শ্যামল প্রকৃতিতে ভরপুর।
মাঠের চারপাশে জমে থাকা পানিতে ছোট ছোট মাছ ছুটোছুটি করছে, মাঝে মাঝে এক-দুইটা শাপলা ফুল পানির উপরে মাথা তুলেছে। দূরে ধানের ফাঁক গলে কয়েকটা বক ধীরে ধীরে হেঁটে বেড়াচ্ছে, আর পানিতে ঠোকর মেরে খাবার খুঁজছে। কাদামাটির ভেতর দিয়ে হাঁটার সময় পায়ের নিচে নরম মাটির স্পর্শ এমন এক অনুভূতি দেয় যা শহরের পাকা রাস্তায় কোনোদিন পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝে পানির ভেতর থেকে ব্যাঙ লাফিয়ে উঠে আবার ডুবে যাচ্ছে, সেই শব্দ যেন প্রকৃতির অংশ হয়ে গেছে।
এই মাঠ শুধু ফসল উৎপাদনের জায়গা নয়, আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা এক টুকরো ইতিহাস। ছোটবেলায় বর্ষা এলে আমরা এই মাঠে এসে খেলতাম, কখনো মাছ ধরতাম, কখনো কাদায় গড়াগড়ি খেতাম। আজ দাঁড়িয়ে সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল, যেন সময় পেছনে ফিরে গেছে। চারপাশের নীরবতা, বাতাসের হালকা শোঁ শোঁ শব্দ, আর ধানের পাতার মৃদু ঘর্ষণ সব মিলিয়ে তেকানীর মাঠ আজও আমাকে শিখিয়ে দিল, প্রকৃতির সাথে একাত্মতা মানুষকে শান্তি দেয়, প্রশান্তি দেয়, আর মনে করিয়ে দেয় আমরা কতটা এই মাটি আর জলাধারের সন্তান।
তেকানীর মাঠে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকাতেই মনে হলো, প্রকৃতি যেন নিজের হাতে কোনো শিল্পীর মতো এই দৃশ্য সাজিয়েছে। দূরের দিগন্তে বৃষ্টির মেঘ এখনো জমে আছে, কিন্তু তার মাঝখান দিয়ে সূর্যের একফালি আলো ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে। সেই আলো সরাসরি এসে পড়ছে মাঠের জমে থাকা পানির উপর, আর তাতে তৈরি হচ্ছে হাজারো সোনালি ঝিলিক। বাতাসের হালকা দোলা সেই ঝিলিকগুলোকে নাচিয়ে তুলছে, যেন পানির উপর ছোট ছোট তারা খেলা করছে।ধানক্ষেতের সবুজ আর পানির সোনালি আভা একসাথে মিলেমিশে এমন এক রঙের সমারোহ তৈরি করেছে যা কোনো তুলিতে আঁকা সম্ভব নয়।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily task
https://x.com/Riyadx2P/status/1953114902194754037?t=rqM8uIoCau7fPGha3XDcTA&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1953118998314545284?t=ZKcyRzy3D_FMyqjWA1UdqQ&s=19
কিছুদিন ধরে সব জায়গাতে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে কৃষকেরা তাদের ফসল চাষ করতে সুবিধা হচ্ছে। তবে ভাইয়া এই সময়ে ফসলের মাঠে গেলে ছোট ছোট ধান এবং বাতাসের মধ্যে দোলা খায় দেখতে কিন্তু ভালই লাগে। আর আপনি দেখছি তেকানীর মাঠে ফসলের মাঠ দেখতে গেলেন। সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।